ঋণ নিয়ে তৈরী হওয়া এদেশের অবকাঠামোগুলো তারা প্রায় ফ্রিতে ব্যবহার করার চেষ্টা করবে, করছে, কিংবা তাদের সুবিধার জন্য এত এত অবকাঠামো বানানো হয়েছে। কনসার্নের বিষয় তো অনেক। তবে আজকে একটু ভিন্নধর্মী কনসার্নের কথা বলবো।
আপনারা জানেন যে, এয়ারপোর্টের সামনে বিএনপি আমলেই বিশাল বিশাল বিল্ডিং বানানো হচ্ছিল। কিন্তু কাজ লীগ সরকারের আমলে থেমে গেলেও, পরে আবার শুরু হয়। এখন বিশাল শপিং কমপ্লেক্স জাস্ট জমতে দেরী। এইসব বিল্ডিং নিয়ে কিন্তু সচেতন মহলে আপত্তি ছিল যে, এখান থেকে সহজেই এয়ারপোর্টের ইন্টার্নাল অনেক কিছু দেখা যায়, যেটা কিন্তু হিউস সিকিউরিটি ব্রিচ।
মেট্রো রেলের কথাই ধরুন, সেটা দিয়ে যাওয়ার সময় পুরতান এয়ারপোর্ট এখন যেখানে আর্মি এভিয়েশনের আন্ডারে কাজ হয়, সবই কিন্তু উন্মুক্ত - সিকিউরিটির কিছুই না। বলতেসি না যে ভারত এখানে কিছু করবে। বাট এগুলোতে কিছু করা কোন বিষয়ই না এখন বিদেশী এজেন্সীগুলোর জন্য। মনে কি রকমের খামখেয়ালিপনা হলে এমন হতে পারে!
এর আগেও বলেছি, সিলেটের তামবিল দিয়ে চার লেনের হাইওয়ে থেকে শুরু করে এদিকে আগরতলা দিয়ে বিভিন্ন রুট তৈরী হবে হচ্ছে, ভারতীয় পণ্য বহনে জন্য। ঢাকার এক্সপ্রেস হাইওয়েটাও ব্যবহার হবে ভারতীয় পণ্যবাহনগুলো যেন ঢাকার জ্যামে না পড়ে। কিন্তু এর জন্য তারা কোন মূল্য পরিশোধ করবে না। বরং যে ঋণ নিয়ে এসব বানানো হয়েছে, সুদে আসলে সেগুলো আপনাকে আমাকে আমাদের উপার্জনের টাকা থেকে কেটে রাখা হবে। মুদ্রাস্ফীতি করানো হবে। আর টোল শুধু আমাদেরই দিতে হবে।
বাকি রইল রিসেন্ট ভারতীয় ট্রেন ট্রানসিটের খবর। বরং এটা তো অনেক দীর্ষ পরিকল্পনার অংশ। আমরা বছরের পর বছর ধরে বলে আসছি। আপনারা মাঝে মাঝে হয়ত কিছু নিউস দেখে হতচকিত হচ্ছেন।
আপনারা হয়ত জানেন না, ভারতের সেভেন সিস্টার তথা উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে কিন্তু অনেক কয়েলার খনি আছে, সেগুলো মূল ভারতে আনতে তাদের অনেক খরচ পড়ে যায়। তাদের একটা চিন্তা হল সেগুলো হয় ট্রেনে চলে আসবে, অথবা চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে কলকাতা, চেন্নাই সহ ভারতের অন্যান্য বন্দরে পৌছবে।
অনেকে বলাবলি করছে যে, ভারত এসব করবে, তাপর নিজেরাই এসবে হামলা করে সেনা ঢুকাবে। আমার কাছে এটা হাস্যকর মনে হয়। ব্যবসায়ীরা শুধু শুধু জনগণকে ট্রিগার করবে না। যদি ব্যবসা চলতে থাকে, তাহলে তারা সেটা স্মুথলি চলুক সেটাই চাবে। হামলার নাটক করিয়ে তাদের সেনা ঢুকানোর কোন দরকার নেই। বরং হঠাৎ তাদের সেনা ঢুকালে বিদ্রোহ মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে, এতে তাদের ব্যবসার লস হবে।
বরং এখানকার লোকেরাই তাদের সেনা হিসেবে কাজ করবে। বরং এখনই তো করছে। শুরুতে এবং শেষ পর্যন্ত এখানে লড়াইটা হবে ভারতের দালালদের সাথেই। যারা আমার আপনার মত মুসলিম ঘরের সন্তানই হবে হয়ত। বরং একটা অংশ এই প্রবঞ্চনায় দিন কাটাবে যে, এরা তো আমাদেরই ভাই। যদিও ওই ভাইয়ের প্রফেসনালিসমের দোহাই দিয়ে দেশ বেঁচায় অংশীদার হবে, বিনিময়ে পাবে সামান্য কটা টাকার বেতন, আর চাকুরী শেষে পেনশনের আশায় আমাদের বুকে গুলি করতে একটুও দ্বিধা করবে না। আর তখন আপনিই বলবেন উভয়পক্ষই দোষী।
অথচ তখন যদি মু জা হিদরা এসব ভারতীয় বাহনে কোনরকম রেইড দেয়ও, যেটা পার্ফোক্টলি শরীয়তে বৈধ, দেখবেন অনেক অনেক এন্টি ভারতীয় লোকেরাই এর বিরোধিতা করবে, বলবে হায় হায় আমাদের মান সম্মান শেষ কইরা দিলো জনগী গুলা। তারপর বলবে এরা র এরই এজেন্ট। ওদের সেনা ঢুকানোর জন্য এসব করতেসে। ভাইরে ভাই আপনি নিজেই বলতেসেন যে র এর এজেন্ট এসে ভরে গেসে দেশে, সব তারা এমনিতেই খাইতেসে, তাহলে নতুন করে সেনা ঢুকাবে কেনো?
আপনারা কি জানেন যে, সেনা ঢুকানোর অর্থনৈতিকভাবে কত রিস্কি একটা ব্যাপার? তারা ঢুকাবে না যে তা না। তাদের ফ্যানাটিকদের চাপে তা করলেও করে ফেলতে পারে, আবার যদি দেখে ঢুকানোর চেয়ে না ঢুকানোতে লস বেশী যেমন এখানে এমন কোন বিপ্লব হচ্ছে। যেটার কারণে তাদের সব এ্যাসেট ধ্বংস হবে, তখন সেগুলো রক্ষা করতে তারা তা করবে।
এখন আপনি তো বসে আছেন যে, তারা যেন আর না ঢুকে সেটার জন্য। এজন্য আপনার মনস্তত্ত্ব আপনাকে বলবে, এদেশে তাদের এ্যাসেটগুলোর পাহারাদারি করার জন্য। এই মনস্তত্ত্ব আসলে আপনাদের পূর্বপুরুষের। প্রাচীন দ্রাবিড় জাতি অশুভ শক্তির পূজা করতো এই আশায় যে, সে তাহলে তাদের কোন ক্ষতি করবে না। আপনারাই ভারতের এ্যাসেট রক্ষা করার দায়িত্ব হয়ত বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিতে পারেন, এই আশায় যে, হয়ত কেউ এ্যাসেটগুলোর ক্ষতি করে ভারতকে আরো খুল্লামখুল্লা হওয়ার সুযোগ দিবে। এর চেয়ে বড় কলুর বলদ হওয়া কি সম্ভব?
এর কারণ কি? কারণ হচ্ছে এত এত ভারত বিরোধিতা করছেন, অথচ আসলেই কারো তাদের রিয়েল লাইফে ঠেকানোর কোন চিন্তা আছে? আছে জান-মাল দিয়ে দেয়ার চিন্তা? নাকি ভালো পোস্ট, রঙিন পোস্টারের কারণেই কেবল আমরা একটু শেয়ার করে উজ্জিবিত থাকি। এমনিতে কি কুরবানী করার ইচ্ছাটা কেমন? ধরলাম আমাদের দূর্বলতা আছে। কিন্তু যারা কুরবানী করতে পারবে, তাদের সাপোর্ট দেয়ার ব্যাপারে আসলে আমাদের মনোভাবটা কেমন?
আর কুরবানী করাটা আসলে কি? জাতিসঙ্ঘের নিয়ম মেনে, আমরিকাকে আব্বা ডেকে আমরিকার দোস্ত ভারত আমাদের মারে, আব্বা কিছু করো এসব করে কুরবানী হবে? আসলেই কি এরকম চিন্তা না? এগুলো করে ভারত ঠেকাবেন? ভারত ঠেকানোর কৌশলই তো আপনাদের ঠিক না। কৌশল তো পরের কথা নিয়তটাই তো এখন সন্দেহজনক। আমার সুধারণা আছে যে, আপনাদের ভারত বিরোধিতা জেনুইন। কিন্তু ভারতে প্রতিরোধ করতে রিয়েল কোন সলিউশনের কথা বললে, আদৌ কি আপনারা সেগুলো মেনে নিবেন নাকি, বনী ইসরাইলের মত আচরণ করবেন যা তারা মূসা (আ) এর সাথে করেছিল, এ নিয়ে আমারা খুব সন্দেহ আছে। অবশ্যই বনী ইসরাইলরা মজলুম ছিল, অবশ্যই তারা ফেরাউনকে ঘৃণা করতো, কিন্তু তারপরও - নিশ্চয়ই আপনারা কাহিনীগুলো জানেন। আল্লাহ তা'আলা তো অকারণে কুরআনে বারবার সেগুলো বর্ণনা করেন নি।
লিখেছেনঃ Bearded Bengali
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন