পর্ব ৪ঃ ধর্ম ও কারেন্সিওয়ার

 


মহাজ্ঞানী বলেছেন, মানুষ ৪ রকমের।

১। যে জানে, কিন্তু সে জানেনা যে সে জানে। সে ঘুমন্ত অতএব তাঁকে জাগাও।

২। যে জানে না, কিন্তু সে জানেনা যে সে আসলে জানেনা। সে বোকা।

৩। যে জানেনা, কিন্তু সে জানে যে সে জানেনা। সে শিশু। অতএব তাঁকে শেখাও।

৪। যে জানে যে, সে জানে। সে হলো বাদশাহ। অতএব তাঁকে অনুসরন কর।


মহাজ্ঞানী আরো বলেন, “বেশীরভাগ সত্য সেখানে লুকানো আছে যা তুমি জানো না। যে বিষয়ে তোমার ধারনা বা জ্ঞান নেই সেটাকে অস্বীকার করাটা হলো পৃথিবীর সবথেকে বড় মুর্খতার পরিচয়।“


আপনারা কি জানেন মহাবিশ্ব কতবড়? ১৩ লক্ষ টি পৃথিবী অনায়াসে এঁটে যাবে আমাদের সূ্র্যের পেটের ভিতর। সাইজটি একটু কল্পনায় আঁকুন।

আপনারা কি পৃথিবীর সব বালুকনা গুনতে পারবেন? অসম্ভব তাই না? তাহলে শুনে রাখুন মহাবিশ্বে যত স্টার বা সূর্য আছে তার সংখ্যা পৃথিবীর সমস্ত বালুকনার থেকেও বেশী ! তাদের একেকটার সাইজ আমাদের প্রানপ্রিয় সুর্যের থেকেও বহু বহু গুন বড়। 

আমাদের সৌরজগতের সবথেকে কাছের স্টার হলো Proxima centurai যা ৪.৫ আলোকবর্ষ দুরে অবস্থিত। আলোর গতিতে মানে ১ সেকেন্ডে এক লাখ ছিয়াশি হাজার মাইল বা ৩ লাখ কিলোমিটার বেগে। এক বছরে যে পরিমান দূরত্ব অতিক্রম করা যায় সেটাকে ১ আলোকবর্ষ বলা হয়। তো আলোর গতিতেও যদি আপনি রওনা হন তাহলে সবথেকে কাছের স্টারে পৌছুতে আপনার সময় লাগবে সাড়ে চার বছর।


আর এরকম স্টার আছে আমাদের মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সীতে ১০ হাজার কোটি থেকে ৪০ হাজার কোটি। একটির থেকে আরেকটির দুরত্ব কমবেশী এরকম। আর আমাদের মিল্কীওয়ে গ্যালাক্সীর আয়তন মানে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের দুরত্ব ৫২,৮০০ আলোকবর্ষ। আর মহাবিশ্বে এরকম বা এর থেকেও কয়েকশ গুন বড় গ্যালাক্সীই আছে কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি।


আবার একটি সাধারন বালুকনার ভিতর পরমাণু আছে সমগ্র মহাবিশ্বের সমস্ত স্টারের থেকেও বেশী। আর এসব কিছু মহাবিশ্বের মোট ভরের মাত্র ১% বাকি সবকিছুই dark matter বা অদৃ্শ্য।

এবার আপনার নিজের অবস্থান একটু কল্পনা করুন চোখ বন্ধ করে। এই মহাবিশাল মহাবিশ্বের ভিতর আপনি কি কিছু?

এই সুবিশাল মহাযজ্ঞ একটি মাত্র অপারেটিং সিস্টেমে চলছে নিখুত ভাবে সৃষ্টির শুরু থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে। ১ম পর্ব ও ২য় পর্বে এর কিছু ধারনা আপনারা পেয়েছেন যে এর একটি ডিজাইন আছে এবং প্রতিটি ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ বস্তু তাঁর নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী চলছে। কারো একচুল এদিক ওদিক থাকার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। এই একক সিস্টেমকে আমরা সুন্নাতআল্লাহ বলি বিজ্ঞানীরা বলেন কসমিক সিস্টেম।

পানিকে তাপ দিলে সে বাস্প হয়ে যায়। ঠান্ডা করলে সে বরফের আকার ধারন করে। আবার স্বাভাবিক তাপে সে তরল আকার ধারন করে। পানির এই তিন অবস্থাকে পানির ধর্ম বলা হয়। যদি তাপ দিলে পানি বাস্প না হয় তবে সে পানি নয়। কারন পানির ধর্ম তাপ দিলে সে বাস্প হয়ে উড়ে যাবে। সেরকম অন্য বাদবাকি সবার মত মানুষেরও নিজের ধর্ম আছে।


 সে যদি মানুষের মত আচরণ না করে পানির মতই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তাহলে তাঁকে আর যাই হোক মানুষ বলা যাবে না যদিও সে মানুষের চেহারা নিয়ে জন্মায়।

 তাঁকে মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে উঠতে হবে এবং প্রতিটা ক্ষনে তাঁকে মানুষের মত চিন্তা, চেতনায়, আচরন করে সেটা প্রমান করাটাই হলো তাঁর প্রাথমিক ধর্ম। আর এটাই হলো মানুষের জীবনের একমাত্র চ্যালেঞ্জ। আর পুরো জীবনটাই হলো পরিক্ষা। আর এই পৃথিবী হলো পরিক্ষার হল। সবাই এখানে পরীক্ষা দিচ্ছে কিন্তু সবার প্রশ্নই আবার আলাদা। 


তাই কারো সাথে কারো জীবনের মিল নেই প্রতিযোগীতাও নেই তাই প্রতিদ্বন্দীতাও নেই। সবাই সবার মত আলাদা আবার সবাই এক। কারন সবার রূহ বা পরমাত্মা এক। তাই উপরে পার্থক্য থাকলেও সবার মুল এক। কেউ আলাদা নয়। আমিও যা আপনিও তাই।

আপনিই হলেন আমি আর আমিই হলাম আপনি। আপনাকে আঘাত করা মানে আমাকেই আঘাত করা। পানি যেমন তাপ দিলে বাস্প হয়ে যায় আবার ঠান্ডা করলে বরফ হয়ে যায় কিন্তু নাম আর চেহারা আলাদা হলেও সেটা আসলে সেই হাইড্রোজেন আর অক্সিজেনই। আবার সেই হাইড্রোজেন আর অক্সিজেনের পরমাণু ভাঙলে সেই এনার্জি। সমুদয় বস্তুজগৎ এনার্জির ভিন্ন ভিন্ন রূপ ছাড়া কিছুনা।

এখন আপনি যদি এনার্জির টার্মে নিজেকে দেখতে পারেন তাহলোে আপনি সমুদয় বিশ্বজগৎকে দেখতে পারবেন এক ও অভিন্ন সত্তায়। আপনার সামনে যে বসে আছে সে কুকুর হোক বিড়াল হোক আর মানুষ হোক তার সমস্ত গল্প আপনার এক নিমিষে জানা হয়ে যাবে।


মানুষ ভাবে সে একটা প্রাণী এবং তাঁর একটা জীবন আছে। কিন্তু আসল সত্যটা হলো সে নিজেই জীবন এবং তার একটা টেম্পোরারী দেহ আছে। এই দুই উপলব্ধির ভিতর আকাশ আর পাতালের তফাত আছে। মৃত্যু বলে আমরা যা ভাবি আসলে সেরকম নয় বিষয়টা। 

মৃত্যুতে কোন কিছু শেষ নয় কারন এনার্জির কোন জন্ম নেই ধ্বংসও নেই। মৃত্যু হলো ট্রান্সফরমেশন। মৃত্যুর সময় মানুষ বুঝতে পারে যে সে আসলে দেহের ভিতর ছিল না বরং দেহ তাঁর ভিতরে ছিল। দীর্ঘ দিনের কঠোর মোরাকাবা বা মেডিটেশন সাধনা করলে আপনিও সেটা আপনার জীবদ্দশায় উপলব্ধি শুধু নয় বরং দেখতে পারবেন না। এই কারনেই নিকোলা টেসলা বলেছিলেন, চিন্তা কর Energy, frequency, vibration টার্মে। নিকোলা টেসলার আগে কি কেউ একথা বলেনি?


শুধু যে বলেছে তাইনা তারা কঠোর সাধনার দ্বারা এমন অনেক কিছু করেছেন এবং করছেন যাকে আমরা মুজিযা বা কারামত বলে থাকি। আমরা এমনই নিম্নস্তরে বসবাস করি যে সেগুলোকে আমরা অলৌকিক বা যাদু বলে থাকি।

ইসা (আঃ) কে তাঁর সঙ্গীরা একবার জিজ্ঞাসা করেছিল আপনি কিভাবে পানির উপর দিয়ে হাঁটেন আর কিভাবেই বা পাথরকে সোনায় রূপান্তর করেন?

তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “তোমার কাছে কি সোনা আর পাথর সমান?” সে বলেছিল, না।

ই(সাঃ) (আঃ) মুচকি হেসে বলেছিলেন, আমার কাছে দুটোই সমান তাই আমি পারি।


কোয়ান্টাম সাইন্সের আর এক দিকপাল শ্রোডিনগার বলেছিলেন, সমস্ত মহাবিশ্ব একটি বিশাল ব্রেইন। “আর টেসলা বলেন, “আমাদের ব্রেইন আসলে একেকটা রিসিভার। আমরা মুল সিস্টেমের কাছ থেকে ইনফরমেশন পেয়ে চলি।“


মানুষ তাই কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারেনা শুধু আবিস্কার করতে পারে। এর একটি ছোট উদাহরন দিলে বুঝে যাবেন আমাদের দৌড় আসলে কতদুর। আমাদের যদি একটি রাক্ষসের ছবি বা দানবের ছবি আকতে দেয় তাহলে আমরা মানুষের বা কোন জন্তুর মুখ নাক দাঁত বিকৃত করে ছবি আঁকি। কারন আমাদের মস্তিস্কে এ চেনা প্রানীজগতের অভিজ্ঞতা ছাড়া কিছু নেই তাই আমরা সেগুলোকেই দুমড়ে মুচড়ে ভয়ঙকর চেহারা বানিয়ে ছবি আঁকি আর ভাবি এটাই রাক্ষস।

আমার ফোর ডাইমেনশনের জগতে বসবাস করি। দৈর্ঘ্য, প্রস্থ আর ভেদ এবং এর সাথে সময় যোগ করলে সেটা ফোর ডাইমেনশনে দাড়ায়। কিন্তু আরো ডাইমেনশন আছে কমপক্ষে ১০ টি। সেটা আপনি আপনার দেহের ইন্দ্রিয় দ্বারা বুঝতে পারবেন না। 


এটা জানা বা দেখার ভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে এবং সে জগত আপনি পৃথিবীর কোন ভাষাতেই বলে বোঝাতে পারবেন না। এটাতে শুধু সে নিজেই যেতে পারবে এবং সে নিজেই বুঝতে পারবে। তাই মানুষ তার দুনিয়ার শিক্ষার বইপত্রের জ্ঞানের একটা পর্যায়ের বাইরে আসলে নিরেট মুর্খ ছাড়া কিছুনা।

সে নিজেই সবথেকে বড় বিস্ময় এবং তার মাঝেই সব আছে কিন্তু সে নিজেকে বাদ দিয়ে বাইরে খোজ করে। সে নিজেই তালা আবার চাবি সে নিজেই, সে নিজেই রোগ আবার রোগের ওষুধও তার ভিতরেই রয়েছে কিন্তু সে তা জানে না। আর সে অজ্ঞ বলেই সে আজ দাস কিন্তু সেটুকু বোঝার ক্ষমতাও তাঁর নেই।


রুমি বলেন, যারা ক্বলব যত স্পষ্ট তার হৃদয়ে জ্ঞান তত স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে। কারন এটা বানানোই হয়েছে আয়নার মত করে যাতে মহাবিশ্বের প্রতিচ্ছবি তাতে ধরা পড়ে।

আপনারা জানেন কিনা জানিনা। মানুষের কিন্তু ৩ টি মস্তিস্ক। একটি মাথা, একটি পেট এবং আরেকটি হলো হার্ট। আপনারা গুগল করে এ বিষয়ে ভাল করে জেনে নিবেন বিস্তারিত। এই অতীন্দ্রীয় জগতে ঢুকতে গেলে আমরা হার্ট ব্রেইন বা কোরআনের ভাষায় ক্বলব ব্যবহার করে থাকি। 

ক্বলব আসলে কি? এই হার্ট আসলে বিস্ময়কর একটি জিনিস। জার্মানীর Kassel university এর একদল গবেষক তাঁদের গবেষণায় দেখেন যে একজন সাধারন মানুষ তার বুক থেকে যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ২০ ফোটন লাইট পার সেকেন্ড ট্রান্সমিট করতে পারে সেখানে একজন মানুষ যখন মেডিটেশন করে হার্ট সেন্টারে ফোকাস করে এবং অন্যদেরকে যখন এনার্জি বলেন বা ভালবাসা বলেন আর লাইট যাই বলেন না কেন সেটা পাঠান তখন সেটা হয়ে দাড়ায় ১,০০,০০০ ফোটন লাইট পার সেকেন্ড। 

সেটা একজন সাধারন মানুষের থেকে প্রায় ৫০০০ গুন বেশী ! একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যখন কেউ ভালবাসাকে ধ্যান জ্ঞান মনে করে তখন তার frequency এবং vibration এমন একটি উচ্চ লেভেলে পৌছায় যেটা দিয়ে আক্ষরিক অর্থেই সে matter বা বস্তুকে বদলাতে পারে এবং যে কোন রোগকে দুর করতে পারে এবং কোন নেগেটিভ ইভেন্ট কে পজিটিভ ইভেন্টে ট্রান্সফর্ম করতে পারে।


ক্বালব বা হার্ট আবার চিন্তা করতে পারে, ভালবাসতে পারে, অনুভব করতে পারে, মনে করতে পারে, যোগাযোগ করতে পারে এবং ইনফরমেশন ষ্টোর করতে পারে এবং প্রতি হার্ট বিটে সেই ইনফরমেশন সে সারা শরীরে ছড়িয়ে দিতে পারে এবং রিসিভ করতে পারে। এটার আরো যে সব কিছু করতে পারে তা আধুনিক বিজ্ঞান এখনো সে অবস্থায় ধারনা করতেও সক্ষম নয়।


ক্বলব শব্দের অর্থ করা যায় অন্তর।

সুরা যুমার এর ২২ নম্বর আয়াতে দেখবেন লেখা আছে, “যার ক্বলব আল্লাহর স্বরনের ব্যাপারে কঠোর সে সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট”

[ সূরা যুমুর,আয়াত ২২ : ”আল্লাহ ইসলামের জন্য যার বক্ষ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন ফলে সে তার রাবের দেয়া নূরের উপর রয়েছে, সে কি তার সমান যে এরূপ নয়? অতএব দুর্ভোগ সে কঠোর হৃদয় ব্যক্তিদের জন্য, যারা আল্লাহর স্মরণ বিমুখ! তারা স্পষ্ট বিভ্ৰান্তিতে আছে।”]


“তার মানে দাড়ায় যতক্ষন আপনার ক্বলবে আল্লাহ আছেন বা আপনি তার স্বরণ বা তাঁর frequency এবং vibration এর সাথে এলাইন আছেন ততক্ষন প্রকৃতির আইন অনুযায়ি আপনি সঠিক পথে আছেন এবং আপনার frequency কি করতে পারে তা তো গবেষকরা বলেছেন কিন্তু যখনই আপনার ফোকাস সরে যাবে তখনই প্রকৃতির আইন অনুযায়ী আপনি লোয়ার vibration এ চলে এলেন এবং শয়তানের খপ্পরে চলে গেলেন। 

বিষয়টা এতটাই সুক্ষ এবং কঠিন। এ বিষয়ের অবতারণা কেন করছি আর কারেন্সিওয়ারের সাথেই বা এর কি সম্পর্ক সেটা আস্তে আস্তে বুঝে যাবেন। তাই এই সিরিজের শেষ পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতেই হবে। 

ক্বলব এর কথা কোরআনে এসেছে ১৩২ বার। যার ভরটেক্স নাম্বার হলো ১+৩+২ = ৬।


সুরা হজ্বের ৪৬ নাম্বার আয়াতে বলা হচ্ছে,

“তারা কি জমিনে ভ্রমন করে না যাতে তাঁদের হৃদয় চিন্তা অথবা শিখতে পারে এবং তাঁদের কান শুনতে পারে? বস্তুত তাঁদের চোখ তো অন্ধ নয় বরং অন্ধ তাঁদের বক্ষস্থিত হৃদয়।“

রাসুল (সাঃ) বলেন,

“নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের শরীর বা আকৃতির দিকে তাকান না, বরং তিনি তোমাদের ক্বলবের দিকেই তাকান।“( মুসলিম)


আপনার বেশভূষায মাশাল্লাহ বিরাটই শরীয়তি লেবাস দ্বারা আবৃত কিন্তু আপনার অন্তরে ঘৃনা, বিদ্বেষ, হিংসা, ঈর্ষা, লোভ, কাম তাহলে আপনার লোক দেখানো পোশাকি ইবাদতের এক পয়সা দাম নেই বরং সেটাই আপনার ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট।


রাসূল (সাঃ) আরো বলেন, “ক্বলব হলো সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বাদশাহ। ( মেশকাত ) 

তিনি আরো বলেন,

“জেনে রেখ মানুষের শরীরের ভিতর এক খন্ড মাংসপিন্ড আছে, যখন তা সংশোধিত হয় তখন সমস্ত দেহই সংশোধিত হয় আর যখন তা দূষিত হয় তখন সমস্ত শরীরই দুষিত হয়। মনে রেখ ওটাই ক্বলব। (বোখারী ও মুসলিম)

আরেক হাদিসে পাওয়া যায়,

“মানুষ যখন পাপ কাজ করে তখন তাঁর ক্বলবের উপর কালো দাগ পড়ে যায়।“


দেখুন ১৪০০ বছর আগে কোরআনে হৃদয় যে চিন্তা করতে পারে শিখতে পারে এবং অন্ধও যে হতে পারে সে ব্যাপারে বলা হয়েছে এবং হাদিসেও পরিস্কার করে বলা রয়েছে যার যথার্থতা আজ একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করছেন। দেখা গেছে মানুষ যখন ভয় পায় তখন তাঁর frequency and vibration সবথেকে low থাকে। 

এবং প্রেম বা ভালবাসায় সেই energy, frequency, vibration একলাফে কয়েক হাজার গুন বেশী হয়ে যায়। যে কারনে দেখবেন ওলি আউলিয়াদের সংস্পর্শে থাকাটাকে বড় ইবাদতের অংশ মানা হয়। কারন তাঁদের energy আপনাকে অনায়াসে এমন লেভেলে তুলে নিতে পারে যেটা আপনি বছরের পর বছর কঠোর ধ্যান সাধনা করেও সম্ভব না। 



আপনারা ইমাম গাজ্জালী (রঃ) এর “কিমিয়ায়ে সা’আদাত” বইটা পড়ে দেখতে পারেন। অথবা ইউটিউবে সংক্ষিপ্ত একটি ভিডিও দেখতে পারেন “Alchemy of happiness” এটা কিমিয়ায়ে সাআদাতেরই ইংরেজী version

[ কিমিয়ায়ে সা’আদাত বই (৪ খন্ড) পিডিএফঃ https://archive.org/details/KimiaeSaadat/Kimiae%20Saadat%2001%20%28Almodina.com%29/page/n1/mode/2up ]

 আপনারা যারা পশ্চিমা দার্শনিকদের দু চারটা বই পড়ে নিজেদের বিজ্ঞ ভাবেন তারা ইমাম গাজ্জালী পড়ে বুঝে যাবেন তিনি কোন স্তরের এবং তাঁর বহু বই দ্বারা পরে ইউরোপিয়ানরা নিজেদের সমৃদ্ধ করলেও মুসলিমরা মোল্লাদের দ্বারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে বা সত্যি করে বললে পথভ্রষ্ট করানো হয়েছে সুপরিকল্পিতভাবে। 


সে বিষয়ে আপনাদের তথ্য-প্রমান সহ পরে ধীরে ধীরে জানাবো। এবং যদি বইটা পড়ে সঠিক ভাবে অনুধাবন করতে পারেন তাহলে আপনার আফসোস হবে কেন এগুলো স্কুলের কারিকুলামে যুক্ত হয়নি। অথচ এটা একেবারে প্রাথমিক জ্ঞান হবার কথা ছিল। ডারউইনের ছাই পাশ অপ্রমানিত থিওরী আমাদেরকে শিশুকালেই পশ্চিমারা কেন গিলিয়েছে স্কুলে, সেটাও বুঝে যাবেন। 

সব কিছুরই যোগসুত্র আছে, দরকার শুধু দেখার মত অন্তর। কারন আমরা দুই চোখে যা দেখি কোয়ান্টাম সাইন্স অনুযায়ী তা ইলুশন ছাড়া কিছু নয়।

এ কারনে কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,

তাঁদের চোখ তো অন্ধ নয় বরং তাঁদের হৃদয় অন্ধ।

এটা যে কতটা মারাত্মক কথা আপনাদের উপলব্ধী হবে না যতক্ষন না আপনার অন্তর চোখ খুলছে বা transformation হচ্ছে। আর এই transformation হলোই আপনি কেবল বুঝতে পারবেন মানব জীবন কি জিনিস এবং আপনি কে? তাঁর আগ অবধি আপনার সাথে গরু আর ভেড়ার বিশেষ কোন পার্থক্য নেই। রাগ হচ্ছে তাই না গরু ভেড়া বলেছি বলে? কিন্তু আমি তো তাও ভাল বলেছি কোরআনে তো আল্লাহ এই ধরনের কিছু মানুষকে জানোয়ারের থেকেও নিকৃষ্ট বলেছেন। কিন্তু এটাই সত্য আপনাদের প্রমান দিয়ে দিচ্ছি।


সমস্ত প্রানীজগতকে ৩ শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে।

১। নিম্ন শ্রেনীর প্রানী যেমন- পিপড়া, তেলাপোকা, কেচো, মশা, মাছি ইত্যাদি। এদের পুরোজীবনকাল মাত্র ৪ টি গুন দ্বারা পরিচালিত হয়। যথা- ভয়, ক্ষুধা, সেক্স, ঘুম। 

এই ৪ টি ছাড়া এদের আর কিছুই নেই। এরা এই ৪ টি বৈশিষ্ট্য দ্বারা তাঁদের সারাটি জীবন পরিচালিত হয়।

২। হিংস্র শ্রেনীর প্রানী। যেমন- বাঘ, সিংহ, কুকুর, নেকড়ে ইত্যাদি। 

এদের আগের ৪ টি সহ আরোও ৪ টি বৈশিষ্ট্য বা গুনাবলী দ্বারা পরিচালিত। 

সেই ৪ টি হলো এদের রাগ আছে, দেখবেন এরা যখন তখন ক্ষিপ্ত হয়। অর্থাৎ হিংস্র স্বভাবের।

এরা লোভী। যেমন আপনি এক পোটলা খাবার সামনে ঝুলিয়ে একটা কুকুরকে ১০ মাইল হাটিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। কুকুরের একবারের তরেও মনে হবেনা যে আপনি তাঁকে মাংস দেবেন কি দেবেন না। সে পিছু পিছু যেতেই থাকবে। 

এরা দখলদারি স্বভাবের। দেখবেন এরা গাছের গায়ে পেশাব করে। এটা করে তাঁদের এলাকা চিহ্নিত করার জন্য। যাতে এদের কোন স্বজাতি এই পথ না মাড়ায়। আর যদি তারা ঢুকে পড়ে তার মানে হলো সে তাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অতএব অবধারিত ফাইট।

এরা হিংসুটে স্বভাবের হয়। দেখবেন, নিজের খাবার থাকা সত্বেও এরা আরেকজনের খাবারে ভাগ বসায় এবং মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।

৩। উচ্চ শ্রেণীর প্রাণী। এই তালিকায় আমরা শুধু মানুষই আছি। 

তো এদের স্বভাবে ১,২ এ উল্লেখিত উক্ত ৮ ধরনের গুনাবলি বা বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান এবং আরো ৪ টি দেখা যায়।

মোট তাহলে দাড়ায় ১২টি। বাড়তি ৪ টি হলো। 

✦ মানুষ মিথ্যা বলে যেটা প্রানীজগতের কেউ বলেনা।

✦ মানুষ প্রতারণা করে যেটা প্রানী জগতের কেউ করেনা। 

✦ মানুষ অহংকার করে যেটা প্রানীজগতের কেউ করেনা। 

✦ এবং এরা ঈর্ষাকাতর বা পরশ্রীকাতর এরা আরেকজনের ভালকে সহ্য করতে পারেনা। 


বলা বাহুল্য খেয়াল করে দেখবেন এই ৪ টি স্বভাব আসলে শয়তানের। শয়তান আদম (আঃ) কাছে গন্ধম (রূপক) এর ব্যাপারে মিথ্যা বলে প্রতারণা করেছিল কারন সে আদমকে ঈর্ষা করেছিল, আর ঈর্ষা এসেছিল তার ভিতরে কারন সে অহংকার করেছিল। একটি আরেকটির সাথে যুক্ত। 


এবার আপনারা আমাকে বলেন মানুষের ভিতর এই সব নিম্নশ্রেনীর প্রানীদের গুনাবলি বা বৈশিষ্ট্য এবং শয়তানের গুনাবলী থাকা অবস্থায় সে কিভাবে সৃষ্টির সেরা বলে নিজেকে দাবী করতে পারে?


বরং শয়তানের ওই ৪টি গুনাবলী যতক্ষন তাঁর ভিতর আছে তার একটি পরমাণু সমান ইবাদতই কবুল হবে না। এটাই আইন।

শয়তানের ওই ৪টি গুনাবলী যতক্ষন তাঁর ভিতর আছে তার একটি পরমাণু সমান ইবাদতই কবুল হবে নাকি না এই ব্যাপারে কোনো অভিজ্ঞ আলেমের পরামর্শ নিন। (LEA) ]


আপনারা বলতে পারেন মানুষের ভিতর দয়া আছে মমতা আছে, সহমর্মিতা আছে, সে অপরকে কেন স্বার্থহীনভাবে হেল্প করে। খুব ভাল। কিন্তু আপনি জানেন কি এগুলো আসলে কার গুনাবলি বা বৈশিষ্ট্য? আল্লাহর ৯৯ টি নাম বা আসমাউল হুসনা পড়ে দেখেন তাহলে বুঝে যাবেন। এখনো বোঝেননি? ভাল, আপনার বাম হাতের তালু খুলুন। দেখবেন ওখানে দুইটা চিহ্ন আছে পাশাপাশি একটি হলো ‘^’ আরেকটি হলো আলিফের মত খাড়া দাগ ‘1’। 


আরবীতে ৮ লেখা হয় ^ চিহ্ন দিয়ে এবং আলিফ মানে ১ ধরা হয়। তারমানে আপনার বাম হাতে ৮১ বা ৮+১ =৯। এবার আপনার ডান হাতের তালু খুলুন দেখবেন এখানে আছে ১৮ বা ১+৮=৯।


ভরটেক্স নাম্বার অনুযায়ী ৯ হলো সর্বচ্চ নাম্বার। (২য় পর্ব পড়ে নিবেন) এতে মানুষের উচ্চতা এবং মর্যাদাকেই প্রতিনিধিত্ব করে। কেন করে? দুই হাতের তালু এক করেন ৮১+১৮ = ৯৯।

আপনি আসলে কে তাহলে? কিছু বুঝেছেন? আল্লাহ তাহলে কোথায় আছে? কোরআনে কিন্তু বলাই আছে মহাধমনীর থেকেও নিকটে। হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়ার (রঃ) প্রধান খলিফা হযরত আমির খসরু (রঃ) লিখেছিলেন।

“আমি তুমি হলাম, তুমি আমি হলো,

আমি দেহ হলাম, তুমি প্রান হলে,

যেন কেউ বলতে না পারে, আমি একজন আর তুমি আরেকজন”।


বিষয়টা কি দাড়াল তাহলে? আপনাকে আসলে প্রতিনিয়ত আল্লাহর গুনাবলী নিজের ভিতর দিয়ে প্রকাশ করতে হবে। তাহলেই আপনি ‘খলীফা’ হবেন। যে কারনে আপনি এখানে। তাহলে এই মহাবিশ্ব শুধু অপারেট নয় বরং নিজেই ইচ্ছামত program করতে পারবেন। সমগ্র সৃষ্টিজগত আপনার অধীন তখন, আপনি যা বলবেন তাই হবে।

আল্লাহ কোরআনে একটি আয়াতে বলেছেন, “তোমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হয়ে যাও” ( ২:১৩৮) কি সুন্দর অনুমতি। 


কিন্তু আপনার ভিতর ওই ১২ টি জিনিস থাকা যাবেনা। আপনি বলবেন তাহলে কি ঘুমাব না? ঘুমাবেন কিন্তু আপনার হৃদয় কখনো ঘুমাবেনা সদা জাগ্রত থাকবে। এরকমভাবে বাকিগুলোকেও আপনি সিস্টেম মত চালাতে পারবেন। এ বিষয়ে আর বলা উচিত হবে না বলে বিরত থাকলাম। এখন আপনি বলতে পারেন হাতের রেখায় আরবী ভাষায় দেখতে কেন হবে? জ্বী এর উত্তর আছে কিন্তু এখন বলব না। পরে আসব সে বিষয়ে।

এই যে energy এটাকে আবার universal currency বলা হয়। আপনি যখন কোন কিছুতে ফোকাস করেন বা মনোনিবেশ জ্ঞাপন করেন তখন আসলে আপনি আপনার নিজের বরাদ্দকৃত energy currency থেকে খরচ করলেন। একারনে আমাদের নবী-রাসূল, ওলি আউলিয়ারা বারবার বলে গিয়েছেন এবং নিজেরা নিজেদের ওই লেভেলে নিয়ে গেছেন যেখানে গেলে এই energy currency কে সঠিকভাবে সঠিক স্থানে খরচ করা যায়। 


এখানে আবার ব্যাক্তিগত ফোকাস এবং সম্মিলিত ফোকাসের প্রভাব জড়িত আছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে আমাদের উপর এবং পৃথিবীর সমুদয় প্রানীজগতের উপর। এটাকে বলে collective consciousness। কারন এই পৃথিবীটাকে আমরা যেভাবে দেখি সে কিন্তু মোটেও সেরকম না।

সে নিজেই একটা সিস্টেমে চলে এবং নিজেই একটি প্রান এবং তাঁর নিজস্ব frequency আছে বাকি সবার মতই। আমরা যে একজন আরেকজন থেকে আলাদা ভাবি যদিও কোয়ান্টাম লেভেলে বা হাকিকতে তা নই সেটা আসলে আমাদের আলাদা আলাদা frequency বা vibration এর কারনে এমনটা হয়। একারনে দেখবেন সবাইকে সবার ভাল লাগে না, কাউকে কাউকে ভাল লাগে কারন এই যে frequency বা vibration সেটার match হওয়া না হওয়ার উপর নির্ভর করে।


আর যখন মানুষ প্রেমে পড়ে এবং তাঁর ভালবাসা যত তীব্র হয় তাঁর প্রেমাস্পদের প্রতি তখন তাঁর frequency এবং vibration সবথেকে high থাকে যে কারনে সে অদ্ভুত এক সুন্দর জগতে বাস করে যে জগতে ময়লা ডাষ্টবিন আর জ্যামের শহর ঢাকাও তার কাছে গার্ডেন অব ইডেন মনে হয়। এবং তার প্রেমাস্পদের সাথে তার frequency আর vibration এক হয়ে যায়। একটা fusion ঘটে যায়। 


এবার একবার ভাবুন তো যে আল্লাহর প্রেমে পড়ে তার frequency আর vibration এর কি অবস্থা হয়! তখন সারা মহাবিশ্বের সমস্ত frequency আর vibration তার frequency আর vibration সাথে match করার জন্য রীতিমত প্রতিযোগীতা করতে থাকে। সারা জগত তখন তাঁর পিছনে আঠার মত লেগে থাকে।


তাঁদের সবার ভাষাই সে বোঝে এবং সবাই তাঁর ভাষা বোঝে। যেহেতু পুরো মহাবিশ্ব submission form এ বসবাস করে এবং যেহেতু মানুষকে সৃষ্টিই করা হয়েছে খলিফা হিসেবে সেহেতু তখন সমস্ত সৃষ্টিজগত তাঁর আজ্ঞাবহ হয়ে যায়। কারন তারা প্রথমেই আদমকে সেজদা করে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করেছিল। কেন করেছিল? কারন আল্লাহ আদমের ভিতর নিজ রূহ ফুকে দিয়েছিলেন। আহাদের দম থেকেই আদম (আঃ)। 


আর যেহেতু আহাদ মানে অখন্ড সত্বা বা যাকে খন্ডন করা যায়না সেহেতু আদমের ভিতর স্বয়ং আল্লাহই বসবাস করেন। কিন্তু মানুষকে সেই রূহকে জাগ্রত করা লাগে। কোরআনে বলা আছে দেখবেন “প্রত্যেক নফস মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে।“কিন্তু কোরআনে কোথাও লেখা নেই “প্রত্যেক রূহ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে।“কারন রূহ স্বয়ং আল্লাহর অংশ তাঁর মৃত্যু নেই।


কিন্তু মোল্লারা এত বড় মুর্খ আর বেয়াদব যে তারা মানুষ মরলে রূহের মাগফেরাত কামনা করে অথচ মরেছে নফস, পাপ করেছে নফস। মানে আল্লাহর কাছে তারা আল্লাহরই পাপের মাগফেরাত কামনা করছে। কি হাস্যকর। এই যে ভুল এটা যে কত মারাত্মক ভুল সেটা আরো সামনে যত যাবেন ততই টের পাবেন। একটা ভুল কিভাবে একটা জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে অথচ তারা নিজের ভুলটাই না বুঝে ইহুদি নাসারা শয়তানের দোষ দিয়ে বেড়াচ্ছে।


একারনেই আল্লামা ইকবাল বলেছিলেন,

“মোল্লারা কোরআনের যে তাফসির করেছে তাই দেখে স্বয়ং আল্লাহ তার রাসূল এবং জিবরাঈল তাজ্জব বনে গেছে।

ভুল যদি এই একটা হতো তাহলেও মেনে নেয়ে যায় কিন্তু হাজার হাজার ভুল।

যেকারেন জর্জ বার্নার্ড বলেছিলেন,

“ইসলাম হলো শ্রেষ্ঠ ধর্ম আর মুসলিমরা হলো তার নিকৃষ্ট অনুসারী”। তিনি আরো বলেছিলেন, যারা বিশ্বাস করে তাঁদের ইশ্বর আকাশে বসবাস করে তাদের থেকে সবসময় দুরে থাকবা কারন তাঁদের মত বিপজ্জনক কেউ নেই।“

এটা যে কত বড় সত্য সেটা আরো সামনে গেলে টের পাবেন।


তো আমরা যখন কোন নেগেটিভ বা আননেচারাল কিছু করি তখন সেটা সরাসরি তাঁর সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলে। যত ছোটই হোক না কেন তার সরাসরি প্রভাব এই সিস্টেমের উপর পড়ে। আমাদের ব্যক্তিগত কাজ বা কথার বা চিন্তার প্রভাব যেমন পড়ে তেমন সম্মিলিত কাজ বা collective consciousnesses এর প্রভাব পৃথিবীর উপর পড়ে।

আপনি যেমন উচু পাহাড়ের পাদদেশে দাড়িয়ে জোরে চিৎকার দিলে সেটার প্রতিধ্বনি ফিরে আসে এই পৃথিবীটাও তেমনি। আপনি যা করবেন সে তাই ফিরিয়ে দেবে। ভাল করলে ভাল খারাপ করলে খারাপ ফিরিয়ে দেবে। যখন সে সেটা ফিরিয়ে দেবে সেটা তাঁর নিজের স্টাইলেই ফেরত দেবে যেটা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। কখনো কখনো সে এটা বাছবিচার না করেই সবার উপরেই ফেরত দেবে এবং তখন ভাল খারাপ সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। 


আর এটাকেই আমরা ধর্মের ভাষায় আযাব বলে থাকি। কারন যেহেতু সে নিজেই একটি সত্তা সেহেতু সে তাঁর নিজের সিস্টেমের সুস্থতার জন্য বা নিজের ধর্ম অনুযায়ী বা প্রোগ্রাম অনুযায়ী যেটাই বলেন না কেন সে সেটা করবে তার ভারসাম্য ঠিক রাখতে। 

যেহেতু মহাবিশ্বের সবকিছুই জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি সেহেতু এখানে চিন্তার অতীত নিখুত ভারসাম্য বজায় রেখে সৃষ্টিজগতকে চলতে হয়। ভারসাম্য একটু এদিক ওদিক হলেই পুরো সিস্টেম ধ্বংস হয়ে যাবে চোখের পলকে। ভাল কাজ, কথা কিংবা চিন্তার প্রভাব যেমন এই সিস্টেমের উপর পড়ে তেমন উল্টাটাও হয়। কারন কাজ কথা চিন্তা সবই শক্তির একেকটি রূপ।


ভূপৃষ্ঠে যেমন একটা টেকটোনিক প্লেটের সাথে আরেকটি টেকটোনিক প্লেটের সবসময় চাপাচাপি ঘষাঘষি লেগে থাকে যে কারনে ভুমিকম্পের উৎপত্তি হয়। 

ঠিক তেমনি ভাল আর মন্দ দুটি শক্তির সবসময় ফাইট নিরন্তর চলছে সৃষ্টির শুরু থেকেই। এবং চলতেই থাকবে। এটাই মহাবিশ্বের ধর্ম। আজ যদি এখানে একজন চোর মারা যায় তাহলে পৃথিবীর আরেকজায়গায় আরেক চোরের জন্ম হয়।

যদি আরেক জায়গায় কোন ভাল মানুষ মারা যায় তাহলে এখানে আরেকজন ভাল মানুষের জন্ম হবে। সিস্টেম একইরকম থাকবে কিন্তু প্রতিটা দিনই আবার আলাদা, গল্প, চরিত্রও আলাদা কিন্তু মুলভাব বা essence সেই একই।


তাই যারা মনে করেন যে শয়তান বলে কিছু নেই বা কোন শক্তি নেই তার অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহ বলেও কিছু নেই বা ভাল শক্তি বলেও কিছু নেই। এখন আপনি বলবেন, শয়তান বিষয়টি বা তার পুজা করা বিষয়টা উদ্ভট। হুম... তাহলে যে লোক দলে দলে মসজিদে যায় সেটা উদ্ভট লাগে না? উত্তর নেই। এটা উদ্ভট লাগে না কারন জন্ম থেকেই আপনি এটা দেখে আসছেন। যেহেতু শয়তানের পুজার বিষয়টি আপনার অজানা বা সচরাচর দেখা যায়না তাই আপনি সেটা মেনে নিতে পারছেন না। 

অথচ কোরআনে শয়তানকে ৮৮ বার উল্লেখ করা হয়েছে। শয়তানকে ৪ টা নাম দেয়া আছে। নাম ৪ টি হলো- শয়তান, ইবলিশ, মরদুদ এবং খান্নাস। বলা হয়েছে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। কিন্তু না আপনি তাকে দেখতে পারছেন, না আপনি তাকে চিনতে পারছেন। কারন আপনি অজ্ঞ তাই।


আপনি জানেন না কোথায় তার আবাস কি তার অস্ত্র বা কোন সিস্টেমে কিভাবে সে আক্রমন করে। ৪ টি নাম কেন দেয়া হয়েছে আর কিভাবে সে কাজ করে বা কি তার অস্ত্র সবই জানাব। যদি বলেন ভাই আমি আপনার কোরআন কেও বিশ্বাস করিনা। অসুবিধা নেই। অংক তো বিশ্বাস করেন নাকি, যে ২ আর ২ এ ৪ হয়, ৫ হয়না? তাতেও হবে। সেভাবেও বুঝতে পারবেন।


[আমি এই লেখা যেভাবে লিখছি তাতে যারা বিজ্ঞান বিশ্বাস করেন তারা তাঁদের মত করে বুঝবেন যারা ধর্ম বিশ্বাস করেন তারা তাঁদের মত করে বুঝবেন আবার যারা রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন তারা তাঁদের মত করে বুঝে যাবেন।]


আর যারা তিনটাই বুঝেন তারা আরো ভাল ভাবে ছবিটা পরিস্কার বুঝতে পারবেন। তবে অন্ধবিশ্বাসীদের জন্য লিখছিনা আমি অতএব আপনারা ঘুমিয়ে আছেন ঘুমিয়েই থাকুন। লেখাটা ভালভাবে বোঝার বা উপলব্ধি করার একটা ফরমুলা দিচ্ছি আপনাদের, সেটা হলো যখনই নতুন কোন পর্ব পড়তে যাবেন তখনই শুরু করবেন একদম ১ম পর্ব থেকে। কারন আমি একটি বিষয়ে থেকে চট করে আরেকটি বিষয়ে লাফ দিচ্ছি , দেখা যাবে ১ম পর্বে একটি বিষয় অর্ধেক লিখে ছেড়ে এসেছি সেটার বাকিটুকু,

দেখা যাবে লিখছি ৩য় পর্বে আবার ২য় পর্বে ছেড়ে এসেছি যেটা সেটা জোড়া লাগছে ৫ম পর্বে এসে। আর আপনারা গড়গড় করে রিডিং পড়ার মত করে পড়লেও আবার এটা কিছু বুঝবেন কিছু বুঝবেন না। 

মুলত তাঁদের জন্যই এই লেখা যাদের জ্ঞানের নেশা আছে। তাই বাকিরা এমনিতেই হতাশ হয়ে দুরে চলে যাবেন।

বস্তুজগতের ধর্ম অনুযায়ী কোন স্থান ফাঁকা থাকবে না। উদাহরন স্বরুপ বলা যায় আমরা যখন সিরিঞ্জ দিয়ে শরীর থেকে রক্ত টেনে বের করি তখন কিন্তু আমরা আসলে রক্ত টেনে বের করিনা বরং বাতাস টেনে বের করি যে কারেন রক্ত বাতাসের জায়গা দখল করার জন্য সিরিঞ্জের ভিতর ঢুকে পড়ে।


তাই আপনি যদি নিজেকে না জানেন তবে আপনি আসলে শয়তান দ্বারা পরিচালিত একজন মানুষ।

যতই আপনি হাদিস কোরআন পড়ে মুফতি হন বা নামাজ পড়ে কপালে দাগ ফেলে দেন না কেন আপনি শয়তানের হাতের পুতুল ছাড়া কিছুনা। কেন সে বিষয়ে পরে আরো বিস্তারিত আলোচনা করব। আর এব্যাপারে এই সিরিজের প্রথম পর্বে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করেছি পড়ে নিবেন।


সুন্নাতআল্লাহ বা এই Oneness বা তওহিদের কোথাও শয়তানের থাকার জায়গা নেই শুধু দুটি স্থান বাদে। সেটা হলো জ্বীন এবং ইনসানের হৃদয়ে। তাই প্লেটো, এরিষ্টটল থেকে শুরু করে শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) পর্যন্ত সবাই বলে গেছেন Know Thyself বা নিজেকে জানো। 


মানুষ হলো সমস্ত মহাবিশ্বের একটি মিনিয়েচার ফর্ম। আমরা যে পরমাণু দিয়ে তৈরী তাঁর সৃষ্টি এই পৃথিবীতে নয় এমনকি এই সৌরজগতের সৃষ্টির বহু আগে কোন সুপারনোভা বিষ্ফোরনের মাধ্যমে সৃষ্ট কণা দিয়ে। এই কারনে বিজ্ঞানী Carl sagan বলেন we are all star dust। 


তাঁর আগে বলে নেই খাজারিয়ান জায়োনিস্টরা এই collective consciousness বা যেটাকে আমরা energy currency বলছি সেটাও তারা বহুঅংশে নিয়ন্ত্রন করছে অনেকদিন ধরে। তাঁদের এই Mind control টা তারা করছে ৩ ভাবে। একটা এডুকেশন সিস্টেম দিয়ে আরেকটা মিডিয়া তথা ইন্টারনেট, টিভি, সিনেমা দিয়ে এবং আরেকটা পলিটিক্স দিয়ে।

১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৫৫ সালের ভিতর জায়োনিস্টরা মোট ১০০০ নাজি জার্মান সাইন্টিস্টকে “অপারেশন পেপারক্লিপ” এর মাধ্যমে জার্মানী থেকে আমেরিকায় বিভিন্ন গবেষণার কাজে এবং বিভিন্ন সংস্থায় নিয়োগ দেয়। তাঁর ভিতরে Warner Von Braun কে NASA Admin পোষ্টে, Arthur Rudolph কে NASA Scientist পোষ্টে, Sidney Gottlieb কে CIA/ TSS/ MK Ultra তে নিয়োগ দেয়। এই নাজি সাইন্টিষ্টরাই আমেরিকার এবং রাশিয়ার রকেট ইঞ্জিন তৈরী করে দেয়। 


বাকি সাইন্টিস্ট এবং গেষ্টাপো বাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন Top secret মিশনে লাগানো হয় যার ভিতরে হিটলারের পিউর বা খাটি আরিয়ান বা আর্য রক্তের বংশ সৃষ্টির একটি প্রজেক্ট ছিল সেটা তারা আমেরিকাতেও চালু রাখে। রক্তের এই বিশুদ্ধতা রক্ষা করা তাঁদের কাছে একটা মহাগুরুত্বপুর্ন একটি বিষয়। যেহেতু তারা রেসিস্ট একারনে এটা তাদের কাছে একটা ইবাদতের মত।

ইহুদিরাও এটা করে থাকে আবার হিন্দুদের ভিতর ব্রাহ্মনরাও এটা করে থাকে বিয়ে শাদির ক্ষেত্রে কিন্তু হিটলার রীতিমত ল্যাবরেটরীতে প্রজেক্ট খুলে বসেছিল। ব্রাহ্মনরাদের কথাটা মাথায় রাখবেন। এই যে মিল দেখতে পান ইহুদিদের সাথে সেটা বোধহয় এমনি এমনি নয়। পিলে চমকানো একটা তথ্য আছে সে ব্যাপারে সামনে লিখব।

নাজিরা আমেরিকাতে যাবার পরেও এটা চালু রাখে এবং আমেরিকার ইউটাহতে এবং আরোও কিছু শহরে এটা আবার নতুন করে শুরু করে। আমরা সবাই জানি এবং বিশ্বাস করি যে নাজিরা হেরে গিয়েছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধে কিন্তু সত্যটা হলো নাজিরা হারেনি বরং তারা ভোল পাল্টিয়ে আমেরিকান হয়ে গিয়েছিল এবং নতুন করে আবার তাই শুরু করেছিল যা তারা হিটলারের হয়ে করত। 


তারা শুধু হিটলারকে সরিয়ে দিয়েছে এবং জার্মানীকে ধ্বংস করে তাঁদের জাপানীদের মতই ইচ্ছার দাস বানিয়েছে এবং সেই সেট আপটাই তারা আবার আমেরিকাতে চালু করেছে বিভিন্ন কর্পোরেশনের ব্যানারে। অপারেশন পেপারক্লিপ সে কথাই বলে। আপনারা এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত নেট ঘেটে বের করে নিয়েন। বলা বাহুল্য এরা মনে করে বা বিশ্বাস করে বা সত্যও হতে পারে যে এরা মিশরের ফেরাউনদের বংশধর। আর মিশরেও ফেরাউনরাও BAAL এর উপাসনা করত। এবং তাঁদের যাদু বিদ্যার কথা তো বাইবেল এবং কোরআনেও উল্লেখ আছে।

সব কিছুর শুরু ইরাকের উর শহর থেকে। সুমেরীয়দের এই শহরেই BAAL এর উপাসনার শুরু এবং শয়তানিজমের জন্ম। অদ্ভুত ঘটনা হলো এই উর শহরেই একই সময় ইব্রাহীম (আঃ) জন্ম। যার মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের শেষ পর্যায়ের শুরু। কাকতালীয়? nope যারা universal system সম্পর্কে জানেন তারা খুব ভাল করেই জানেন যে এটা পরিকল্পিত। 

এই ইব্রাহীম (আঃ) যার হাত ধরেই ৩ ধারার Abrahamic religion এর শুরু। তিনিই ইহুদী, খৃষ্টান এবং মুসলিমদের ধর্মীয় জাতির পিতা। এবং এক্ষেত্রেও আমরা একই বিস্ময়কর ঘটনা দেখতে পাই আর সেটা হলো ইব্রাহীম (আঃ) এর জন্মের পর থেকে সব নবী রাসূল জন্মের ক্ষেত্রেও এই একইভাবে রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করা হয়েছে। আল্লাহ এই একই ইবারাহীম (আঃ) এর বংশে সব নবী রাসূল পাঠিয়েছেন যাদের নাম আমরা কোরআনে দেখতে পাই। এটা কি কাকতালীয়?

মোটেও না। মহাবিশ্বে কাকতালীয় বলে কোন কিছু নেই। সেটা আরো সামনে এগিয়ে দেখতে পাবেন।


 এটা যেমন দুইটা শক্তির লড়াই তেমনি একইভাবে এই দুই শক্তি দুইটা blood line কে প্রতিনিধিত্ব করছে আমরা দেখতে পাই। মাথায় রাখবেন এই blood line এর কথা কারন এটার উপর পুরো ইসলাম বা একেশ্বরবাদী ধর্ম এবং শয়তানের ধর্মের এবং আমার আপনার সবার জীবন সবকিছু নির্ভর করছে। এবং এটার উপরই এই পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। 

এই কাহিনীর শুরু একই শহরে এবং একই সময়ে। অতএব আমি এর পরের গল্প এভাবেই নিয়ে যাব।। তাহলে পুরো ছবিটা আপনারা পরিস্কার দেখতে পারবেন এবং এতদিন যে ভুল জেনেছেন কিংবা আরো ভাল করে বললে ভুল জানানো হয়েছে কোথা থেকে ভুলের শুরু এবং তার খেসারতটা কতখানি সেটাও পরিস্কার বুঝতে পারবেন।


১ম পর্ব বলেছিলাম মায়ানরা ৬ হাজার বছরের cycle এর কথা বলেছিল এবং তারা বিশ্বাস করত এবং জানত যে প্রতি ৬ হাজার বছর পর পর পৃথিবী আগের সিস্টেমকে ধ্বংস করে আরেকটা নতুন সিস্টেমের জন্ম দেয়। পাত্র পাত্রী বদলে যায় কিন্তু খেলার ধরন একই থাকে। তাই যদি হয়ে থাকে এবং আপাতদৃষ্টিতে তাই মনে হচ্ছে যে আমরা সেই ৬ হাজার বছরের সাইকেলের শেষ ২০-৩০ বছর দেখছি। নতুন সিস্টেম অলরেডী চালু হয়ে গিয়েছে।


ইব্রাহীম (আঃ) এর দুই বউ। বড় বউ এর নাম সারাহ। তাঁর বাচ্চা হত না। যে কোন কারনেই হোকনা কেন তারা নিজের শহর থেকে মিশরে যায়। এবং হাজেরা বা বাইবেলের হেগার নামক মিশরীয় এক প্রিন্সেস এর সাথে নবী ইব্রাহীম (আঃ) ২য় বিয়ে হয়। এবং হাজেরার গর্ভে ১ম সন্তান ইসমাইল (আঃ) এর জন্ম হয়।


যিনি নিজেও নবী ছিলেন। বাচ্চা হবার পর সারাহ হাজেরার প্রতি তীব্র ঈর্ষার কারনে সংসারে অশান্তি ডেকে আনে। তারপর আমরা দেখি ইব্রাহীম নবী সংসারের ঝামেলা এড়াতে কিংবা আল্লাহর নির্দেশে হাজেরা এবং শিশু ইসমাইলকে নিয়ে ততকালীন হেজাজ এবং এখনকার মক্কার মরুতে রেখে চলে যান। যেখানে এখন কাবা সেখানে তখন জনমানবহীন ধুধু মরুভুমি ছাড়া কিছুই ছিল না।

পানির পিপাসায় শিশু ইসমাইল কান্না শুরু করলে মা হাজেরা পানির খোজে একবার সাফা পাহাড়ে একবার মাওয়া পাহাড়ে দৌড়াদৌড়ি করেন। যে কারনে হাজিরা হজ্ব করতে গিয়ে সেই হাজেরার স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে ৭ বার সাফা মাওয়াতে দৌড়াদৌড়ি করে।

যা হোক তিনি ৭ চক্কর লাগানোর পরে দেখেন শিশু ইসমাইলের পায়ের নীচ থেকে পানির ফোয়ারা ছুটছে। তাই দেখে তিনি কিছু পাথর দিয়ে পানিতে বাধ দিয়ে দেন। এটাই সেই বিখ্যাত জমজম কুয়া। এই পানি দেখে আকাশে পাখি উড়তে থাকে আর পাখি ওড়া দেখে বেদুইনরা পানির খোঁজে জমজমের কাছে আসে এবং এভাবেই জনমানবহীন মরু মক্কাতে মানুষের বসতি আরম্ভ হয়।

ওদিকে কিছু দিন পর দেখা গেল বড় বউ সারাহর বাচ্চা হলো তার নাম ইসহাক বা আইজাক। তিনিও নবী ছিলেন। ইসহাকের ছেলে হলো এবং তার নাম হলো ইসরাইল। তিনিও নবী ছিলেন। ইসরাইলের ১২ জন ছেলে ছিল আর এই ১২ জন ছেলের বংশকেই কোরআনের বনী ইসরাইল বলা হয় বা ইহুদি বলা হয়। মুসা বা মোজেস, হারুন বা এ্যরন, দাউদ বা ডেভিড, সোলায়মান, জেসাস বা ইসা (আঃ) সবাই এই বংশের নবী রাসূল ছিলেন। কোরআনে টোটাল ২৫ জন নবীর কথা বলা আছে যার অধিকাংশই ইহুদি বা ইব্রাহীম (আঃ) এর বড় বউ এর সন্তান।

[ নবীরা আসমানী কিতাবের অনুসারী ছিলেন, আল্লাহর দেওয়া নির্দিষ্ট নিয়মনীতি, বিধানের মধ্যে আবদ্ধ ছিলেন। এবং আল্লাহর প্রেরিত আসমানী কিতাবের নির্দেশ অনুযায়ী দাওয়াহ এর কাজ করে গেছেন। অতএব তাদেরকে বর্তমান ইহুদিদের সাথে তুলনা করা যাবে না। বর্তমান ইহুদি, খ্রিস্টানরা আসমানী কিতাব থেকে দূরে চলে গেছে এবং পথভ্রষ্ট হয়েছে। কুরআনে বিস্তারিত পাবেন। [LEA] 

এদিকে কিছু দিন পর আবার আল্লাহর নির্দেশে ইব্রাহীম নবী যাকে আল্লাহ খলীলূল্লাহ উপাধী বা আল্লাহর বন্ধু উপাধী দিয়েছেন তিনি মক্কায় আসলেন এবং আল্লাহর নির্দেশে কাবা ঘর পুননির্মানে হাত দেন বা তৈরী করেন। কথিত আছে আগে থেকেই এখানে কাবা ঘর ছিল কিন্তু ধ্বংস হয়ে বালুর নীচে চাপা পড়ে ছিল। বাপ বেটা মিলে কাবা ঘর নির্মান করেন। 

তারপর ইসমাইলকে কুরবানির কাহিনী সবাই জানেন। নবী ইব্রাহিমকে বলা হয়েছিল তাঁর প্রিয় বস্তুকে কুরবানী করতে। সব নবীদের মত তিনিইও সেল্ফলেস ছিলেন বা ইগো বা আমিত্ব ছিল না তাই তার সব থেকে প্রিয় ছিল তার ছেলে ইসমাইল তাই তাকেই কুরবানী করতে গেলেন। হাকিকতে আমাদের প্রিয় বস্তু হলো আমিত্ব বা আমাদের নফস বা ইগো। কুরবানী করার কথা আমাদের সেটা কিন্তু আমরা সেটা না করে গরু ছাগলের উপর দিয়ে চালিয়ে দেই। যাক সে কথায় পরেও আসা যেতে পারে।

এই নবী ইসমাইলের বংশেই আসলেন শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)। 

আর ইসমাইল (আঃ) বংশই হলো আরব বংশ। তারমানে হলো আরব আর ইহুদিরা একই বাপের দুই বউ এর রক্ত ধারা। ইসমাইল (আঃ) আর শেষ নবীর মাঝে কোন নবী আসেনি হাজেরার এই ধারায় সুদীর্ঘ প্রায় ৩ হাজার বছর। ইহুদীরা কোনকালেই হাজেরাকে মেনে নিতে পারেনি। বলত সে ছিল দাসী এবং বিচিত্র কারনে বা অহংকারের কারনে ঘৃনা করত।  

ইহুদিদের কিতাবে শেষ নবীর আসার এবং সে কিরকম হবে না হবে সব কিছুর নিখুত বর্ণনা দেয়া ছিল। এবং ইহুদি পন্ডিতরা দীর্ঘ সময় ধরে শেষ নবীর অপেক্ষা করছিল যে তাঁদের বংশেই শেষ নবীর জন্ম হবে। 

এ কারনে যখন কোন ব্যবসার কারনে যখনই আরবদের সাথে ইহুদিদের ঝগড়া হত তখনই ইহুদীরা আরবদের শুনিয়ে শুনিয়ে বলত যেদিন আমাদের শেষ নবী আসবে সেদিন তোমাদের আমরা দেখে নেব। কিন্তু শেষ নবী আসলেন ঠিকই এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেই ইব্রাহীমের বংশেই কিন্তু আরেক বউ এর ধারায় আর এখানেই অহংকারী ইহুদিরা সব জেনেও মুখ ফিরিয়ে নিল এবং শেষ নবীকে হত্যার সব রকম চেষ্টাই তারা করেছিল। 


সিরিয়ার খৃষ্টান যাজক বাহিরা শেষ নবীকে ১২ বছর বয়সেই সর্বপ্রথম চিনে ফেলেন যে তিনিই শেষ নবী।

তখন তিনি চাচা আবু তালিবের সাথে সিরিয়া যাচ্ছিলেন কাফেলার সাথে। ২য় ব্যাক্তি যিনি শেষ নবীকে চিনেছিলেন তিনি হলেন আরেক পন্ডিত ওয়ারাকা বিন নওফেল। এবং আল্লাহ নিজেও কোরআনে বলেছেন শেষ নবীকে উদ্দেশ্য করে যে, তারা তোমাকে নিজ সন্তানকে যেভাবে চিনে সেভাবেই চিনে কিন্তু তারা তোমাকে মানবেনা। 

সবাই জানে যে মুসলিমদের প্রথম কেবলা ছিল জেরুজালেম এবং তারা সালাত আদায় করত জেরুজালেমের দিকে তাকিয়ে। সব চেষ্টা যখন বিফলে গেল তখন আল্লাহ মুসলিমদের কেবলা বদলে দিলেন এবং কাবাকে নতুন কেবলা নির্ধারন করে দিলেন। 


ইহুদীরা বরাবরই নবীর ধারাতে ছিল বলে তারা উচ্চ শিক্ষিত ছিল। এবং জ্ঞান গরীমায় তারা ছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। তাদেঁরকে একারনে আহলে কিতাব বলা হয়েছে কোরআনে বা তারা আসমানী কিতাবধারী। 

আর অন্যদিকে আরবদের মাঝে ইসমাইল (আঃ) থেকে শেষ নবীর ভিতর এই ৩০০০ বছর কোন নবী না থাকার কারনে তারা একটি জঘন্য এবং নিকৃষ্ট জাতিতে পরিনত হয়ে পড়েছিল পৃথিবীর বুকে। এমন খারাপ কাজ নেই যে তারা করত না।


আইয়ামে জাহেলিয়াত এমনি এমনি বলেনি। প্রচন্ড গোত্রপ্রীতি ছিল। এবং এক গোত্রের সাথে আরেক গোত্রের যুদ্ধ বিবাদ লেগেই থাকত। দেখা গেছে শুধু উটের পানি খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে তারা ১০০ বছর অবধি খুনাখুনি চালিয়ে গেছে। রাসূল (সাঃ) যে কুরাইশ বংশে জন্মেছিলেন তারা ছিল আরবের সবথেকে ধনী এবং অভিজাত বংশ।


 কুরাইশরা আবার দুইধারায় বিভক্ত ছিল বনু হাশিম এবং বনু উমাইয়া। বনু হাশিমরা ছিল মক্কার নেতা এবং এই রক্তের ধারায় শেষ নবীর জন্ম। এরাই ছিল কাবার দেখভালের দায়িত্বে। এবং সন্দেহাতীতভাবেই এই ধারাতে কেউ মুর্তি পুজা করতনা। করাটাই অসম্ভব।

কারন রক্তের শুদ্ধতা স্বয়ং বিশ্ব জাহানের মালিক বজায় রেখেছেন যাতে সকল নবীদের শিরোমনী এই ধারাতে জন্মলাভ করে। যদিও কালক্রমে মক্কার অধীবাসীরা কাবার ভিতর মুর্তি পুজা শুরু করেছিল। এবং দিনের বেলায় পুরুষরা উলঙ্গ হয়ে কাবা তাওয়াফ করত রাতের বেলায় মেয়েরা উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করত। এদিকে বনু উমাইয়াদের সাথে বনু হাশিমের রেষারেষী ঝগড়া খুনোখুনি লেগেই ছিল। তারা কুরাইশ হলেও তাঁদের ধারা মুর্তি পুজারী এবং পেগান ছিল। এরা কাবার দখল নিতে চাইত কিন্তু তাদের নীচুতা আর নিকৃষ্টতা ছিল ভয়াবহ। এরাও BAAL পূজা করত। BAAL কে তারা বলত হুবাল। এই হুবালের মুর্তি ছিল সবথেকে বড়। এবং আদি ব্যাবিলনের বাকি দেব দেবীর পূজাও তারা করত তাদের ভিতর ছিল Moon God, মিশরের আমুন রা এবং অন্যান্য।


যাহোক শেষ নবী যখন আবার বনু হাশিম গোত্রে জন্মলাভ করল তখন এদের মাথায় ঠাডা পড়ার মত হলো। কারন এদের নেতা ছিল কুখ্যাত আবু সুফিয়ান এবং সেও ছিল বিরাট প্রভাবশালী এবং ধনী এবং মক্কার মুর্তি ব্যাবসা এবং রেড লাইট এরিয়া ছিল তাঁর।

তাঁর বউ কুখ্যাত হিন্দা ছিল বেশ্যাদের সর্দার। যখন নবী (সাঃ) ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত পেলেন এবং প্রচার করতে লাগলেন তখন এদের বিজনেস এর উপর হুমকি হয়ে দাঁড়াল সেটা। আবু সুফিয়ান মক্কার শুধু নয় আরবের সব পেগানদের নেতা ছিল এবং সবাইকে একজোট করে মোট ২৭ টি যুদ্ধ পরিচালনা করেছিল শেষ নবীর বিরুদ্ধে এবং তাঁকে মক্কা থেকে বিতাড়িত করেছিল আরো মুসলিমদের সাথে। 


মুসলিমরা আবিসিনিয়ায় এবং মদীনায় পালিয়েও রক্ষা পায়নি তাঁর হাত থেকে। সেখানে গিয়েও সে আক্রমন করেছে, তাও শেষ রক্ষা করতে পারেনি।

মুসলিমদের মক্কা বিজয়ের পরে সে কোন উপায় না দেখে ইসলাম গ্রহন করেছিল কিন্তু তার পরবর্তী কার্যকলাপে দেখা যায় যে সেও আসলে খাজারিয়ানদের মতই উপরে উপরে মুসলিম হয়েছিল যে ভাবে খাজাররা ইহুদি হয়েছিল। এ ইতিহাস অনেক লম্বা তাই আর এগোলাম না। এটুকু বলতেই হতো তাই বললাম এখন। পরে আবার এসে এখান থেকে শুরু করা যাবে।


যাইহোক ১ম পর্বে বলেছিলাম ইসা (আঃ) সুদ নিষেধ করেছিল। বলে গিয়েছিল শেষ নবীর আসার কথা। তো যখন মদীনা রাষ্ট্র যখন তৈরী হলো তখন তিনি সেই বিকল্প কারেন্সি বা মুদ্রা চালু করলেন। সেটাকে বলা হয় সুন্নাহকারেন্সি যা ছিল সোনা, রুপা। এছাড়াও বিনিময় হিসেবে ফসলের ব্যবহার চালু ছিল আগে থেকেই সেটা বহাল থাকল, যেমন খেজুর, লবন, যব এরকম অনেক কিছু। এখন রথচাল্ডের কাগজের নোট আবিস্কারের আগ অবধি এই কারেন্সি সারা বিশ্বে চালু ছিল।

কাগজের নোটের সাথে এর পার্থক্য কি সেটা দেখাচ্ছি এখন। ধরুন আপনার কাছে সোনা আছে এখন আপনি সোনা পুড়িয়ে ফেলেন বা গলিয়ে ফেলেন সেটা কিন্তু সোনাই থাকবে। কারন এই কারেন্সির মূল্য নিহিত আছে সোনার ভিতরে, বাইরে নয়। এবং যার কাছে এটা আছে সেই এই সম্পদের মালিক বা সোনার মূল্যের মালিক।


কিন্তু কাগজের নোট পুড়িয়ে ফেলেন আপনি ছাই ছাড়া কিছু পাবেন না। কারন কাগজের নোটের মূল্য নোটের ভিতরে নেই , আছে বাইরে এবং এর মালিকও আপনি নন মালিক হলো যে ব্যাংক সেই নোট ইস্যু করেছে সেই ব্যাংক। এবং একারনে দেখবেন নোটের উপর লেখা থাকে “চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে।”


তার মানে হলো, আপনি শুধু বাহক কিন্তু মালিক নন। আপনি ভাবছেন এটা আর এমন কি বড় বিষয়। এখানে যে মার প্যাচ আছে তা অনেক বাঘা বাঘা মানুষই বুঝতে অক্ষম। 

ধরুন ৭০ সালে আপনি ৭ হাজার টাকার একভরি সোনা সিন্দুকে ঢুকিয়েছেন এবং একই পরিমান টাকাও আপনি সিন্দুকে ঢুকিয়েছেন এবং ২০২০ সালে সিন্দুক খুলে দেখবেন সোনার দাম হয়ে গেছে ৭০ হাজার টাকা আর আপনার ওই ৭ হাজার টাকা তাই থাকবে কিংবা বাতিল হয়ে গেছে এর ভিতরেই।


ম্যাজিকের মুল বিষয়টাই হলো ধোকা। যেটা দেখানো হবে বা আপনার দৃষ্টি আকর্ষন করবে সেটা আপনাকে বিভ্রম ঘটানোর জন্য কিন্তু আপনার দৃষ্টি যখন এখানে নিবদ্ধ তখন তারা করবে আরেকটা তারা যেটা চায়। কৌশলে তারা যেটা করেছে কিংবা এখনো করে তা হলো বলে যে সোনার মূল্যমান অনুযায়ী তারা কাগজের মুদ্রা ছাপায়। কিন্তু এটাও ভাওতাবাজী।

চিন্তা করে দেখেন একটি ডলারের নোট ছাপাতে তারা তাঁদের তুচ্ছ কাগজ আর কালি ছাড়া কিছুই খরচ করেনা। কিন্তু সেটা সে আপনাকে দিচ্ছে সোনার মত মহামূল্যবান ধাতুর বিনিময়ে বিকল্প হিসেবে অথচ কাগজের কোন দামই নেই, মূল্য তারা রেখেছে নিজের কাছে আবার আপনি সেই টাকার মালিকও নন। আপনারা ভাবেন জিনিসের দাম বাড়ে কিন্তু ঘটে উল্টোটা।

টাকার মূল্য আসলে কমে। এই কারনে ১০ টাকায় আগে যে জিনিস কেনা যেত সেটা তখন কিনতে লাগে ২০ টাকা। এবং এভাবে টাকার মূল্য যত কমতে থাকে জিনিসের দাম তত বাড়তে থাকে। এটা একটা প্রকাশ্য চুরি কিন্তু সেটাই তারা করে যাচ্ছে এতকাল। তারা আসলে এভাবে বাজার থেকে ধাতু আহরন করছে যেটা আমি ৩য় পর্বে বলেছি। 

আর সুদের প্রভাবে এটা বাড়তেই থাকবে এবং বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌছুবে যেখানে যারা পিরামিডের উপরে বসে আছে তারা ধনী থেকে আরো ধনী হবে আর গরীব আরো গরীব হবে। সুদ সমগ্র সমাজের উপর কি প্রভাব ফেলে তার একটা উদাহারন দিচ্ছি। ধরেন আপনি একটা বাড়ী কিনলেন ১০০ টাকা লোন করে ১০ টাকা সুদে। আপনি ফেরত দিলেন ১১০ টাকা। 

এবার আপনি যখন ওই বাড়ী বিক্রি করবেন ততদিনে টাকার মূল্য আরো কমে গেছে। আপনি ১০০ টাকা দামের আসল বাড়ী সুদসহ এবং কিছু লাভসহ ১২০ টাকায় বিক্রী করবেন। যে কিনল সে আবার ১২০ টাকা লোন করে কিনল ১০ টাকা সুদে এবার আবার যদি হাত বদল হয় তাহলোে ১০০ টাকার বাড়ীর দাম হয়ে যাবে ১৪০ বা আরো বেশী। এভাবে যতবার হাতবদল হবে ততবার দাম বাড়বে। এবং টাকার মূল্যমান কমবে। এটা শুধু একটা সাইড বললাম। কিন্তু আরো আছে। 


যে কোন ব্যাংক যখন তখন দেউলিয়া ঘোষনা করতে পারে। এবং এতে আপনার সমুদয় সঞ্চয় লোপাট হয়ে যাবে। কিছু করার থাকবেনা। এরকমই তারা করেছে বহুদেশে বহুবার। শেষবার আমেরিকাতেই করেছে ২০০৮ সালে। তারপর থেকে জোড়াতালি দিয়ে চলছে। কারন এটা একটি পঞ্জি স্কিম। এক সময় না এক সময় এটা এমনিতেই ধ্বসে পড়বেই এটার নিয়মেই। এটার আরো অনেক জটিল ব্যাখ্যা আছে সেটার দিকে না যাই। তবে এই ধ্বস হতেই হবে। এবং সেটাই ঘটতে যাচ্ছে আগামি কয়েক বছরের ভিতর।

ইকোনমিক ধ্বসের জন্য তারা করোনাকে দায়ী করবে নিজেদের দায় এড়াতে। হঠাৎ করেই ডলারের পতন ঘটবে। এবং প্রতিটা দেশ তার পুরো রিজার্ভ কারেন্সি যেটা আমেরিকার ফেডারেল ব্যাংকে জমা আছে সেটা হারাবে। ফেডারেল ব্যাংকে বলেও হয়ত কিছু থাকবেনা। 


কারন তার স্থানে নতুন ডিজিটাল কারেন্সি নিয়ে আসা হবে। এবং দেশগুলোকে উদ্ধার করার জন্য বিপুল পরিমান লোন দেয়া হবে নতুন শর্ত অনুযায়ী। ধরুন আপনি রিক্সা ভাড়া করবেন তাহলে আপনার মোবাইল থেকে রিক্সাওয়ালার মোবাইল একাউন্টে টাকা সেন্ড করতে হবে নিজের একাউন্ট থেকে। তবে অবশ্যই আপনাকে কিছু শর্ত পালন করা লাগবে। 


যেহেতু ক্যাশলেস সোসাইটি হবে সেহেতু আপনার সেটা না মেনে উপায়ও থাকবেনা। প্রতিটা দেশ এবং তাদের জনগন বাধ্য থাকবে সেই শর্ত পুরন করতে না হলে ভিক্ষাও জুটবে না কপালে। তবে সেগুলো কি কি হবে সেটা না বলতে পারলেও কি ধরনের হবে সেটা বলে দিতে পারব। এটা করা হচ্ছে যাতে absolute control করা যায়। RFID chip ঢোকানো হবে সব মানুষের শরীরে। সে তখন একটি নাম্বারে পরিনত হবে। সোস্যাইল সিকিউরিটি নাম্বার টাইপ। 


এই ডিভাইসে তার সমস্ত ডাটা থাকবে। ইতিমধ্যেই আমেরিকা এবং সুইডেনে পরীক্ষামুলকভাবে কিছু কোম্পানী তাঁদের এমপ্লয়ীদের শরীরে এই চিপ ঢুকিয়েছে। সুইডেনের আমার এক বন্ধু বলছিল। এটা কিভাবে কাজ করে। ধরেন আপনি আছেন টিএসসিতে এখন আপনি যাবেন মহাখালী কিন্তু আপনি রেসটিক্টেড এরিয়াতে আছেন মানে মহাখালী আপনার যাওয়া নিষেধ। তবুও যদি যান তাহলোে আপনার দেহে থাকা ডিভাইস সেটা জানিয়ে দেবে মেইন ডাটা সেন্টারে যেটা আবার নিয়ন্ত্রন করে আবার Artificial intelligence। 

সে ততক্ষনাত আপনার ডিভাইস লক করে দেবে। আপনি দেখা যাবে কয়েক দিন থেকে কয়েক মাসের মত আপনার ব্যাংক একাউন্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কিছুই ব্যবহার করতে পারবেন না। আর আপনাকে শায়েস্তা তারা আপনার ডিভাইস দিয়েও করতে পারবে চাইলে। সেটা আর বলছিনা।

এবার আপনি চিন্তা করে দেখেন স্বাধীন থেকে হয়ে যাবেন Farm Animal। এটাকেই New world order বা one world order বলা হচ্ছে। 


একটাই কারেন্সি একটাই world government। আপনি হয়ত ভাবছেন এরকম কিছু করতে পারবে না। আপনি কিন্তু লকডাউন ঠেকাতে পারেন নি। সরকার যা বলছে তাই করছেন। তখনো তাই করবেন। এর বিরোধীতা করে কোন সরকারই টিকতে পারবে না। সরকারগুলো অচিরেই বিগ কর্পোরেশনের হাতের মুঠোয় চলে যাবে। গুটি কয়েক জায়ান্ট কোম্পানীই শুধু ব্যাবসা করবে বিশ্বময়। 

আপনারা গুগল করলেই জেনে যাবেন করোনা প্যানডেমিকের ভিতর জায়ান্ট কোম্পানীগুলো কি পরিমান মুনাফা করেছে বা সম্পদ নীচের থেকে লুটে নিয়েছে। অথচ ছোট ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কোনমতে টিকে আছে। ভারতের দিকে তাকিয়ে দেখেন কিভাবে আদানি আর আম্বানী ভারতীয় সরকারী সেবামুলক প্রতিষ্ঠানগুলো কিনে নিচ্ছে।


 এবার কৃষির উপর হাত দিয়েছে। কৃষি আইনটা পাশ হয়ে গেলেই আগামী ৩-৫ বছর পরেই কৃষকরা সেই আগের জমিদারী সিস্টেম অথবা নীল চাষের সিস্টেমে ঢুকে যেতে বাধ্য হবে।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথির মুহাম্মাদের সভাপতিত্বে ২০০৮ সালে মালয়েশিয়াতে একটি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয় এবং আজকে যা হচ্ছে সে বিষয়ে তখনই আলোচনা করা হয়। খেয়াল করে দেখুন আজ থেকে ১২ বছর আগেই এ বিষয়ে কিছু মানুষ জানত যা আপনারা এখনো জানেন না। 


বিশ্বের নামি দামী ইসলামী অর্থনীতিবিদ এবং গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌছেছিলেন যে একটি সুন্নাহকারেন্সি সিস্টেম বা Goldback system bank প্রতিস্থাপনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যাতে মুসলিমরা এই ফাঁদ থেকে উদ্ধার পেতে পারে। সেই সম্মেলনের কথা কোন মিডিয়া কাভারেজ দেয়নি তখন। 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন