পুরোনো ঢাকার প্রতিটি পুরোনো বাড়িতে (যেগুলো শত্রু সম্পত্তি) ইসকন ঘাঁটি গেড়েছে। জন্মের পর থেকে যেসব বাড়িগুলোতে সুনসান নীরবতা দেখেছি, সেখানে এখন রাতারাতি মন্দির তৈরি হয়েছে। চলছে হরদম পূজার্চনা। প্রশাসনের পদে পদে ঘাপটি মেরে বসে আছে ইসকন। সময় হলেই মরন কামড় দেবে। কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম আদালতের ঘটনা মনে আছে?
সেদিন বিক্রমপুরের নিমতলী থেকে রাজানগর ইউনিয়নের ভেতরে যেতে দেখলাম কয়েক বর্গমাইলের বিশাল এলাকা জুড়ে পুরো গ্রাম খ্রিস্টান হয়ে গেছে। একদিনে হয়েছে? বছরের পর বছর সময় নিয়ে হয়েছে। স্থানীয় এক মুরব্বির সাথে কথা বলে জানলাম তারা আগে পেশায় জেলে ছিল। অর্থাৎ নিম্ন বর্ণের হিন্দু। অথচ তার কয়েক মাইল উত্তরে বাংলাদেশের একজন অতি পরিচিত পীরের মাদ্রাসা আছে। বছরে দু'দিন সময় নিয়ে বিশাল মাহফিল হয়। ভাইরাল বক্তারা এসে গলা ফাটিয়ে ওয়াজ করে যায়। অথচ নাকের ডগায় মিশনারিরা ওদের কাজ ঠিকই করে চলে গেল।
তিন পাহাড়ি অঞ্চলে দাঁড়িওয়ালা দেখলেই কাঁচা খেয়ে ফেলবে আর কিছুদিন পর। (২০২২ সালে পাহাড়ে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে আমার। সম্ভব হলে ঘটনাটা একদিন বলব ইনশাআল্লাহ।)। প্রায় ৯০% খ্রিস্টান হয়ে গেছে। এখন যারা তরুণ প্রজন্ম আছে, তারা জন্মগতভাবে খ্রিস্টান। নর্থ বেঙ্গলেও একইভাবে গ্রামের পর গ্রাম মুসলিমদের খ্রিস্টান বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। অথচ হযরত শাহজালাল, বখতিয়ার খলজি, কুতুবউদ্দিন আইবেকরা কত কষ্ট করেই না এই হিন্দুদের মুসলিম বানিয়েছিলেন।
কাদিয়ানী ফিতনা নীরব ঘাতকের মতো। এই রোগের যন্ত্রণা হুট করে টের পাবেন। রাষ্ট্র, বাঙ্গু সেক্যুলার, কিছু মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, শক্তিশালী পশ্চিমা দেশগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা আছে এদের পেছনে। এমনকি হিন্দুত্ববাদীরাও কাদিয়ানীদেরকে সমর্থন করে। আপনাদের পেছনে কে আছে? কয়েক বছর আগে এক কাদিয়ানীর সাথে কথা বলাতে বাধ্য করে একজন পরিচিত মুসলিম ভাই। আমার তো মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছিল বারবার। বহু কষ্টে নিজেকে সংবরণ করি। অথচ ওই নাপাক কাফেরের মুখে মধুর বাক্য। মুখে হাসি। সে নিজেকে মুসলিম বলছে। আল্লাহর রাসূলকে (সা.) নবী মানছে, সাথে কাদিয়ানীকে ইনিয়েবিনিয়ে নবী দাবি করছে। গোপনে গোপনে কত মুসলমানকে যে ইসলাম থেকে বের করে এনেছে এরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলাই জানেন!
এই অঞ্চলে কি শিয়া নেই? নীরব ঘাতক। তাদের কিছু কর্মকাণ্ড চোখে পড়ল। কি মনে হয়, শিয়ারা মুসলমানদের ভালো চায়? আফগানের সিংহগুলোকে পেছন থেকে দংশন করেছিল আমেরিকার সাথে হাত মিলিয়ে। শিয়াদের মাজারগুলো মন্দিরের চেয়ে কোনো অংশে কম না। ভারতে এদের ওপর হিন্দুত্ববাদীরা কোনো আক্রমণ করে? চূড়ান্ত সংকটে হিন্দুত্ববাদীদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে এরা যে মুসলমানদের দংশন করবে না, এর নিশ্চিয়তা কি?
আহলে কুরআন নামের আরেক ফিতনা শুরু হয়েছে। এমন এমন কিছু পরিচিত মানুষ এই বিষয়ে আমাকে এমন এমন বিষয়ে প্রশ্ন করেছে, যারা কি না মুসলিম পরিবারে জন্মেছে। তাদের প্রশ্ন শুনে মনে হয়েছে তারা আহলে কুরআন ফিরকার ফিতনায় জড়িয়ে গেছে। আল্লাহর রাসূলের (সা.) হাদিসের ব্যাপারে তারা সন্দেহে পড়ে গেছে।
ওদিকে সরকার উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে সমকামিতাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
এতে করে পশ্চিমাদের কাছে কিছুটা হলেও ভালো সাজতে পারবে। কারণ, পশ্চিমারা জাতিগতভাবে পায়ুকামী। নির্বাচন সুষ্ঠু হলো কি হলো না, চীনের প্রভাব বাংলাদেশে বাড়লো কি কমল, সেসবই সমকামিতাকে বৈধতা দেওয়ার কাছে গৌণ। তাই সমকামিতাকে বৈধতা দিলে সাত খুন মাফ।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পরিস্থিতি উত্তপ্ত।
ওদিকে ভারতে আবার মোদি ক্ষমতায় আসলে মুসলমানদের ওপর দিনে-দুপুরে হত্যাযজ্ঞ চালাবে। আমেরিকা ওর সপ্তম নৌ বহর নিয়ে বঙ্গোপসাগরে পায়তারা করছে–কবে বাংলাদেশে ঘাঁটি গাড়বে। গাজ্জার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ডে ৩০ হাজার মুসলমান হত্যা করার পরও যখন সবাই নিশ্চুপ, তখন আপনাদের মতো বাঙালি মুসলমানদের ১০ লাখ মেরে ফেললেও কেউ আওয়াজ তুলবে না। যার যার ঘর তার নিজেকেই সামলাতে হয়।
উচিত ছিল প্রতিটি সমস্যার জন্য কমপক্ষে ১০ জন করে স্কলার তৈরি করা। যাদের কাজ হবে ঘুরে ঘুরে সারা বাংলাদেশে নির্দিষ্ট সেক্টরে দাওয়াতি কার্যক্রম চালানো। প্রতি ১০ জন নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে বলবেন। ভিন্ন টপিকে আলোচনা করবেন না। সব মাসলাক মতপার্থক্যের উর্ধ্বে গিয়ে এই কার্যক্রমকে সামষ্টিকভাবে এগিয়ে নেবে।
আর আপনারা বর্ষাকালের সংকটে শীতকালের কম্বল নিয়ে বাহাস করছেন। এগুলোকে রাজনৈতিক বিলাসিতা বলে। অর্থাৎ, আপনাদের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে, দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে। এখন অন্যান্য বিষয়গুলো পরিশুদ্ধ করা হচ্ছে। অন্য ভাষায় বললে, এগুলো আসলে রাজনৈতিক মূর্খতা।
বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের রাজনৈতিক বিচার-বুদ্ধি এখনো যে বেশ কাঁচা সেটা তারা বারবার প্রমাণ দিচ্ছে। কোন কাজ কখন করা উচিত সেই হিতাহিত জ্ঞানটুকু তাদের নেই। ইসলামপন্থীদের মাঝে কিছু সংখ্যক হাইব্রিড বক্তা জানেন– নির্দিষ্ট একটা ইস্যুতে জামায়াতের কাছে শক্ত কোনো দলীল-প্রমাণ নেই। তাই সুযোগ মতো দূর্বল পেয়ে একটু চেপে দিচ্ছে।
আদৌ কি তারা এই অঞ্চলে ইসলামের বিজয় চান কি না আমার সন্দেহ হয়। সস্তা সেলিব্রিটিজম যে একটা মস্ত ফিতনা এটা তার প্রমাণ। পেনাল্টিতে গোল দিয়ে নিজেকে খুব বড়ো খেলোয়াড় ভাবছে। নাকি তারা কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের এজেন্ডা বাস্তবয়ান করতে এসব পুরোনো কাসুন্দি ঘাঁটাঘাঁটি করছে? গৌন বিষয় দিয়ে মূখ্য বিষয়কে আড়াল করা হচ্ছে।
এতই যখন বাহাসের নেশা–তো তাদেরকে বলুন ইসলামের নামে গনতান্ত্রিক রাজনীতি যারা করছেন এবং যারা করে গিয়েছেন, তারা কি সঠিক কাজ করেছেন? নাকি জাতিকে গোমড়া করেছেন?
সৎ সাহস থাকলে এই টপিকে আলোচনা চলুক। একেবারে গভীর থেকে চলুক। কোনো মাসলাকের কেউ যেন বাদ না যায়। গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনা চলুক।
সব হক কথা সব পরিস্থিতিতে বলতে হয় না। এতে করে নিজেদেরই ক্ষতি হয়। প্রতিটি বিষয় সম্পন্ন হওয়ার জন্য একটা উপযুক্ত সময় থাকে। গর্ভবতী হওয়ার আগে কোনো গাভী কিন্তু দুধ দেয় না।
তবুও যদি গাভীর ওলান ধরে টানাটানি করেন, আর গাভীর ওলানে যদি শিহরণ থেকে থাকে, তখন সেটা গাভীকে যৌন নির্যাতন করার সামিল। গাভীরও কিন্তু মন খারাপ হতে পারে। কারণ, আপনারা গাভীকে সিডিউস করে, উত্তেজিত করে, গাভীর কাম নিবারণ করেননি।
লিখেছেনঃ কারিম শাওন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন