জাবের বিন আব্দুল্লাহ্ (রাদিঃ) হতে বর্ণিত হয়েছেঃ
তিনি বলেছেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ইবলীশের আরশ হচ্ছে সমূদ্রের উপরে, সে তার দলবলকে (অনুচরদেরকে) প্রতিদিন প্রেরণ করে মানুষকে ফেতনায় ফেলার জন্য। আর তার (ইবলীশের) নিকট তাদের (সহচরদের) মধ্য হতে সেই বেশী বড় মর্যাদার অধিকারী তাদের যে লোকদেরকে বেশী বড় ফেতনায় ফেলতে পারে।
[মুসনাদে আহমাদঃ ১৪৮৫৬, ১৪৮১৪; সহিহ মুসলিমঃ ৭২৮৩-৭২৮৫]
অন্য বর্ণনায়ঃ আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আমর বিন্ ’আস (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
অর্থাৎ সাগরের মধ্যে অনেকগুলো শয়তানকে বেঁধে রাখা হয়েছে। যাদেরকে শক্ত করে বেঁধে রেখেছেন সুলাইমান (আ.)। অচিরেই তারা সাগর থেকে বের হয়ে মানুষকে কোরআন পড়ে শুনাবে অথচ তা কোরআন নয়।” (মুসলিম,ভূমিকা,হাদীস ৭ এর অধীন)
আটলান্টিক মহাসাগর বা অতলান্ত মহাসাগর (ইংরেজি: Atlantic Ocean) পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর। এর আয়তন ১০৬.৪ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার (৪১.১ মিলিয়ন বর্গমাইল); এটি পৃথিবীপৃষ্ঠের প্রায় এক পঞ্চমাংশ এলাকা জুড়ে অবস্থিত। আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ এবং পূর্বে ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশ অবস্থিত। উত্তরে উত্তর মহাসাগর এবং দক্ষিণে দক্ষিণ মহাসাগর। এবার বারমুডার অবস্থান বিশ্লেষণ করুন। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল অঞ্চলটা আটলান্টিক মহাসাগরের কিউবার আগে পোর্টিরেকুর সন্নিকটে অবস্থিত। অর্থাৎ বারমুডা থেকে আমেরিকার দূরত্ব বেশি নয়। আর আমেরিকাই এখন বিশ্বের শীর্ষ সাম্রাজ্যবাদী বরফাচ্ছন্ন রাষ্ট্র। বারমুডা অঞ্চলটা সম্পর্কে নিত্যদিন অনেক বিরল ও বিস্ময়কর কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু ব্যাপক অনুসন্ধান সত্ত্বেও আজ অবধি কোন অনুসন্ধানের ফলাফল পুরোপুরি জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়নি। এতেই অঞ্চলটার রহস্যময়তার প্রমান পাওয়া যায়। এ পর্যন্ত এখানে অসংখ্য জাহাজ অদৃশ্য হয়ে গেছে। হারিয়ে যাওয়া জাহাজের অনুসন্ধানে বিমান পাঠানো হলে উক্ত অঞ্চলে প্রবেশ করা মাত্র সেই বিমান ও অদৃশ্য হয়ে গেছে। অদৃশ্য হয়ে যাওয়া প্রতিটা জাহাজের কাহিনী শুনবার মতো বিষয় ।
সর্বপ্রথম যে ঘটনাটা বহিঃজগতের সামনে এসেছিল, সেটা ছিল ১৮৭৪ সালে অদৃশ্য হওয়া জাহাজ। তাতে অবস্থানরত তিনশোরও বেশী লোক ক্যাপ্টেন সহ লাপাত্তা হয়ে গিয়েছিল এবং জাহাজটা ক্যাপ্টেন ছাড়াই নিরাপদ অবস্থায় কূলে পাওয়া গিয়েছিল। একবার জাহাজের সব কজন যাত্রীকে মাতাল অবস্থায় কূলে পাওয়া গিয়েছিল এবং তাদের জাহাজ উক্ত অঞ্চলে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। যাত্রীদের ভাষ্যমতে জাহাজটা যখন উক্ত অঞ্চলে প্রবেশ করে, তখন মস্তিষ্কে একটা ধাক্কার মতো লাগে। তারপর কীভাবে কূলে পৌছায় তার কিছুই তারা জানে না।
ইবলিস, দাজ্জালের অবস্থান ও বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য
অনুরূপভাবে অন্য বহু উড়োজাহাজের ক্ষেত্রেও অনেক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটা ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু কোন কমিটিরই রিপোর্ট জনসম্মুখে আসতে দেয়া হয়নি। মজার ব্যাপার হচ্ছে মুসলমানরা যেমন এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন, কেননা এর সত্যতা ও মহানবী (সাঃ) এর কিছু ভবিষ্যৎ বাণীর সাথে মিল রয়েছে। কিন্তু ইহু-দী ও ইসলামে অবিশ্বাসকারীরা বরং বিশ্বের দৃষ্টিতে প্রকৃত সত্য থেকে সরিয়ে রাখার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক প্রতারকরা গল্পকারদের মাধ্যমে এমন কাল্পনিক উপন্যাস প্রচার করছে।
ইউটিউবে সার্চ দিলেই, মুসলিম ও তা-গুতি গোষ্ঠী দুই পক্ষেরই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল নিয়ে নিজ নিজ মতামত জানা যায়। এবং স্পষ্টভাবেই এবং স্বাভাবিক ভাবেই, মুসলিমদের মতামত, ব্যাখ্যাগুলো, বেশী শক্তিশালী। এবং তা-গুতি গোষ্ঠী বিষয়টাকে যথারীতি ধামাচাপা এবং লুকিয়ে রেখে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এই অঞ্চলের ব্যাপারে একটি কথা প্রচলিত আছে যে, এলাকাটার বেশিরভাগ জায়গার পানির মধ্য থেকে আগুন নির্গত হয় এবং পুনরায় আগুন ভিতরে ঢুকতে দেখা যায়।
ইবলিশি শক্তিগুলোর গোপন তৎপরতা ও আন্তর্জাতিক ধোঁকাবাজদের যদি পরিসংখ্যান নেয়া হয়, তাহলে যথেষ্ট তথ্য প্রমান পাওয়া যায় যে, উক্ত অঞ্চল আন্তর্জাতিক কুফরিশক্তির গোপন ঠিকানা। এখানে অবস্থান করেই তারা তাদের গোপন তৎপরতা পরিচালনা করছে।
কোন কোন হাদিসে আছে, “ইবলিস সমুদ্রে তার সিংহাসন পাতে” । এতেও প্রমাণিত হচ্ছে, ইবলিসের সিংহাসন বা কেন্দ্র এমন একটা অঞ্চলে হবে, যেখানে কুফরির রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত থাকবে। তাছাড়া কুরআন-হাদিস দ্বারা এ বিষয়টাও প্রমানিত যে, ইবলিস তার মানুষ বন্ধুদের পরামর্শ দিয়ে থাকে। এমনকি যখন প্রয়োজন হয়, তখন মানুষের আকৃতিতে এসে তাদের সাথে যুক্ত হয়ে যায়।
ইবলিসের কেন্দ্র সমুদ্রের কোথাও এমন এক অঞ্চলের কাছাকাছি হওয়া দরকার, যেখান থেকে বর্তমান সকল ইবলিসি পরিকল্পনা প্রস্তুত হচ্ছে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল আমেরিকার কাছাকাছি একটা দ্বীপ এবং বর্তমানে আমেরিকা বিশ্ব কুফরি-শক্তির কেন্দ্র। তাই হতে পারে, বারমুডা অঞ্চলটা ইবলিসের একটা কেন্দ্র এবং এখান থেকেই সে তার জিন ও মানুষ শয়তানদের সে তার পথনির্দেশনা দেয়, তার তাই বিশ্ববাসী থেকে অঞ্চল টাকে দূরে রাখার জন্যই এলাকাটাকে আতঙ্কের প্রতিমূর্তি বানিয়ে রাখা হয়েছে। যে তথ্য প্রমান পাওয়া গেছে, তাতে স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক শক্তির ইচ্ছা ব্যতিত তা বাইরে আসতে পারবে না।
কি বুঝলেন?হালকা কিছু কি বুঝতে পেরেছেন? রহস্য মনে হচ্ছে তাই না? পুরো রহস্যময়!
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর অবস্থান
বারমুডা আটলান্টিক মহাসাগরের সর্বমোট ৩০০ টি দ্বীপ নিয়ে বিস্তৃত এলাকার নাম। যার মধ্যে বেশির ভাগই অনাবাদী। শুধুমাত্র ২০ টি দ্বীপের মধ্যে মানুষের অবস্থান পাওয়া যায়। আর যে এলাকাকে আশংকাজনক মনে করা হয়, তাকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বলা হয়। এ এংগেলের আয়তন চারপাশ থেকে ১১,৪০,০০০ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে বারমুডার বিভিন্ন দ্বীপ, দক্ষিন-পূর্বে পোরটোরিকো এবং দক্ষিন-পশ্চিমে মার্কিন গনতান্ত্রিক সরকার শাসিত প্রসিদ্ধ ফ্লোরিডা শহর। অর্থাৎ এই এংগেলের মুল অবস্থান ফ্লোরিডায়। হ্যাঁ …..ফ্লোরিডা। (ফ্লোরিডার অর্থ হচ্ছে – ওই খোদার শহর যার অপেক্ষা করা হচ্ছে বা ওই খোদা যার অপেক্ষা করাচ্ছে)।
প্রায় চারশত বছর পুর্ব থেকে ওই বিরান এলাকায় কোন মানুষ বসবাস করেনি। এমনকি জাহাজের ক্যাপ্টেন পর্যন্ত ভয়ে ওই এলাকা থেকে দুরে থাকে। ওখানে একটি কথা খুবই প্রসিদ্ধ যে, “ওখানকার পানির গভীরে ভয়ংকর সব শয়তানি রহস্য লুকায়িত রয়েছে “। এমনকি ওখানকার আকাশপথের ভ্রমনকারীরা এয়ারহোষ্টেসকে পর্যন্ত সর্বপ্রথম জিজ্ঞেস করে- আমাদের বিমান কি বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের উপর দিয়ে যাবে?? কোম্পানির জবাব যদিও নেতিবাচক হলেও বাস্তব তার বিপরীত।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল কি আসলেই ট্রায়াঙ্গলের (ত্রিভুজ) আকৃতি?
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল পুরো এরিয়াটাই সমুদ্রে। যা আটলান্টিক সাগরে অবস্থিত। সুতরাং চিন্তার বিষয়- চারিদিকে পানি আর পানি, এখানে এংগেল বা ত্রিভুজের আকৃতি কি করে সম্ভব??!! সুতরাং প্রথমেই জানতে হবে যে, এংগেল বাস্তব নয়; বরং এটি একটি বিশেষ এলাকার নাম যেখানে অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম হয়। ওই এলাকাকে ট্রায়াঙ্গল হিসেবে সাধারণ নাম দেওয়া হয়েছে। এ নামের ব্যাপারে প্রসিদ্ধ আছে যে, ১৯৪৫ সালে ওই এলাকায় একসাথে কয়েকটি বিমান গায়েব হওয়ার পর এক প্রেস কনফারেন্সে সর্বপ্রথম এই নাম ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটা খুবই রহস্যপূর্ণ যে, নামটি কেন ট্রায়াঙ্গল রাখা হল।
ওই দুর্ঘটনার পূর্বেও ওখানে বহু ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু তখন ওই এলাকাকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের পরিবর্তে শয়তানের দ্বীপ হিসেবে চেনা হত। “ক্রিস্টোফার কলম্বাস(১৪৫১-১৫০৬)” সামুদ্রিক ভ্রমণের সময় যখন ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল, তখন সেও ওখানে কিছু অচীন ও আশ্চর্য বিষয় প্রত্যক্ষ করেছিল। যেমনঃ আগুনের গোলা সমুদ্রের ভিতরে প্রবেশ করা, ওই সীমানায় প্রবেশ করলেই কোন প্রকার যুক্তিসঙ্গত কারন ছাড়াই কম্পাস খারাপ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
কলম্বাসের আমেরিকা ভ্রমণের পাঁচ শতাব্দী পার হয়ে গেল। কিন্তু এ প্রশ্ন আজও বাকী রয়ে গেছে যে- ওখানকার পানির গভীরে বা পানির উপরিভাগে-আকাশপথে কি এমন রহস্যময় বিষয় গোপন রয়েছে, যার ব্যাখ্যা বর্তমান অত্যাধুনিক স্যাটেলাইটের যুগেও খুজে বের করা সম্ভব হচ্ছেনা? ১৮৫৪ সালের পূর্বে আরব বনিকেরাও ওই এলাকা দিয়ে আসা-যাওয়া করত, কিন্তু তাদের জাহাজ তো কখনো দুর্ঘটনা বা কোন অস্বাভাবিক রহস্যের কবলে পড়েনি। অথচ এরকম ঘটনা ওখানে ১৮৫৪ সালের পূর্বেও বহুবার ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেছিলেন,” আমার কাছে সরাসরি খোদার কাছ থেকে নির্দেশনা আসে।” (নাউজুবিল্লাহ)
ইরাক আক্রমণের পূর্বে বুশ বলেছিলেন-
“এই যুদ্ধের পর তাদের প্রতিশ্রুত মাসী""হ (দা/জ্জাল) আবির্ভূত হবে। এরপর বুশ ইস"রা/ইল সফর করেন। মস্কো টাইমস এর রিপোর্ট অনুযায়ী এই সফরের সময় এক বৈঠকে (যেখানে ফিলিস্তিনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ আব্বাস ও হা/মা"স নেতারাও উপস্থিত ছিলেন) বলেছেন -” বর্তমান পদক্ষেপে আমি সরাসরি খোদা থেকে শক্তি অর্জন করেছি। (নাউজুবিল্লাহ)
খোদা আমাকে আদেশ করেছেন আল কায়েদার উপর আঘাত হানো। সেজন্যই আমি তার উপর আঘাত হেনেছি। তারপর তিনি আদেশ করেছেন সা"দ্দা,মের উপর আক্রমণ কর। ফলে আমি সাদ্দামের উপর আক্রমণ করেছি। এখন আমার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা হল আমি মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যার সমাধান করবো। তোমরা (ইহু/দীরা) যদি আমাকে সাহায্য কর আমি সম্মুখে অগ্রসর হব। অন্যথায় আমি আসন্ন নির্বাচনের প্রতি মনোযোগী হতে চাই।”
কি বুঝলেন? বুশের এই বক্তব্য প্রতিজন সেই মুসলমানদের চোখগুলো খুলে দেয়ার জন্য যথেষ্ট, যারা বিশ্বময় চলমান জিহা/দগু"লোকে বিভিন্ন অভিধায় ভূষিত করে বদনাম করেন কিংবা সন্ত্রা"সবা//দ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ‘ফ্রি থট টুডে’ এর সম্পাদকের মতে-“প্রেসিডেন্ট বুশের মত এত ধর্মীয় প্রেসিডেন্ট আমি আগে কখনো দেখি নি। তিনি একটি ধর্মীয় মিশন নিয়ে কাজ করছেন। আপনি তার ধর্মকে তার সমরনীতি থেকে আলাদা করতে পারবেন না।” বুশের এই ‘ধর্মীয় মিশন’ কী হতে পারে আপনাদের বুঝার কথা। (ইলু"মি/নাতি ছাড়া আর কিছুই না , অন্যকোনো দিন ইলু/মিনা"তি নিয়ে লিখবো)
বুশ ইলুমিনাতি-ফ্রিম্যাসন্স সোসাইটির সক্রিয় সদস্য। বুশ,“ফ্রিম্যাসন মিশন’ নিয়ে কাজ করছেন। বলা বাহুল্য, খ্রিস্টানরা হযরত ঈসা (আ:) এর অপেক্ষা করছে আর ইহুদীরা ঈসার পরিবর্তে মাসীহ তথা দাজ্জালের অপেক্ষা করছে। সেজন্য বুশও ইহুদীদের হক আদায় করণার্থে ‘আমি ঈসায়ী মিশনের উপর প্রতিষ্ঠিত’ বলার পরিবর্তে বলছেন ‘আমি মাসীহ এর মিশনের উপর প্রতিষ্ঠিত’। যার ফলে খ্রিস্টানরাও তার ধোকায় পড়ে ইহুদীদের সাহায্যকারী হয়ে গেছে।
এই আলোচনার আলোকে আমরা বলতে পারি, তার এই খোদা হলেন, ইবলিস। ইবলিস ই তাকে সরাসরি নির্দেশনা দিত। কিংবা দাজ্জাল কোন একটা জায়গা থেকে সরাসরি বুশ ও তার মতো কাফের নেতাদের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে।
দাজ্জালের কথা এজন্য বলা হল কারন, খ্রিষ্টানদের একটা উপদলের দৃষ্টিভঙ্গী হলো, জনসম্মুখে আত্মপ্রকাশের আগে দাজ্জাল নিজের জন্য পরিবেশ তৈরি করবে এবং বিরুদ্ধবাদী শক্তিগুলোকে তার এজেন্টদের মাধ্যমে ধ্বংস করাবে।
হাদিসে বলা হয়েছে, “কুস্তন্তনিয়ার (ইস্তাম্বুল) অধিবাসীরা তাদের সাহায্য করবে। নিকট অতীতে তুরস্ককে এমন এক শ্রেণীর মানুষ শাসন করছে, যারা মুসলমানদের তুলনায় কাফের প্রতি বেশী আন্তরিক। আর এমনও হতে পারে যে, অদূর ভবিষ্যৎতে এই অঞ্চলটি পুরোপুরি কাফেরদের কব্জায় চলে যাবে।”
শয়তানি সমুদ্রের অবস্থান
এ এলাকা Pacific Ocean তথা প্রশান্ত মহাসাগর এরিয়ায় জাপান এবং ফিলিপাইনের সীমান্তে অবস্থিত। এ ট্রায়াঙ্গল জাপানের উপকূলীয় শহর (Yokohama) “ইয়োকোহামা” থেকে ফিলিপাইনের (Guam) “গুয়াম” দ্বীপ পর্যন্ত এবং “গুয়াম” থেকে আবার “মারিয়ানা” দ্বীপ পর্যন্ত এবং “মারিয়ানা” থেকে “ইয়োকোহামা” পর্যন্ত বিস্তৃত সামুদ্রিক এলাকা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকা “মারিয়ানা” দ্বীপ আয়ত্ব করে নিয়েছিল।
জাপানীরা এ এলাকাকে তাদের ভাষায় (Ma-na Umi) বলে, যার অর্থ “শয়তানের সমুদ্র”। বারমুডা এবং শয়তানি ট্রায়াঙ্গলের ব্যাপারে গবেষণাকারীদের মধ্যে “চার্লস ব্রালিজ” হচ্ছেন অন্যতম। তিনি “দি ড্রাগন ট্রায়াঙ্গল” নামক গ্রন্থে লিখেন-“১৯৫২ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত ঐ এলাকায় জাপান সরকারের বড় বড় পাচঁটি সৈন্যবাহী জাহাজ গায়েব হয়েছে। সেনাবাহিনী গুম হয়েছে ৭০০ -এরও উপরে।
এ ঘটনার রহস্য যাচাই করার জন্য তখন জাপান সরকার একটি অত্যাধুনিক জাহাজে করে একশরও বেশি গবেষকদের এক তদন্ত টিম প্রেরণ করে। কিন্তু শয়তানি সমুদ্রের রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে উনারাই রহস্যের চাদরে ঢাকা পড়ে গেছেন। এর পর থেকে জাপান সরকার ঐ এলাকাকে ভয়ানক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে দেয়। “
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সামুদ্রিক যুদ্ধে জাপানকে তার পাচঁটি জঙ্গি বিমান ওখানে গায়েব হওয়ার খবর শুনতে হয়েছে। এছাড়াও ৩৪০ টি জ/ঙ্গি বিমান, ১০ টি যুদ্ধজাহাজ, ১০ টি নৌযান, ৯ টি স্পীডবোট এবং আরো ৪০০ টি জ/ঙ্গি ফাইটার ঐ এলাকায় ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু ঐ সকল ঘটনা সম্পর্কে আপনি কি বলবেন, যেগুলো ঐ এলাকায় কোন দুর্ঘটনা ছাড়াই অদৃশ্য হয়েছে, অথচ সেখানে না কোন বৃটেনের যুদ্ধ জাহাজ পৌছেছিল না কোন মার্কিন সেনাবাহিনী।
গবেষকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এগুলো কোন শত্রুবাহিনীর হাতে ধ্বংস হয়নি। কেননা এক গবেষকের বক্তব্য-“
এ কথা অত্যন্ত সন্দেহপূর্ণ যে, এ জাহাজগুলি শত্রুদের হাতে ধ্বংস হয়েছে। কেননা জাহাজগুলি সামুদ্রিক সীমানার ভিতরেই অবস্থান করছিল এবং যুদ্ধের প্রারম্ভিক পর্যায়ে ওখানে কোন মার্কিন বা ব্রিটিশ জাহাজ পৌছেছিল না।” তাহলে কি আমরা বলতে পারিনা যে, এ এলাকায় অন্য কোন গোপন শক্তি বিদ্যমান ছিল,যারা ঐ সময় আমেরিকা এবং তার সমর্থনকারীদের বিজয়ী দেখতে চেয়েছিল।
বারমুডা এবং শয়তানি ট্রায়াঙ্গল ব্যাপারে এতগুলি সাদৃশ্যপূর্ণ ঘটনা ঘটার পরও কি আমরা এ কথা মানতে পারি যে, এগুলো শুধুই ঘটনাক্রমে হয়েছে???!! কখনো নয়!! প্রসিদ্ধ গবেষক “চার্লস ব্রালিজ” বলেন-“The mysterious disappearances in the Bermuda and Dragon Triangles may not be coincidental; since both areas are so similar, the same phenomenon might be behind the lost ships and planes”
অর্থাৎ বারমুডা এবং শয়তানি সমুদ্রে রহস্যময় অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার ঘটনাবলী ঘটনাক্রমে বা এমনিতেই হতে পারেনা। কারণ, উভয় এলাকা সাদৃশ্যপূর্ণ ঘটনার জন্ম দিয়েছে। জাহাজ এবং বিমান গায়েব করার ক্ষেত্রে উভয় এলাকা একই পথ বেছে নিয়েছে। (দি ড্রাগন ট্রায়াঙ্গল- চার্লস ব্রালিজ)
আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে? আমি তো শুধু বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের কথাই বলছি. বাট এটার সাথে দাজ্জালের কি সম্পর্ক এবং ইসলাম এ বিষয়ে কি বলে?
আপনাদের বারমুডায় গায়েব হয়ে যাওয়া কিছু জাহাজ আর বিমানের গল্প জানাবো। তবে পড়া সময় শুধু রহস্যে বুঁদ না হয়ে একটু অনুসন্ধানী মন নিয়ে পড়বেন। কতটা গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বুঝতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে মনোযোগ দিতেই হবে।
যাত্রী গায়েব জাহাজ উপকূলে, ডুবে যাওয়া জাহাজ ফেরত
এটাও কি বিশ্বাসযোগ্য? যদি আপনাকে বলা হয়- একটি জাহাজ বারমুডার সমুদ্র সীমানায় দাঁড়ানো, কিন্তু যাত্রী এবং ক্যাপ্টেন গায়েব!! খানার টেবিলে এমনভাবে খানা গুছিয়ে রাখা; দেখলে মনে হবে- হাত ধোঁয়ার জন্য মনে হয় তারা উঠে গেছে। না আছে দূর্ঘটনার চিহ্ন, আর না কোন লুটপাটের চিহ্ন। নিরব সমুদ্রের মাঝে হঠাৎ খানা পিনা রেখে তারা কার মেহমান হয়ে গেছে?!! ঘটনাটি ঘটেছে “কেরল ডীরিং(Caroll Deering)” নামক জাহাজের সাথে। তীরে জাহাজের সম্মুখভাগ বালুতে গাড়া ছিল আর পেছনের অংশ পানিতে ছিল। খানার টেবিলে খানা রাখা ছিল।
চেয়ারগুলি কিছু পেছনের দিকে ঝুঁকে থাকা অবস্থায় ছিল। মনে হবে, যাত্রীরা কোন অলৌকিক কিছু দেখে আপন আপন চেয়ার ছেড়ে উঠে এসেছিল এবং পরে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা আর পারেনি। চেয়ার টেবিলে খানা আর ফলফ্রুট দেখে কোন হাঙ্গামা বা দুর্ঘটনার চিহ্ন বা নিদর্শন উপলব্ধি হয়না। জাহাজের অবস্থা দেখেও এ কথা মনে হয়না যে, এখানে লুটপাট বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আশ্চর্যের বিষয়- এতবড় জাহাজকে তীরে কে আনল?? আর যাত্রীরাই বা কিরূপ দুর্ঘটনার স্বীকার হল?? কেননা এত বড় জাহাজ এত অল্প পানিতে আসা অসম্ভব। জাহাজটি ছিল “জি জি ডেয়ারিং কোম্পানি অফ পোর্টলেন্ড” এর মালিকানায়।
হেরি কোনোভার( Herry Conover) প্রসিদ্ধ মার্কিন কোটিপতি, সুদক্ষ জঙ্গি পাইলট, সামুদ্রিক জাহাজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ক্যাপ্টেন ১৯৫৮ সালে তার সাথীদের নিয়ে বারমুডার অতল গহবরে গায়েব হয়েছে। কিন্তু এইবার শুধু যাত্রীরাই নিখোঁজ হয়েছে। কেননা পরবর্তীতে তাদের জাহাজ ফ্লোরিডার সী-বিচ থেকে ৮০ মাইল উত্তরে এক কিনারায় যাত্রীবিহীন অবস্থায় পাওয়া যায়।
এ ধরনের কোন সংবাদও কি আপনি এ পর্যন্ত শুনেছেন যে, কোন জাহাজ সম্পূর্নরূপে সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়েছে এবং কিছুদিন পর তা পূর্বাবস্থায় কোন কিছু নষ্ট হওয়া ছাড়াই উপরে এসে গেছে। একটি জাহাজ বারমুডার ট্রায়াঙ্গলের সীমানায় চলছিল। সমুদ্রের ঢেউ একে নিয়ে খেলছিল। কিন্তু তাতে কেউ ছিলনা। ভেতরে সম্পূর্ণ খালি ছিল। না ক্যাপ্টেন, না যাত্রী আর না কোন কর্মচারী। জাহাজের নাম “লাদাহামা”। এস. এযটেক নামক জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং কর্মচারীরা যে দৃশ্য অবলোকন করেছিল, তা নিম্নরূপ :
“সবকিছু ঠিকঠাক, সঠিক জায়গায় বিদ্যমান। না কেউ কিছু উঠিয়েছে, না ছিন্নভিন্ন করেছে। না আছে লুটমারের চিহ্ন, না কোন দুর্ঘটনার আলামত। এমনকি ক্যাপ্টেনের ব্যবহৃত কলম আর দূরবীন পর্যন্ত সঠিক জায়গায় ছিল।” এথেকেও অবিশ্বাস্য খবর হচ্ছে- সামুদ্রিক জাহাজ “রানী”র রেকর্ডে এটি ডুবে যাওয়া জাহাজের তালিকায় ছিল যাকে ইটালির রেক্স(Rex) নামক জাহাজের যাত্রী এবং কর্মচারীরা ডুবে যাওয়ার সময় প্রত্যক্ষ করেছিল।
চিন্তার বিষয়……কে এই গায়েবকারী?? গায়েব করার পর জাহাজ থেকে কোন মূল্যবান জিনিস আটক করেনা, কারো কাছে কোন দাবিও পেশ করেনা। বরং চিরদিনের জন্য নিজের কাছে নিয়ে যায়। এরপর যায়ই বা কোথায়?? এমন সব ঘটনা; যার কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যাও আজ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। বারমুডার সমুদ্রের অভ্যন্তরের সকল ঘটনাই কি আকস্মিক??! নাকি সুসংগঠিত কোন শক্তি নির্দিষ্ট কোন টার্গেট লক্ষ্য করে এসব ঘটনার জন্ম দিচ্ছে??!!!!
বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে নিরব। বরং তাদের চুপ করিয়ে দেয়া হয়েছে। গবেষণার সকল দরজা বন্ধ। সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। বরং মৃত্যুর হুমকি। তাহলে এসব কেন?? গবেষকদের কাছে একটি কথা স্পষ্ট যে, সামুদ্রিক ঝড়-তুফান বা স্বাভাবিক দুর্ঘটনার সাথে এগুলোর কোন সম্পর্ক নেই। এমনও কখনো হয়নি যে, জাহাজের সকল মুল্যবান সম্পদ আসবাবপত্র লুট করা হয়েছে। পাশাপশি গায়েবকৃত জাহাজ থেকে আশপাশের হেডকোয়ার্টারগুলিতেও কোন সাহায্যের বার্তা প্রেরণ করা হয়নি। তবে কখনো কখনো কিছু বার্তা পৌছেছিল, যা সম্পূর্ণ অস্পষ্ট ছিল।
এ সকল অস্পষ্ট বার্তার গবেষণা ও তদন্ত করে গবেষকরা একটি ফলাফলে ঠিকই উন্নিত হয়েছেন যে, এ ঘটনাগুলি খুবই দ্রুততার সাথে ঘটানো হয়েছে এবং ঘটনার সময় জাহাজের ক্যাপ্টেন ও যাত্রীদের উপর হঠাৎ ভয়ানক এক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
১৯২৪ সালে জাপানী মালবাহী জাহাজ “রিভোকোমারো(Rivoco Maro)” গায়েব হওয়ার পূর্বে উপকূল হেডকোয়ার্টারে এই বার্তা প্রেরণ করে-“আমাদের উপর এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে……। ভয়….ভয়…..। দ্রুত আমাদের সাহায্য কর।”
তবে ১৯৬৭ সালে গায়েব হওয়া ভ্রমণ জাহাজ “ভিচক্রাফট” থেকে সর্বশেষ যে বার্তা পৌছেছিল, তা জাহাজের মালিক নিজে(তখন সে জাহাজের মধ্যে ছিল) নিকটস্থ হেডকোয়ার্টারে নিম্নোক্ত বার্তা দিয়েছিলঃ-
“জাহাজ পানির নিচে কোন অজানা বস্তুর সাথে ধাক্কা খেয়েছে ….। পেরেশানীকর কোন কিছু সামনে আসেনি….। জাহাজে কোনরূপ সমস্যা হয়নি ….। তবে সবকিছু ঠিকঠাকরূপে কাজ করছেনা….।” এই বার্তা পাওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে বিশেষ সাহায্য টিম জাহাজের স্থানে পৌছেছিল। কিন্তু এই তিন মিনিটের মধ্যেই জাহাজ তার মালিক ও মালিকের বন্ধু (মার্কিন সিনেট জর্জ চার্চের পাদ্রী ফোর্চ লোডার ডেল) সহ যাত্রীদেরকে নিয়ে কোন অজানা স্থানে চলে গেছে। ঠিক পনের মিনিট পরেই আরো একটি টিম ওখানে পৌঁছে আশপাশের দুইশ কিঃমিঃ এলাকাজুড়ে তন্ন তন্ন করে খোঁজাখুঁজির পরও এর কোন হদিস তারা বের করতে সক্ষম হয়নি।
বারমুডার আকাশ কি বিমান শিকারস্থল
বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে বড় বড় জাহাজ গায়েব হয়ে যাওয়া কি কম রহস্যের বিষয়; কিন্তু আকাশে উড়ন্ত বিমানও যদি কোন অজানা ঠিকানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা শুরু করে পরে আর ফিরে না আসে। যুদ্ধ বিমান এবং যাত্রীবাহী বিমান উড়তে উড়তে হঠাৎ বারমুডার আকাশে গায়েব হয়ে যাওয়া। অথচ আকাশ সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও পরিস্কার!! তাহলে আপনি কি বলবেন! আকাশ কি এগুলো গিলে ফেলেছে?? নাকি বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের পানির অভ্যন্তরে বিদ্যমান কোন গোপন শক্তি তাকে ধরাশায়ী করেছে?? পরবর্তীতে না এর কোন পাত্তা পাওয়া যায়, না পাইলট এয়ারপোর্টে দ্রুত কোন বার্তা প্রেরনে সক্ষম হয়। কখনো কোন বার্তা পৌছালেও তা বোঝা যাচ্ছিলনা।
১৯৪৫ সালে সন্ধাকালীন একটি ঘটনা তার রহস্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সবেমাত্র আকাশ সন্ধ্যা হতে শুরু করেছে। আবহাওয়া এবং আকাশ ছিল খুবই সাধারণ ও পরিস্কার। পাইলটদের প্লেন ট্রেনিং এর জন্য এমন স্বচ্ছ আকাশ খুবই মানানসই। আমেরিকা শাসিত “ফ্লোরিডা” শহরের এক এয়ারবেস থেকে বারটি জ/ঙ্গি বিমান ট্রেনিং এর জন্য আকাশে উড্ডয়ন করে। সবগুলো বিমানই একসাথে প্রথম রাউন্ড সম্পন্ন করেছে। অতঃপর কেন্দ্র থেকে সবগুলোকে পৃথক পৃথক রাউন্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
সুতরাং সবকটি প্লেন পৃথকভাবে রাউন্ড দিতে থাকে। রাউন্ড দেয়ার সময় কোন পাইলটের কাছ থেকে কোন পেরেশানী বা সমস্যার বার্তা পাওয়া যায়নি। তাহলে বুঝা গেল- সবকিছু ঠিকঠাকমতোই চলছিল। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর সবগুলো প্লেনই এয়ারবেসে লেন করার উদ্দেশ্যে ফেরত আসতে লাগল। দশটি আসল কিন্তু দুটি প্লেন গায়েব হয়ে গেল। মার্কিন আকাশ পথ গবেষকদের একটি টিম ওই এলাকার আকাশপথ ও সমুদ্রপথে এদের তন্ন তন্ন করে খুজল। কোন হদিস পেলনা। এয়ারবেসে কোন দুর্ঘটনা বা সাহায্য প্রার্থনার বার্তাও পৌছায়নি। এতবড় বিমান বারমুডার আকাশে গায়েব হল নাকি পানির নিচে চলে গেল। কোন পাত্তা নেই।!!
একই বৎসর (১৯৪৫) ডিসেম্বর মাস। কারো কি জানা ছিল?! যে, ওই এলাকার প্রসিদ্ধ নাম “শয়তানী দ্বীপ” পরিবর্তন করে “বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল” দেয়া হবে। পানিতে ট্রাইএঙ্গেলের আকৃতি কি করে সম্ভব?! এবং তা গবেষণা ছাড়াই সারাবিশ্বের মানুষ তাকে ওই নামেই চিনতে শুরু করবে!! তা সত্ত্বেও প্রেস কনফারেন্সে মার্কিন দা/য়িত্বশীলগণ এক্ষেত্রে ট্রাইএঙ্গেলের নাম কেন ব্যবহার করল??!! তাহলে কি দাজ্জা/লের ট্রাইএঙ্গেল বা ই/হুদী/দের গোপন সংগঠন “ফ্রি/ম্যা/সন” এর ট্রায়াঙ্গলের এর সাথে কোন সম্পর্ক আছে??!!
ফ্লাইট ১৯…… ছয়টি প্লেনের ঐতিহাসিক ভ্রমণ
সুদক্ষ এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এক পাইলট, ৩০০ থেকে ৪০০ ঘন্টা একাধারে প্লেন কন্ট্রোলের অভিজ্ঞতা যার মধ্যে বিদ্যমান। কালের সর্বাধুনিক জঙ্গি বিমান যার মালিকানায়। তাছাড়া আবহাওয়াবস্থা সম্পর্কেও যিনি খুব ভাল জ্ঞাত। এমন এক পাইলট তার প্লেনসহ হঠাৎ বারমুডার আকাশে গায়েব হয়ে যাওয়া। তাও আবার একটি দুটি নয়; পাঁচটি প্লেন একসাথে!!
সময়টা ছিল ১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর। আনুমানিক দুইটা দশ মিনিটে আমেরিকা শাসিত “ফ্লোরিডা”র ফোর্ট লাডারডেইল (Fort Lauderdale) এয়ারপোর্ট থেকে ফ্লাইট-১৯ এর পাঁচটি এভেঞ্জার প্লেন উড্ডয়ন করে এবং নির্দিষ্ট এরিয়ায় কয়েকটি রাউন্ড সম্পন্ন করে। এরপর আনুমানিক চারটার সময় এক পাইলটের কাছ থেকে এয়ারপোর্ট অফিসে নিম্নোক্ত বার্তা প্রেরিত হয় (স্কোয়াডার্ন কমান্ডার আহ্বান করছে):-
পাইলটঃ আমরা আশ্চর্য ও বিরল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি…। মনে হচ্ছে- আমরা আমাদের এরিয়া থেকে সরে গেছি…। ভূমি দেখতে পাচ্ছিনা…। আমি ভূমি দেখতে পাচ্ছিনা…।
এয়ারপোর্টঃ আপনি এখন কোন জায়গায় আছেন?
পাইলটঃ জায়গা নির্দিষ্ট করতে পারছিনা…। বুঝতে পারছিনা… আমরা এখন কোথায় আছি…। আমার ধারনা… আকাশেরই কোথাও আমরা হারিয়ে গেছি…।
এয়ারপোর্টঃ পশ্চিম দিকে ফ্লাইং করতে থাকুন…।
পাইলটঃ আমি বুঝতে পারছিনা… পশ্চিম কোন দিকে…! সবকিছুই অচেনা এবং আশ্চর্য ধরনের দেখা যাচ্ছে…। এমনকি আমাদের সামনে সমুদ্রও আশ্চর্য আকৃতিতে দেখা যাচ্ছে…। এটাও আমি চিনতে পারছিনা…
এয়ারপোর্টে কর্মরত সকলেই অবাক ছিল। বুঝে আসছিলনা- এত দক্ষ পাইলট দিক কেন নির্ধারণ করতে পারছেনা?!! কেননা প্লেনের নেভিগেশন সিস্টেম (দিক নির্ধারণের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি) যদি কাজ নাও করে, তবুও সময়টা তো ছিল বিকালবেলা; সূর্যাস্তের সময়। সূর্য দেখে সহজেই পশ্চিম দিক নির্ধারণ করার কথা। কিন্তু পাইলট বলছে যে, সে দিক নির্ধারণ করতে পারছেনা। তাহলে সে কোথায় চলে গিয়েছিল??!! অতঃপর এয়ারপোর্টের সাথে পাইলটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়াও তখন ওই পাঁচ পাইলট একে অপরের কাছে যে বার্তা প্রেরণ করেছিল; তাও এয়ারপোর্ট অফিস রেকর্ড করতে সক্ষম হয়েছে। যাতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছিল যে, বাকী চারটি প্লেনও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। কিছুক্ষন পর জর্জ স্টিউর্জ নামক আরেক পাইলটের বিচলিত কন্ঠ শোনা যায়ঃ “আমরা সঠিক বলতে পারছিনা যে, এই মুহূর্তে আমরা কোথায় আছি…। আমার ধারণা যে, আমরা এয়ারপোর্ট থেকে ২২৫ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে ফ্লাই করছি…।” এর কিছুক্ষণ পর সে বলতে লাগলঃ “মনে হচ্ছে আমরা সাদা পানিতে প্রবেশ করছি…। আমরা সম্পূর্ণরূপে দিকভ্রান্ত হয়েছি…।” এরপর ওই প্লেন চিরদিনের জন্য সমুদ্রের পানিতে হারিয়ে যায়।
ওইদিন সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে মার্টিন মেরিনার (Martin Mariner) নামক একটি বিমান এই পাঁচটি প্লেন তালাশের জন্য বের হয়। এটি ছিল হারিয়ে যাওয়া প্লেন তালাশের স্পেশাল বিমান। পানিতে অবতরনের সুবিধাও তাতে বিদ্যমান ছিল। কোন প্লেন যদি সমুদ্রে পড়ে যায়, তা উদ্ধারের জন্য এই বিমান ব্যবহৃত হত। মার্টিন মেরিনার ওই স্থানে গিয়ে এয়ারপোর্টের সাথে যোগাযোগ করল। কিছুক্ষণ পর এরও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। অন্যকে তালাশ করতে গিয়ে নিজেই গায়েব। এরও কোন হদিস পাওয়া যায়নি। তৎক্ষনাৎ ওই ছয় প্লেন খোজার জন্য মার্কিন আকাশপথ ও সমুদ্রপথ টিম কোস্টগার্ড সাথে নিয়ে ওই এলাকার আকাশ ও সমুদ্র পথে বহু খোজাখুজি করল; কিন্তু কোন লাভ হয়নি। মধ্যরাতে এয়ারপোর্ট অফিসে এক অস্পষ্ট বার্তা পৌছেঃ FT”;;;;;;FT” বার্তা প্রেরণকারীর ভাষা অন্যরকম লাগছিল। এই বার্তা এয়ারপোর্ট অফিসে কর্মরত সকল কর্মীকে আরো পেরেশান করে দিল; কারন এই কোড শুধুমাত্র ফ্লাইট-১৯ এর কর্মীরাই ব্যবহার করে থাকে। তার মানে তখন পর্যন্ত ওই পাইলটদের কেউ না কেউ জীবিত ছিল। কিন্তু কোথায়?? মধ্যরাতে এই বার্তা পাওয়ার পূর্বেও তো ওই এলাকায় তাদের অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়েছিল। তাহলে এই বার্তা কোন জায়গা থেকে প্রেরণ করা হয়েছে?? তাহলে কি বারমুডার পানির গভীরে তাদের গুম করা হয়েছে?? অতঃপর কোস্টগার্ডের লোকেরা সারারাত তাদের তালাশে নিয়োজিত থাকে। পরদিন সকালে তিনশত প্লেন, হাজার হাজার স্পীডবোট এবং বেশকিছু সাবমেরিনসহ ওই এলাকায় নিয়োজিত ব্রিটিশ সেনাবাহিনী পর্যন্ত এদের উদ্ধারের জন্য বের হয়। কিন্তু এতটুকু পর্যন্ত বের করতে সক্ষম হয়নি যে, ওরা কিরূপ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে বা তারা কোথায় চলে গেছে!!
এ ধরনের দুর্ঘটনা দ্বিতীয়বার যাতে আর না ঘটে, সে জন্য গবেষকদের দিয়ে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু এ কমিটি তদন্ত তো দূরের কথা; স্পষ্ট কোন ব্যাখ্যা বা এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য পর্যন্ত করতে সক্ষম হয়নি। তবে কমিটি প্রধানের পক্ষ থেকে এ ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে যে, “ওই প্লেনগুলি যাত্রী পাইলট ও কর্মচারীদের নিয়ে কোথাও গুম হয়েছে, মনে হচ্ছে বাতাসের সাথে উড়ে তারা অন্য জগতে পাড়ি জমিয়েছে।”
এখন প্রশ্ন উত্থাপিত হয়- যদি কোন দূর্ঘটনারই সম্মুখীন হয়ে থাকে, তবে তো তাদের প্রত্যেকের কাছেই “লাইফজ্যাকেট” বা প্যারাসুট ছিল। এর দ্বারা ভূমিতে জরুরী অবতরন করতে পারত। তাহলে এতটুকু সুযোগও কি তাদের মেলেনি??
দ্বিতীয় কথা- প্লেনগুলি সন্ধার সময় গায়েব হয়েছে। তৎক্ষনাৎ বহু খোজাখুজি এবং তালাশের পরও তাদের পাওয়া যায়নি। তাহলে মধ্যরাতে যে বার্তা প্রেরণ করা হল; যোগাযোগ কোন জায়গা থেকে করা হল??!!
দুর্ঘটনার সময় নিকটবর্তী স্থান হতে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনাও কোন রহস্যময় বস্তুর দিকে ইঙ্গিত করেঃ যেমন- তালাশে নিয়োজিত জাহাজের কর্মীরা এই কথাটি নোট করেছে যে, একস্থানে সমুদ্রের উপরিভাগে পানির কিছু অংশ বিশেষ (কোন আকৃতির) পর্যায়ের, অতঃপর তা সাদা রঙে পরিবর্তন হয়ে গেল। স্মরন রাখা দরকার- এরকম বিশেষ আকৃতির ফ্লাইং সোসার্স (প্লেটের মত ফ্লাইং করে এমন বস্তু) বারমুডার পানিতে প্রায়ই প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
DC-3 একটি যাত্রীবাহী বিমান ছিল। যারমধ্যে ত্রিশজন পুরুষ স্বপরিবারে আরোহন করেছিল। তারা সবাই ছুটি কাটিয়ে ঘরে ফিরে যাচ্ছিল। বিমানটি “পোরটোরিকো” থেকে ফ্লোরিডার উদ্দেশ্যে ফ্লাইং করল। ফ্লোরিডা এয়ারপোর্টের কাছে এসে লেনের প্রস্তুতি নিতে নিতে গায়েব হয়ে যায়। পাইলট এয়ারপোর্ট অফিসে লেনের অনুমতিও চেয়েছিল, তাকে অনুমতি দেয়াও হয়েছিল। কিন্তু এ প্লেন অজানা কোন স্থানে লেন করে ফেলে। পরে এদেরও কোন খবর পাওয়া যায়নি। বারমুডার ব্যাপারে গবেষণাকারী কতিপয় লোকদের বক্তব্য হচ্ছে- ঐ এলাকায় গায়েব হওয়া সকল মানুষই জীবিত রয়েছে। কিন্তু অন্য কোন জায়গায়। বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের পানির অভ্যন্তরে অজানা ঐ “গোপন শক্তি” তাদের অন্য কোথাও নিয়ে গেছে। কোন অজানা স্থানে…।
এ সকল দুর্ঘটনার বিবরণ পড়ার পর আপনিও অনুধাবন করতে পারবেন যে, প্লেনগুলিতে কোন যান্ত্রিক গোলযোগ ছিলনা; বরং (গুম হবার সময়) তাদের উপর এক ভয়ানক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাও আবার খুব দ্রুত গতিতে। অতঃপর কোনকিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের গায়েব করে দেয়া হয়েছে। চিরদিনের জন্য।
কিন্তু কোথায়?? এ প্রশ্ন সারাবিশ্বের সকল মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ও দাজ্জাল রহস্য
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল সম্পর্কে কতিপয় দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ।
বারমুডায় গায়েব হওয়া সামুদ্রিক জাহাজ, নৌযান এবং বিমান সমুহের সম্পর্ক অধিকাংশই আমেরিকা এবং ব্রিটেনের সাথে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়- এ দু’দেশের সরকার কোন সময় না বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে, আর না ঐ এলাকার উপর দিয়ে অতিক্রম করতে জাহাজ বা প্লেনগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বরং এ ব্যাপারে যতগুলি গবেষণা টিম গঠন করা হয়েছে একটিরও রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়- পৃথিবীর কোন সরকারেরই এরকম কোন পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতা নেই। একারনেই বহু সরকারী গবেষক প্রকাশ্যে জনসমক্ষে অস্বীকার করে বসে যে, এরকম কোন দুর্ঘটনা ঘটার মত এলাকার অস্তিত্ব বর্তমান পৃথিবীতে নেই।
বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলে দুর্ঘটনার কারণ বিবরণে বহু কিছু লেখা হয়েছে। সুপ্রসিদ্ধ বিশ্ববিজ্ঞানী, দক্ষ ভূমিবিশেষজ্ঞ (Geologists), প্রকৃতিবিজ্ঞানী, দার্শনিক, সাতারবিশেষজ্ঞ এবং বুদ্ধিজীবি এমনকি ইহু/দী-খ্রিষ্টান/দের ধর্মীয় প্রবক্তারাও পর্যন্ত এ ব্যাপারে তাদের মন্তব্যের বিবরণ দিয়েছে। প্রত্যেকের মন্তব্যেই নিজস্ব ধর্মকর্মের (Point of view) ছাপ স্পষ্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। এখানে প্রসিদ্ধ কয়েকটি মন্তব্য উল্লেখ করে তা নিয়ে আলোচনা করব।
যে সকল শক্তি বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল থেকে লোকদের মনযোগ সরাতে চায়, তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়ঃ “প্লেন এবং জাহাজকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে সময়ে সময়ে বহু ঘটনাই ঘটে আসছে। সুতরাং বারমুডার ওখানেও যদি এরূপ কোন ঘটনা ঘটে থাকে, তবে আশ্চর্য হওয়ার কোন কিছু নেই । একটি প্রসিদ্ধ গ্রন্থে (লেখক- লেরি কোশে) উল্লেখ করা হয়েছেঃ-
অর্থাৎ বারমুডায় সংগঠিত দূরঘটনাগুলি এত আশ্চর্য ও বিরল প্রকৃতির ছিলনা; বরং মিডিয়া ও অযৌক্তিক কিছু তথ্যের ভিত্তিতে এটাকে বড় করা হয়েছে।
উল্লেখিত মন্তব্য ছাড়াও যে সকল গবেষক বারমুডার বাস্তবতা মেনে নিয়ে বিভিন্ন মতামত পেশ করেছেন, তা নিম্নরূপঃ
(১) প্রাচীন যুগপ্রিয় খৃষ্টানদের ধারণা- বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল হচ্ছে জাহান্নামের দরজা।
— এই দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে কোন পর্যালোচনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
(২) কিছু ব্যক্তি এ কথা বলে বারমুডার গুরুত্ব হ্রাস করার চেষ্টা করে যে, ওখানকার পানির গভীরতা খুব বেশি। সুতরাং জাহাজ বা প্লেন গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা কোন আশ্চর্যের বিষয় না।
— দ্বিতীয় মন্তব্যটি এজন্য গ্রহন করা যায়না যে, সমুদ্রের নিচে পানি যতই গভীরে থাকুক; এ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যেখানে যুগে মাছের পেটের মধ্যে পর্যন্ত ছোট ছোট ক্যামেরা ফিট করে সমুদ্রের গভীর এবং তলদেশের সকল যাবতীয় বিষয় নিয়ে গবেষণা চলছে, আর এত বড় বড় জাহাজ, সাবমেরিন আর বিমানগুলো অদৃশ্য হয়ে গেলো। কোন একটিও আজ পর্যন্ত কারো চোখে পড়লনা ???!!! বা তার কোন হদিস আজ পর্যন্ত জানা সম্ভব হলোনা ???!!!
(৩) একদলের মন্তব্য- বারমুডার পানির অভ্যন্তরে শক্ত তুফান ও প্রবল পানি সঞ্চালনের সৃষ্টি হয়। ফলে তা জাহাজ ও প্লেনকে অনেক দূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়।
— এই মন্তব্যও (এখানকার পানিতে প্রবল ঝড় তৈরী হওয়া)- ও যুক্তিসঙ্গত মনে হয়না। কারণ, যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সবগুলি ঘটনার সময় ওখানকার আকাশ ও পানির অবস্থা স্বাভাবিক, স্বচ্ছ ও পরিস্কার ছিল। কোন ঝড়-তুফানের কথা তো আজ পর্যন্ত কেউ রেকর্ড করেনি। দ্বিতীয়ত- এটা আবার কেমন ঝড়-তুফান, যে কখনো শুধু জাহাজকে ডুবিয়ে দেয় আর যাত্রীদেরকে তীরে এনে ছেড়ে দেয় অথবা যাত্রীদের গায়েব করে জাহাজকে তীরে রেখে যায় ???!!!
(৪) বারমুডার পানিতে জলকম্পন সৃষ্টি হয়, ফলে দ্রুতগতিতে অনেক দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়।
— ঠিক আছে মেনে নেয়া যাক এই মন্তব্য! কিন্তু উড়ন্ত প্লেনের ব্যাপারে আপনি কি বলবেন? পানিকম্পন সৃষ্টি হল পানির ভিতরে আর তিন হাজার-চার হাজার মিটার উপরে উড়ন্ত প্লেনও গায়েব করে দিল??!! এটা আবার কেমন ধরনের কম্পন; যা সুদক্ষ ভূমিবিশেষজ্ঞরাও পর্যন্ত কোনসময় রেকর্ড করেনি এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রেও এর কোন সংকেত পাওয়া যায়নি।
(৫) কতিপয় গবেষকদের মন্তব্য- ওখানে (Electric Magnetic Waves) বৈদ্যুতিক শক তৈরী হয়, যার ক্ষমতা আমাদের ব্যবহৃত বিদ্যুৎ থেকে হাজার গুন বেশি। অসম্ভব ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের গতি জাহাজকে তার নাম-নিশানা পর্যন্ত মিটিয়ে দেয়, আর উড়ন্ত প্লেনকে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। একারনেই কম্পাস (দিক নির্ধারণকারী প্রযুক্তি) ওই স্থানে অকেজো হয়ে যায়। একটি হচ্ছে- বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে শয়তানী সমুদ্র।
কম্পাস অকেজো হওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে- ওই দুই এলাকা ছাড়া দুনিয়ার কোথাও কম্পাস ব্যবহার করেন, তার সুঁই উত্তর দিকে হবে। কিন্তু বাস্তবে তা উত্তর দিকে নয়; বরং ম্যাগনেটিক উত্তর দিকে হয়। কেননা ওই দুই এলাকায় কম্পাসের সুঁই উত্তর দিকে হয়। যার ফলে ওখানে দিক নির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়ে। এটিই মার্কিন সামুদ্রিক গবেষণা টিমের মন্তব্যঃ
The US Navy proposed the possibility of electromagnetic and atmospheric disturbances.
— এই মন্তব্যটি মনযোগ সহকারে পড়ুন। কেননা এটাই ওই মন্তব্য যা বারমুডার পানিতে লুকায়িত “গোপন শক্তি” ইব/লিস-দাজ্জা/লের বৈজ্ঞানিক উন্নতি বুঝতে আমাদের সাহায্য করবে।
(৬) অধিকাংশ সাইন্সবীদদের মতে- এটি একটি সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক বিষয়ঃ-অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা গুম হওয়ার ঘটনাগুলিকে উত্তাল সমুদ্রের তরঙ্গ, অনুপযোগী ঋতু এবং টেকনিক্যাল ত্রুটি মনে করে। বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের এরিয়ায় ভৌগলিক অবস্থানে কম্পাস উত্তর দিকে হয়। ম্যাগনেটিক উত্তর দিকে নয়। ওখানে দিক নির্ধারণ সমস্যা হয়ে পড়ে এবং দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
— এই মন্তব্যের ব্যাপারে প্রসিদ্ধ গবেষক গিয়ান কাউসার (১৯৯০ সাল থেকে বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের উপর গবেষণাকারী) বৈজ্ঞানিকদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাখ্যান করে লিখেনঃ-
“বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের রহস্যের বেড়াজাল অত্যাধিক ঘন হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার অথবা এর অস্তিত্ব বৈজ্ঞানিক অধ্যায়ে রাখার সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ প্রতিফলিত হয়েছে। ম্যাগনেটিক কম্পাসের পার্থক্য সৃষ্টির ব্যাখ্যাটিও সঠিক নয়; কেননা কম্পাস উঠা-নামা বা কমবেশি হওয়া পৃথিবীর ঘূর্ণায়নের সাথে নড়াচড়া করে। আর এ পার্থক্যটি সর্বদাই ট্রাইএঙ্গেলের ভেতরেই হয়না; যদ্দুরুন দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়। মিথেন গ্যাসের যে থিওরী বলা হয়েছে তাও ভিত্তিহীন। কেননা ট্রাইএঙ্গেলের ভিতরে গ্যাসের কোন ভান্ডার বা খনি নেই।”
(৭) আরেক মতামত- বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের ভেতরে ফ্লাইং সোসার্স আসা-যাওয়া করতে দেখা গেছে। ফ্লাইং সোসার্সে আরোহনকারী গোপন শক্তিরই ঠিকানা ওই এলাকা; যারা নিজেদের বিশেষ টার্গেট বাস্তবায়নকল্পে শক্তিশালী জাহাজ, প্লেন ও বিশেষ মানুষদের গুম করে থাকে।
(৮) বাস্তব কথা যে, ওখানকার পানির গভীরে ছোট ছোট গর্ত দেখা গেছে।
— এ মন্তব্যে বলা হয়েছে যে, ওখানকার পানিতে ছোট ছোট অনেক গর্তের মত কিছু লক্ষ করা গেছে। কিন্তু ঐ গর্তগুলোর কোন সাদৃশ্য বা আকার-আকৃতির ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি; নাকি তা বলার অনুমতি নেই? আবার গর্তগুলো এমনিতেই তৈরি না কোন সুসংগঠিত শক্তি এগুলো বানিয়েছে। তবে এতটুকু অবশ্যই ঘটেছে যে, যে-ই এই গর্তগুলোর ব্যাপারে জানার চেষ্টা করেছে বা কিছু জেনে ফেলেছে, তাকে পানির অভ্যন্তরেই খতম করে দেয়া হয়েছে।
(৮) মিসরীয় প্রখ্যাত মুসলিম গবেষক মুহাম্মদ ঈসা দাউদের মতে- শয়তানী সমুদ্র আর বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল হচ্ছে “কানা দাজ্জা/লের” মালি//কানা। দাজ্জাল ওখানে যথারীতি স্বীয় আ/স্তানা নির্মাণ করেছে যা ত্রিভূজা/কৃতির।
— মুসলিম গবেষক মুহাম্মদ ঈসা দাউদ মিসরীর মন্তব্য সম্পর্কে যতদূর জানা যায়- উনি দা"জ্জা/লের ব্যাপারে সুগভীর গবেষণা করে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন এবং এ ব্যাপারে বহু গ্রন্থ উম্মতে মুসলিমকে উপহার দিয়েছেন। যে সকল স্থানসমুহের সাথে দা/জ্জাল বা ইহু*দী গোপন সংগঠন “ফ্রি"ম্যাস""ন্স” এর সম্পৃক্ততার সংবাদ পেয়েছেন, ওই স্থানসমূহে মুহাম্মদ ঈসা দাউদ নিজে গিয়ে গবেষণা করেছেন। যেমন- মিসর,সুইডেন, ফিলিস্তীন, আমেরিকা, সিরিয়া ও বারমুডা ইত্যাদি। বিশেষত ফিলিস্তীন ও মিসর থেকে কিছু পুরাতন পুস্তকও তিনি হাতে পেয়েছেন। ওখানকার বয়স্ক লোকদের থেকেও উনি এমন কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেন যার বর্ণনা আরবদের মধ্যে সীনা-বসীনায় চলে আসছে।
উল্লেখিত সকল মতামত ও তার ব্যাখ্যা জানার পর আমরা এ কথা বলতে পারি যে, বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের ব্যাপারে গবেষণাকারীদের মধ্যে যারা ওই এলাকাকে ভয়ানক স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তাদের দলীলগুলোই বেশী ভারী মনে হয়।
আরো একজন গবেষক “পি পর বাথ” তার রচনা (Bermuda Triangle: Energy Filed or Time Warp)-এ অনেক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন ও গবেষণার পর লিখেন-“পরস্পরবিরোধী সব ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ সত্ত্বেও একটি আশংকাজনক বিষয় বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের ভেতরে আশ্চর্যজনক কিন্তু অসম্ভব শক্তিশালী পর্যায়ের কিছু ব্যাপারের অস্তিত্বের কথা কতিপয় বিজ্ঞানীরাও স্বীকার করেছেন। তবে এটা কারো জানা নেই যে, কেন এবং কিভাবে ওই এলাকা অসম্ভব শক্তিশালী ব্যাপারসমূহের কেন্দ্র হয়েছে!”
জী হ্যাঁ…! বারমুডা ট্রাইএঙ্গেলের রহস্যময় পানিতে এক শক্তিশালী “গোপন শক্তি”র অস্তিত্বের ব্যাপারে অধিকাংশ গবেষকই একমত। কিন্তু ওই রহস্যময় “গোপন শক্তি” কি??!! কে এটাকে কন্ট্রোল করছে? এই রহস্য কি তবে রহস্যই রয়ে যাবে?
-----
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন