সিক্রেট সোসাইটি এবং পর্দার আড়ালের বিশ্বব্যবস্থা পর্ব ১

 

যখন চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রে বিশ্বাসের প্রশ্ন আছে, তখন এই ষড়যন্ত্রকারীর তালিকায় আ-মেরিকা'নরা কোন অংশে দ্বিতীয় হওয়ার মতো না। এই বিশ্বাস করে তাদের মতে ষড়যন্ত্রকারী'রাই আ-মেরিকা'কে ২য় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছিল যার অজুহাত ছিলো জন. এফ কেনেডির বিশ্বাসঘাতকতামূলক 

গুপ্ত হত্যা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে এইচ.আই.ভি ছড়ানো এবং ষড়যন্ত্র ধাপের সর্বোচ্চে অবস্থান করে আছে সেই সিক্রেট সোসাইটি এবং ধারণা করা হয় তারাই পুরো বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়টা নিশ্চিত যে কিছু মানুষ যে কোন প্রেসিডেন্ট, রাজা কিংবা একনায়কের চাইতেও অধিক ক্ষমতা রাখেন। কারা এই সূক্ষ ষড়যন্ত্রকারী এবং কেনইবা তাদের সর্বক্ষমতাধর ধারণা করা হয়?


সুইজ্যারল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনী পাহারা দেয় বিশ্বের ক্ষমতাবান এলিট-দের, যারা বিশ্বের অর্থনীতি পরিচালনা করে—- ধারনা অনুযায়ী এগুলো কিছু মার্কিন সিক্রেট সোসাইটির কার্যকলাপ। যেমন- Bilderberg, Skull and Bones এবং trilateral commission। 


অনেক পরিচিত এবং বিখ্যাত কিছু মুখ এই সিক্রেট সোসাইটির সাথে যুক্ত, হেনরি ক্যাসিঞ্জার , ডেভিড রকে ফেলার, বিল ক্লিন্টন সহ আরো অনেকে। 


তবে সোজাসুজিভাবে ধরে নেওয়া যায় একশ জন উচ্চপদস্থ এবং অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ আছেন যারা এই সিক্রেট সোসাইটির প্রাণশক্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিকটতম ইতিহাস থেকে কিছু সি-ক্রেট সোসাইটির অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়া যায়। যেমন- ফ্রিম্যাশন, ইলুমিনাতি,ArtFellas। তাদের অফিসিয়াল সিম্বলগুলো অসংখ্য চটুলতা এবং প্রমাণ বহণ করে। বর্তমানে অল্পসংখ্যক কিন্তু ক্রমবর্ধমান ষড়'যন্ত্র তাত্ত্বিকদের (conspiracy theorist) মতে এই রহস্যপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোই অশুভ চক্রের মূল হোতা।

 এটা সত্য যে প্রতিটি দৃশ্যের পিছনে এবং প্রতিটি স্পষ্টতই সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর পেছনে একটি গোপন হাত কাজ করছে। এবং তারা অগ্রসর হচ্ছে অদৃশ্য একটি এজেন্ডা নিয়ে কিছু বিষয় সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। যেমন- বিশ্ব শাসনব্যবস্থা, বিশ্বব্যাংক, কারেন্সি, বিশ্ব অর্থনীতি এবং ক্ষুদ্র জনগষ্ঠী। এসব সিদ্ধান্ত কখনো প্রকাশ্যে হয় না কারণ আমরা যদি প্রকৃত এজেন্ডা বা আলোচ্যসূচি জেনে যাই, তা কখনেই হয়তো মেনে নেওয়া সম্ভব হবে না।


যদি আমরা ইতিহাস দেখি তাহলে আমরা দেখবো ষড়যন্ত্রের একটা লম্বা লিস্ট যা কখনো ষড়যন্ত্র চলাকালে ধরা পড়ে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায় ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের প্রায় কয়েক দশক পরে এই ষড়যন্ত্রের অংশবিশেষ বিশ্ববাসী জানতে পারে। এমনকি গ্রীক মিথলজির সেই ডেল্ফী মন্দিরে কোন গডের অস্থিত্ব বাস্তবে ছিলো না, এটাও ছিলো একটা ষড়যন্ত্রের অংশ বলে প্রতিয়মান হয়। 

মুসলীম বিশ্বও এই ষড়যন্ত্রের উর্ধে নয়।


নীল আর্মস্ট্রং এর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ এবং কয়েক দশক পর যা ভুয়া প্রমাণিত হয়- এই বিতর্কের মধ্যেও ছিলো সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র যা এখন অনেকটাই স্পষ্ট।


নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে বসে কিছু শব্দ শুনেছিলেন, যেগুলোকে তিনি তখন বুঝতে পারেন নি কিন্তু পৃথিবীতে ফিরে তিনি সেই শব্দগুলোর সাথে আযানের শব্দের সাথে মিল পান।(সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার)

 সুতরাং চাদ থেকে ফিরে এসে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। অথবা নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে গিয়ে দেখতে পান চাঁদের বুকে একটি বড় রেখা যা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ইশারায় চাঁদের দিখন্ডিত হয়ে যাওয়ার প্রমাণ বহন করে। 


নীল আর্মস্ট্রং কি সত্যিই ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেছিলেন? 

উওরঃ না।  এখানে দেখুন


বছর খানেক আগে তিনি নিজেই মিডিয়ার সামনে বিষয়টি স্পষ্ট করেন। নীল আর্মস্ট্রংকে নিয়ে যখন এ বিতর্ক তুঙ্গে তখন তিনি নিজে একেবারেই লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতেন। কিন্তু কেন? আমরা যদি উনিশ শতকের মাঝামাঝির বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করি তাহলে সহজেই বিষয়টা অনুমান করা যায় যে নীল আর্মস্ট্রং নাটকে কোন আমেরিকান সিক্রেট সোসাইটির ইন্ধন রয়েছে।


বিশ্বে তখন সমাজতন্ত্রের জয় জয়কার চলছিল এবং ভেঙে পড়ছিলো পুঁজিবাদ তথা ধনতন্ত্র রক্ষার সর্বৎকৃষ্ট হাতিয়ার ধর্ম। এখন পুঁজিবাদ বা ধণী-শ্রেণী রক্ষার স্বার্থে অবশ্যই ধর্মগুলোকে আগে রক্ষা করতে হবে। করণ এই ধর্মীয় সিম্পেথিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের একটি বিরাট জনগোষ্ঠিকে বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যাস্ত রাখা সম্ভব হবে এবং এর অন্তরালে একের পর এক নীলনকশা বাস্তবায়ন করে যাবে টিকে থাকবে ধণী-শ্রেণী।

যেমন-

ইরাকের তেলাআবিব, 

ফি-লিস্তিনের আল- আকসা,

 ভারতের কাশ্মীরে, 

আফগানিস্থানের তালেবান, 

পাকিস্তানের শিয়া-সুন্নি বিরোধ…

এসব দিয়ে হুজুগে, ধর্মান্ধ এবং তুলনামূলকভাবে অশিক্ষিত অর্ধ-শিক্ষিত দেশগুলোকে সদাব্যস্ত রাখা হয়। এবং এরই অন্তরালে একের পর এক আত্নঘাতি চুক্তি-স্বাক্ষর এবং নীলনকশা বাস্তবায়ন করা হয় যা থেকে যায় লোকচক্ষুর অন্তরালে।


ঊনিশ শতকের শুরু থেকে বিজ্ঞানের নব নব আবিস্কার এবং এর সাথে সমাজতন্ত্রের অপ্রতিরোদ্ধ উল্থান মানুষের মন থেকে ধর্মের মূলোতপাটনকে যখন তরান্বিত করছিল তখন নীল আর্মস্ট্রং-এর্ ইসলাম গ্রহণ প্রমান করেছে যে ধর্ম সত্য, আল্লাহ আছে। আর্মস্ট্রং-এর মত একজন বিজ্ঞ বিজ্ঞানী কর্তৃক আল্লাহর এই অস্তিত্ব প্রমাণ মানুষের মনকে ধর্ম নিয়ে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। বিশেষ করে অশিক্ষিত- অর্ধশিক্ষিত দেশগুলোয় এর প্রভাব ছিল অত্যন্ত বেশী। এর দ্বারা আমেরিকা ইসলামী দেশগুলোতে সমাজতন্ত্রের প্রসার রোধ করতে সক্ষম হয়েছে। অনেক ইসলামী দেশই তখন সমাজতন্ত্রের দিকে ঝুকে যাচ্ছিল। যেহেতু পৃথিবীর প্রায় সকল মানুষই অলৌকিকতার দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং ইসলামে এর প্রভাব খুব বেশী, তাই আমেরিকা তথা ধনতন্ত্রের আর্মস্ট্রংকে ব্যবহার অযৌক্তিক নয়। এটুকু বলা যায় আর্মস্ট্রং বিতর্কে তখন শুধু ইসলাম নয়, অন্য ধর্মের অনুসারীরাও প্রভাবিত হয়েছিল। সমাজতন্ত্রকে ঠেকানোর জন্য এর চেয়ে মোক্ষম হাতিয়ার তখনকার আমেরিকার হাতে দ্বিতীয়টি আর ছিল না।


এখন বিশ্বে সমাজতন্ত্র অনেকটা কোনঠাসা অবস্থায় আছে। বিশ্ব এখন পুঁজিবাদের নিরাপদ এবং নির্লজ্জ বালাৎকার ভূমি। তাই এতবছর পর এখন নীল আর্মস্ট্রং মিডিয়ায় তাকে নিয়ে বিতর্কের বিষয়টি বানোয়াটে বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন এমনকি প্রথম চাঁদে যাওয়ার বিষয়টিও বিতর্কের মুখে পড়েছে। সিক্রেট সোসাইটি আর ষড়যন্ত্রকারী যাই বলি, একটা বিষয় পরিষ্কার তা হলে এদের উদ্দেশ্য একটাই- পুঁজিবাদ/ ধনতন্ত্রের ভীত মজবুত করা এবং এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা।


“দূর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার, 

লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশিথে যাত্রিরা হুশিয়ার।”


 উপরের লিখিত অংশ হতে আমরা জেনেছি, আমেরিকান সিক্রেট সোসাইটিগুলো ইতিহাস এবং তাদের সত্যিকার উদ্দেশ্য বা গন্তব্য অনুসন্ধান করা অন্যরকম এক চেলেঞ্জের কাজ। এক কথায় সিক্রেট অর্থাৎ গোপনীয়তা এখানে অনেক বড় একটা বিষয়। এবং এর কার্যকলাপ এবং ব্যবহৃত চিহ্ন বা সিম্বলগুলো সহজে অনুমেয় নয়। বর্তমান বিশ্বে সিক্রেট সোসাইটিগুলোর উপর হাজারো বই, মিডিয়া রিপোর্ট এবং ইন্টারনেট সাইট আছে যারা অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে সিক্রেট সোসাইটিগুলোর প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য।


এটা এমন একটা ভিন্নধর্মী গবেষণার কাজ যেখানে ক্ষেত্রবিশেষে অনুমান নির্ভর কিছু বিষয়ে বিশ্বাস করতে হয় যুক্তিতর্ক পরিহার করে। যদিও আমেরিকায় কত শত সিক্রেট সোসাইটি একটিভ আছে তবে এগুলোর মধ্যে অল্পসংখ্যক কয়েকটি সংগঠন আছে যাদের নাম বিগত কয়েক শতকজুড়ে বার বার আলোচনায় উঠে আসে। এগুলো হলো- Freemasons , Skull & Bones , Council on foreign relations , Trilateral Commission এবং সবচেয়ে গোপনীয় Bilderberg । কন্সপিরেসী থিউরীষ্ট “ডেভিড আইক” এর মতে এইসব গ্রুপগুলো একটি নির্দিষ্ট এলিট গ্রুপ দ্বারা নিয়ন্ত্রীত হয়। সংগঠনগুলোর নিয়ন্ত্রন কাঠামো বা স্ট্রাকচার নিয়ন্ত্রীত হয় অল্পসংখ্যক কিছু মানুষ দ্বারা।


এটা অনেকটা ওয়েব বা জালের মত যেখানে সংগঠনগুলো তাদের নির্ধারিত স্থানে অবস্থান করে। 

ইলুমিনাতি একটি সংগঠন যারা ঐতিহাসিক,আধুনিক এবং বাস্তব এবং কাল্পনিক উভয়ই। বর্তমানে আমরা চোখের সামনে যে বিশ্ব দেখছি, এর জন্য এই Illuminati বিগত শত শত বছর ধরে কাজ করে গেছে এবং পরবর্তীতে পরিকল্পনা অনুযায়ী কি ঘটবে সেটাও তাদের বর্তমান বা নিকট অতীত সিদ্ধান্ত বা কাজের উপর নির্ভর করছে। বর্তমান বিশ্বে খুবই বিখ্যাত এবং অতি পরিচিত কিছু মুখ এই সিক্রেট সোসাইটিগুলোর সাথে জড়িত। লক্ষকরার বিষয় যে তাদের কর্মকান্ড বা ব্যবহৃত চিহ্ন বা সিম্বলগুলো মিশরীয় বা বেবিলন তথা প্রাচীন সময়কার ব্যবহৃত চিহ্ন বা সিম্বলগুলোর অনুরুপ। 


এটি একটি শক্ত হাতের অবাদ কারসাজি যা সেই সুদূর প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত চলে আসছে। এটা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় যে কখন এই সিক্রেট সোসাইটি প্রথম সংগঠিত হয়। তবে সুমেরীয় সভ্যতার কীলকাকার ফলক (Sumerian cuneiform tablet) থেকে এটি অনুমান করা হয় যে খ্রিস্টপূর্ব পঁচিশ শত বছরে সিক্রেট সোসাইটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়। কিন্তু আমরা জানি মিশরের ফেরাউন হ্যাটসেপসাট ( Hatshepsut ) পনেরশ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তৈরি এবং এই গ্রুপটাই আধুনিক সিক্রেট সোসাইটির সংজ্ঞা অনুসরণ করে। অর্থাৎ মিশরীয় সভ্যতার এলিটদের কার্যকলাপের সাথে বর্তমান সিক্রেট সোসাইটিগুলোর মিল পাওয়া যায়।


তৎকালীন এলিটরা গোপনে কার্যসম্পাদন করতো এবং গোপন জ্ঞান রাখতো (শয়তানের কাছ থেকে) 

 যা দিয়ে তারা সভ্যতাকে প্রভাবিত করতো। তারাই অন্যন্য সব নিদর্শন তৈরি করেছিলো যার অন্যতম হলো- মিসরের পিরামিড। যার স্থাপত্যশৈলী এবং খুটিনাটি বিষয় একবিংশ শতাব্দির বিজ্ঞানীদেরও অবাক করে। এছাড়াও পিরামিডের ভেতরের অনেক স্থানই মানুষ আজ পর্যন্ত আকিষ্কার করতে সক্ষম হয়নি। এই আশ্চর্য নিদর্শনগুলো নির্মানে তারা এমন সব গোপন জ্ঞান ব্যবহার করেছিলো যা কখনই প্রাচীন কালের মানুষদের আয়ত্বে থাকার কথা নয়। (শয়তান থেকে জ্ঞান নিয়ে এবং শয়তানের সহযোগিতায় করতো)


তৎকালীল এলিটরা এই তথ্য বা জ্ঞানগুলো গোপন রাখার রহস্য এই যে, এই জ্ঞান মানুষের ক্ষমতা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং এই অভিপ্রায় কখনই এলিটদের ছিলো না। খ্রিস্টাব্দ প্রথম সহস্রাব্দের শেষের দিকে ফরাসি সমর্থকরা ৯ সদস্যের ছোট একটি গ্রুপ সংগঠিত হয় Knights Templar নামে। তাদের অফিসিয়াল ব্যাখ্যা ছিলো তীর্ধযাত্রীদের তাদের পুণ্যভূমি ভ্রমনে বাঁধা প্রদানের জন্যই গ্রুপটি সংগঠিত হয়েছে। তারা ফিলিস্তিনের জেরুসালেম পৌঁছায় এবং সেখানে নয় বছর অবস্থান করে। তারা সেখানে কিছু একটা অনুসন্ধান করছিল এবং মনে হচ্ছে তারা সেটি পেয়ে গেছে।


এবং খুব দ্রুতই অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। নয় সদস্যের ছোট গ্রুপটি ক্রমান্নয়ে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে। Knights Templar কি পেয়েছিলো তা রহস্যই থেকে যায়। ধরনা করা হয় এটি ছিলো Holy Grail (ডিশ, প্লেট, বা কাপ) যা খ্রীষ্ট তার সর্বশেষ নৈশভোজে ব্যবহার করেছিলেন এবং ক্রশবিদ্ধ খ্রীষ্টের ঝরে পড়া রক্ত এতে ধরে রাখা হয়েছিল। ধারণা করা হয় Holy Grail ছিলো অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী।


যা আয়ত্ব করে Knights Templar রাতারাতি ইউরোপের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠনে পরিনত হয়। এই সংগঠনে যোগদান করতে হলে সব সম্পদ তাদের হাতে তুলে দিতে হতো এবং তাদের মূল টার্গেট ছিলো ইউরোপের উচ্চবংশজাত পরিবারগুলো। Knights Templar পবিত্র এবং একই সময় তারা সংগ্রাম বা যুদ্ধবিগ্রহে জড়িয়ে পড়েছিলো। এজন্য তাদের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হতো। প্রায় দুশত বছর ধরে Knights Templar শত সহস্র বিত্তশালী ইউরোপীয় এলিটদের নিজের করে নেয়।


সংগঠনটির প্রকৃত সদস্য সংখ্যা কত ছিলো তা নির্দিষ্ট করে জানা যায় না। তবে Knights Templar গোটা ইউরোপ রাজত্ব বা নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছিলো সর্ববৃহৎ বেসরকারী ব্যাংকিং সিস্টেম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। ১৩০৭ খ্রিস্টাব্দে এসে Knights Templar কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ফ্রান্সের রাজা পোপ পঞ্চম (pope clement the fifth ) কে রাজি করতে সামর্থ হয় যে Templar তাদের রক্ষাকর্তা নয় বরং তারা তাদের ধ্বংশ করে দিচ্ছে। এটা ছিল তৎকালীন ফ্রান্সের রাজার ইচ্ছে এবং তিনি নিজেই এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদ তৈরি করেন।


Knights Templar এর সর্বমোট ২৩ জন গ্র্যান্ড মাস্টার দায়িত্ব পালন করতে পেরেছিলেন। এবং সর্বশেষ গ্র্যান্ড মাস্টার Jacquesde Molay কে ১৩১৪ সালে প্যারিসে অগ্নিদগ্ধ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বেঁচে যাওয়া Templar রা ফ্রান্স ছেড়ে স্কটলেন্ড-এ পালিয়ে যায়। সেখানে তারা পুনরায় সংগঠিত হয়ে নতুন নামে আত্নপ্রকাশ করে- Scottish Rite ফ্রিম্যাশনারী ।

 এটা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিক্রেট সোসাইটি। 

এভাবেই সিক্রেট সোসাইটি আমেরিকায় প্রবেশ করলো যার প্রভাব ছিলো সাঙ্ঘাতিক। Templar গন তাদের গোপন জ্ঞান নিয়ে আমেরিকায় আত্নপ্রকাশ ঘটায় নতুন সংগঠনের ফ্রিম্যাশনারী যদিও আধুনিক ফ্রিম্যাশনারী দাবি করে তাদের সাথে Knights Templar এর কোন সম্পর্ক নেই। ভয়-ভীতি, জল্পনা-কল্পনা, ফটকাবাজিতা,ষড়যন্ত্র ইত্যাদি দিক থেকে ফ্রিম্যাশনারী অদ্বিতীয়। ফ্রিম্যাশনারীই হলো সকল গোপন তথ্য বা জ্ঞানের সংযোগক্ষেত্র যেই গোপন জ্ঞান তারা প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে বর্তমান সিক্রেট সোসাইটির মধ্যে ধারণ করে আছে।


ফ্রিম্যাশনারী দের নিয়ে গবেষনা সাইটগুলোর মধ্যে

 www.GlobalFreemasonry. com অন্যতম। 

এই সাইটে ফ্রিম্যাশনারীদের নিয়ে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য পাওয়া যাবে। ২৪ শে জুন ১৭১৭ সালে সংগঠনটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ সভা অনুষ্ঠিত হয় লন্ডনে। উক্ত সভায় ফ্রিম্যাশনারীকে একটি একটি ভিন্নধর্মী সংগঠন হিসেবে দেখা যায়, যারা অবাদ তথ্য প্রবাহ নিয়ে আলোচনারত ছিলো। তৎকালীন সময়ে তারা এরূপ বহু আলোচনা সভার আয়োজন করতো যেখানে মানুষজন উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে খোলামেলা আলোচনা করতে পারে।


১৭৩০ সালে ফ্রিম্যাশনারী আমেরিকায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে এবং খুব দ্রুতই সেখানকার সম্ভ্রান্ত এলিট পরিবারগুলোকে সদস্য বানিয়ে নেয়। আমেরিকার স্বাধীনতার পক্ষে স্বাক্ষর করা ৫৬ জন এলিটের মধ্যে ৫০ জনই ছিল ফ্রিম্যাশনারীর সদস্য। জর্জ ওয়াশিংটন প্রথম অভিষেক ছিলো একটা ফ্রিম্যাশনারী অনুষ্ঠান। এভাবেই আমেরিকান সিক্রেট সোসাইটি নতুন দেশ গঠনে তাদের গোপন জ্ঞান কাজে লাগায়। বাভেরিয়ান ফ্রিম্যাশন Adam Weishaupt ,Order of Illuminati নামে আরেকটি সিক্রেট সোসাইটির গঠন করেন।


কয়েক বছরের মধ্যেই ইলুমিনাতি গোটা ইউরোপ জুড়ে দুহাজারের বেশি এলিট সদস্য গ্রহণ করে। রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্যই সংগঠনটি গঠিত হলেও ইউরোপের শাসকদের কাছে এটা একটা ক্ষতিকর সংগঠন হিসেবে প্রতিয়মান হয়। এবং ইলুমিনাতি প্রতিষ্ঠার আট বছর পরই ১৭৮৪ সালে এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। কার্যক্রম বন্ধ বললে ভুল হবে, এক কথায় এটি পর্দার আড়ালে চলে যায়। ইলুমিনাতি শুধু জড়িত ছিলো না বরং তারা ছিলো চালকের আসনে, যার কল্যানে আমরা আজ যুক্তরাষ্ট্র দেখতে পাচ্ছি।


ইলুমিনাতি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যাবে এই সাইটে www.illuminati-news.com 

এটি একটি গবেষনাধর্মী সাইট যেখানে ইলুমিনাতিকে একটি ছায়া সরকার হিসেবে দেখানো হয়েছে। ইলুমিনাতি প্রতিক বা সিম্বল পিরামিডের উপরভাগে খোলা চোখ (all seeing capstone) আমেরকিন সরকারের প্রতিক হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। বিংশ শতাব্দির ইলুমিনাতির অগ্রভাগের অন্যতম একজন ফ্রান্কলিন ডি. রুসভেন্ট (Franklin Delano Roosevelt ) ডলারের উপর একই সিম্বলের প্রচলন করে। এই সিম্বলের উপর Annuit Coeptis এবং নিচে Novus Ordo Seclorum শব্দগুলো লিখা। অর্থাৎ নতুন ধর্মনিরপেক্ষতা/সেকুলারিজমের আগমনকে স্বাগত জানানো (Welcoming the Arrivals of the New Secular Order)।


ইলুমিনাতি অন্যতম আরেকটি সিম্বল হলো জ্বলন্ত অগ্নিশিখা বা মশাল (Torch Light of the Flame)। বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত মশাল হলে নিউ ইয়র্কের স্টেচু অব লিভার্টি (Statue of Liberty), মার্কিনিরা একে স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে বিশ্বাস করে। এই ভাস্কর্য নিউ ইয়র্কে উপহার পাঠিয়েছিলো ফ্রান্সের ফ্রিম্যাশনারীরা প্যারিস থেকে। কন্সপিরেসী থিওরীষ্টদের মতে এই জ্বলন্ত মশাল প্রকৃতপক্ষে আমেরিকান জনগনের স্বাধীনতা প্রকাশ করে না বরং এটি এমন একটি বার্তা বহন করে যে দেখ আমরাই দৃষ্টপট পরিচালনা করছি,আমরাই সব নিয়ন্ত্রণ করছি, কিন্তু তোমরা কেউ দেখতো পাওনা। Statue of Liberty এবং ফ্রিম্যাশনারী কন্সপিরেসী নিয়ে এই সাইগুলোতে বিস্তারিত জানা যাবে।


http://www.biblebelievers.org.au/mason7.htm 


শুরুতেই বলেছিলাম সিক্রেট সোসাইটিগুলো অতি প্রাচীনকাল থেকেই সংগঠিত। প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার এলিটদের কার্যকলাপের সাথে বর্তমান সিক্রেট সোসাইটিগুলোর মিল পাওয়া যায় উভয়ের ব্যবহৃত প্রতীকগুলোর মাধ্যমে। অর্থাৎ প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের সেই মিশরীয় সভ্যতায় তৎকালীন এলিটগণ যেই সব চিহ্ন বা প্রতীক বা সিম্বল ব্যবহার করতো তা নিকট অতীত বা বর্তমান সিক্রেট সোসাইটিগুলোর ব্যবহৃত চিহ্ন-প্রতীক-সিম্বলের প্রতিচ্ছবি। অর্থাৎ এটি শতাব্দীর পর শতাব্দী একটি নিরবিচ্ছিন্ন অটুট সংযোগ রক্ষা করে বর্তমানে অনুমেয় সর্বক্ষতার গোপন কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। যদিও অফিসিয়াললি ফ্রিম্যাশনারীদের দাবি করে তাদের সাথে ইলুমিনাতি অথবা অন্য কোন সিক্রেট সোসাইটির কোনরুপ যোগসাজস নেই।


কিছু কিছু দেশে ফ্রিম্যাশনারী গোপন কোন সংগঠন নয়। সেখানে তাদের অবস্থা অনেকটা গোপন জ্ঞান নিয়ে খোলামেলা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মত।

পর্ব ২ পড়ুন

লিখেছেন-  নাসিম আহমাদ


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন