একবারও কি ভেবেছেন শহরগুলো কেন মরুভূমির ন্যায় পানি সংকট হয়?
শুধু যে পানি সংকট হবে এমন নয়, গ্যাস সংকট হয় বা বন্ধ করে রাখবে। বিদ্যুৎ অর্থাৎ লোডশেডিং ও হয়েছিল যখন কয়লা আমদানি করতে পারে নাই কয়েকমাস আগের ঘটনা, একবছরও হয়নি! (২০২৩), তাছাড়া আরো অনেক অনেক সমস্যা তো আছেই...
পানি সংকট
বিজ্ঞানীদের দাবি মতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নাকি দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে, পানি নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে!
আপনি যদি একটু ঘাড় ঘুরিয়ে অনুন্নত,মাটির রাস্তা, টিনের ঘরগুলোর দিকে তাকান দেখবেন আল্লাহর রহমতের সুপেয় মিষ্টি পানি কোনো রকম বিল/খরচ ছাড়াই গ্ৰাম্য মানুষ তৃপ্তি সহকারে খেতে পারছে, পানি থেকে প্রয়োজনীয় সব পাচ্ছে।
কিন্তু আপনাকে শহরে, শহরের উন্নয়নের ভুয়া চশমা পড়িয়ে খাওয়াচ্ছে পরিশোধিত নদী পানি!
সুপেয় মিষ্টি পানির স্বাদ তো দূরের কথা পানি থেকে যে খনিজ পদার্থ/উপাদান আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল তাও পাচ্ছেন না!
সাধারণত জমজমের পানি ছাড়া সব পানিতে ময়লা জমে, পানির পোকা হয়, পানির রং কিছুটা পরিবর্তন হয়।
একবারও কি ভেবেছেন যে পরিশোধিত পানিতে কেন ময়লা জমে না? দীর্ঘদিন রেখে দেওয়া পানিতে কেন পোকা হয় না? ঘোলাটে পানি আসে না, যেখানে টিউবওয়েলের পানি একদিন রাখলে ময়লা জমে যায়।
কিয়ামতের আগে দা-জ্জাল যেসমস্ত জিনিসের নিয়ন্ত্রণ নিবে তারমধ্যে একটি হচ্ছে সুপেয় মিষ্টি পানি। আর এই নিয়ন্ত্রণ সফলভাবে নিয়ে যাচ্ছে দাজ্জালের এজেন্টরা কিছু কিছু কোম্পানির মধ্যে এবং মানুষকে অভ্যস্ত করছে বোতলের পানিতে। টাকা দাও ,পানি খাও ফকির হও!!!
নিজেকে প্রশ্ন করুন কেন দিন দিন পানি কোম্পানি বাড়ছে,কেন আপনি পানি কিনে খেতে হয়?
গ্যাস/রান্নাবান্না
শহরে মাঝেমধ্যে এমন হয় যে গ্যাস বন্ধ করে রাখে, সারাদিন গ্যাস নাই, কখন পাবে তাও ঠিক নেই। এমনো হয় রাত ২/৩টায় গ্যাস আসে তখন কি আপনি রান্না করবেন নাকি ঘুমাবেন? উন্নয়নের কাঠের চশমা পড়িয়ে রাতের ঘুমটা ও কেড়ে নিল সেদিকে কি খেয়াল আছে?
আপনার এলাকায় গ্যাস না থাকলে রান্নাও বন্ধ,খাবেন কি উন্নয়ন? কিন্তু গ্ৰামে গ্যাস থাক বা না থাক রান্না নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। আল্লাহর অশেষ রহমতে যে সবসময় ভরপুর থাকে গ্ৰাম।
অপরদিকে, শহরের সবকিছু দখলে নিয়েছে দা-জ্জালের এজেন্টরা,গ্ৰাম হচ্ছে মুক্ত আকাশে মুক্ত পাখির মতো।
ফসল এবং খাদ্যঃ
দা-জ্জালের এজেন্টরা এমনভাবে ফসলি জমির দখলে নিয়েছে যে, আপনি তাদের কাছে হাত পাততে বাধ্য শস্য বীজ এবং রাসায়নিক সারের জন্য!
একটা সময় ছিল যখন ফসলি জমিতে ফলানো যেত দেশী বীজের ফসল, লাগতো না কোনো রাসায়নিক সার,জৈব সার প্রয়োগে আল্লাহর রহমতের বেড়ে উঠতো এক শক্তিশালী ফসল এবং শক্তিশালী খাদ্য ভান্ডার। তখনকার মানুষগুলো ছিল সুঠামদেহী শক্তিশালী এক মানব। জঙ্গলের একপাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে শিকার নিয়ে বের হতো। আর এখন এই হাইব্রিডের যুগে কথা কি বলবো? সুঠামদেহী শক্তিশালী তো দূরের কথা এমন এক অবস্থা হইছে কোনোরকমে খেয়েদেয়ে বেঁচে থাকার মতো অবস্থা আর হসপিটালের দিকে তাকালেই বুঝবেন।
(সব ধরনের বস্তার চাউল, উদাহরণ হিসেবে মিনিকেট ধরলাম)
ভাত খায় আবার মিনিকেট চাউল একবারও ভাবে না ঐ চাউল এতো চিকন কেন,এতো পিচ্ছিল কেন,এতো ঝরঝরে হয় কেন,ভাত এতো সাদা হয় কেন? আধুনিক মেশিনদ্বারা কাটছাঁট করা যে চাউল খাচ্ছেন সেটাতে কিছুই নেই যা পুষ্টি/ ক্যালরি থাকার কথা ছিল তার ছিটেফোঁটাও নেই!
যে ভাত থেকে আপনি পুষ্টি/ক্যালরি পাবেন সেই চাউল টা হবে মোটা, মিনিকেট চাউলের মতো পিচ্ছিল না, চাউলের উপরে কিছুটা আটার মতো সাদা সাদা/ধুলাবালির স্তরের মতো দেখা যাবে। ভাত বেশি ঝরঝরে হবে না,ভাত সাদা মিনিকেট চাউলের চেয়ে কম হবে।
মিনিকেট চাউল পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে কেমিক্যালের ব্যবহার হয় অপরদিকে গ্ৰামেগঞ্জে চাউলে এমন কিছুই মিশাতে হয় না।
কেমিক্যাল মিশ্রিত খাবেন নাকি কেমিক্যাল মুক্ত খাবেন বাকীটা আপনাদের ইচ্ছা।
এই শক্তিশালী ফসল এবং খাদ্য ভান্ডার ধ্বংস করেছে দাজ্জালের এজেন্টরা হাইব্রিড জাতের বীজ আর কৃত্রিম রাসায়নিক সার প্রয়োগে উচ্চ ফলন আর অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে! আর এজন্যই আজ মানুষ অধিক ফলন, অধিক মুনাফার জন্য নির্ভর করছে হাইব্রিড বীজ আর রাসায়নিক সারের উপর, এখন এমন এক পরিস্থিতি হইছে যে কীটনাশক/সার ছাড়া হয়ই না,ভুলে গেছে তাদের পূর্বপুরুষদের চাষাবাদের প্রাকৃতিক পদ্ধতি।
খাদ্য ভেজাল তো আছেই গ্ৰামের মানুষও খাদ্য ভেজাল থেকে মুক্ত নয়। শহরের মানুষ তো ধরাছোঁয়ার বাইরে! গ্ৰামের মানুষ চেষ্টা করলে মোটামুটি স্বাস্থ্যসম্মত ভেজাল মুক্ত খেতে পারে বা টুকটাক ভেজাল আছে এমন। কিন্তু শহরের মানুষের ভেজাল কিছু মুক্ত খাওয়া স্থায়ীভাবে অসম্ভব!!
চিকিৎসা
ধরেন কোথাও লেগে আপনার হাতটা কেটে গেল শহরের মানুষ দৌড় দিবে ডাক্তারের কাছে,লাগাবে কৃত্রিম ঔষধ এটা কি মনে হয় স্বাস্থ্যর জন্য বেশ উপকারী?
অপরদিকে, গ্ৰামে একধরনের পাতা পাওয়া যায় নামটা মনে নেই, ঝুপঝাড়, রাস্তার আশেপাশে পাওয়া যায়। আপনি ক্ষতস্থানে লাগালেন র ক্ত বন্ধ হয়ে গেল। এতে নাই কোনো ভেজাল ক্ষতিকর কিছু পুরোটাই প্রাকৃতিক।
শহরের হাসপাতালের দিকে তাকান গ্ৰাম আর শহরের মানুষের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের চেষ্টা করেন। বুঝে যাবেন কোনটা আসল কোনটা নকল... [ আধুনিক চিকিৎসার বিরোধীতা করছি না মূলত বুঝতে চাচ্ছি ছোটখাটো সমস্যা/রোগের জন্য লতাপাতার রস লাগালে/ খেলে ভালো হয়ে যায় সেখানে শহরের মানুষ দৌড়াতে হয় হাসপাতালে। ]
বাসস্থান/ বসবাস
বসবাসের জন্য অনেকে শহর বেছে নেয় কেননা ওখানে চাকরি সহজে পাওয়া যায় বা একটু উন্নত জীবনের আশায়। কিন্তু কতটুকু উন্নত জীবন ব্যবস্তা তা বুঝতে হলে বিবেককে জাগ্রত করতে হবে।
শহুরে এলিট সোসাইটি বা উচ্চবিত্ত যারা আছে তারা শহরে বাড়ি গাড়ি করে গ্ৰামকে তেমন একটি প্রাধান্য দেয় না গ্ৰামের মানুষ নাকি ক্ষেত!! এই ক্ষেত যদি ফসলি জমিজমার ফসল শহরে যাইতে না দিত তোমাদের মতো এলিট সোসাইটি আমদানি করাগুলো খেতে খেতে ফকির হয়ে পথে বসে যেতে।
করোনার সময় দেখেছি উন্নয়নের শহর থেকে কীভাবে গ্ৰামে চলে আসতেছিল, গ্ৰামের মানুষ ক্ষেত , ক্ষেতেই আসতে হলো। কিছু উচ্চবিত্ত ভুলে যায় তারা গ্ৰাম থেকে উঠে যাওয়া শহুরে শরনার্থী! (৮০℅)
ধরে নেওয়া যায় যে আপনার অনেক শখ শহরে বাড়ি গাড়ি করবেন এটা করা যেতেই পারে। তাই বলে গ্ৰামের মানুষকে তুচ্ছ করা ঠিক নয়। যারা শহরে বাড়ি করে তাদের পরবর্তী আরেকটা লক্ষ্য থাকে আরেকটা বাড়ি করার এইভাবে একের পর এক স্থাপনা করতেই থাকে বাড়ি + অন্যান্য।
একবারও কিন্তু তারা ভাবে না একটা ১০ তলাবিশিষ্ট বিল্ডিং করতে , জায়গায় কিনতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হইছে তা দিয়ে গ্ৰামে অনেক খানি জায়গা কেনা যেত। শহুরে বিষ না খেয়ে প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য চাহিদা মেটাতে পারতো গ্ৰামে চাষাবাদ করে, রান্নার জন্য গ্যাস, পানি চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতো, সন্তানদের দিয়ে যেতে পারতো বিশাল এক জায়গা। কয় প্রজন্ম একই জায়গায় বসবাস করতে পারতো ভাবা যায়? শহরে কিন্তু এই সুযোগই নাই একটা বিল্ডিং বেশি হলে ধরেন ১০০ বছর দাঁড়িয়ে থাকলো তারপর নড়বড়ে হয়ে যায় নতুন করে আবার করতে হয়।
কিন্তু গ্ৰামে বিশাল জায়গা থাকায় কোনো চিন্তা নেই তাই নয় কি?
এই বিশাল জায়গায় আপনি চাইলে ফসল ফলাতে পারবেন,ফল গাছ লাগাতে পারবেন, পুকুর করে আপনার ছেলে/মেয়ে, নাতি নাতনি.... সাঁতার শিখাতে পারবেন,মাছ চাষ করতে পারবেন। ছোট বাচ্চারা খেলাধুলা করার মতো জায়গায় পাবে, পাশের বাড়ির যাবে বন্ধুবান্ধব হবে..... ইত্যাদি।
কিন্তু একবার ভাবেন শহরে এই সুবিধাগুলো আছে কিনা? নেই! এগুলো যদি শহরে থাকতো ছোট ছোট বাচ্চা হতে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই প্রাণবন্ত হয়ে উঠতো আহ কতকিছু থেকে বঞ্ছিত হলো আধুনিকতার নামে শহরবাসী।
ভূমিকম্প তো প্রতিবছরেই হয় ধরেন ঐ ১০ তলাবিশিষ্ট ভবনে মোট ২০ টা পরিবার আছে ভূমিকম্পে বিল্ডিং ধ্বসে গেল অথবা ধরেন দেশে যুদ্ধ লেগে গেলো শত্রু শুধু একটা মিসাইল মারবে ২০ পরিবার শেষ। কিন্তু এই ২০ পরিবার যদি গ্ৰামে থাকতো তাদের ঘরবাড়ি থাকতো ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় শক্র ২০ জায়গায় ২০টি মিসাইল মারার সাহসও করবে না। (গাজ্জার দিকে তাকালে বুঝবেন)
পশ্চিমা রথচাইল্ড ফ্যামেলির কু কু রা এটাই চায় কীভাবে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করবে, আধুনিকতার কাঠের চশমা পড়িয়ে হাতের মুঠোয় নিয়ে ঝাঁকানো যায়। এক ঢিলে দুই পাখি মেরে পুরো পৃথিবী শাসন করা যায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন