ফিক্বহের একটা জিনিস আলেমদের থেকে শুনেছি যে, একই কাজে অনেক সময় হারাম-হালাল মিশ্রিত থাকতে পারে, তখন বিদগ্ধ আলেমরা তাদের শানিত মগজ দিয়ে সেগুলোর সীমারেখা স্পষ্ট বুঝে ফতওয়া দিতে পারেন।
যেমন একটা কাজ আসলগতভাবে হালাল হলে, সেটার পয়সাও হালাল। কিন্তু সেই কাজটা করতে গেলে আরো অনেকে নাজায়িজ কাজে সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আলেমরা একটা জেনারেল রুলিং বলবেন, আবার ব্যক্তি ভেদে সেটার থেকে একটু এদিক সেদিক কাস্টমাইজ রুলিং বলবেন।
যেমন আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশুনা, এর সার্টিফিকেট এবং এরপর সেগুলোর ভিত্তিতে জবের যে বিষয়টা। এখানে কুফর-শিরক যা পড়ানো হয়, তা ছেলে-মেয়ের উভয়ের জন্যই সমানভাবে খারাপ। যদি বেশীরভাগ মানুষ সহশিক্ষার পর্দার বিষয়টা ফোকাস করে, কিন্তু আমার কাছে প্রথম প্রায়োরিটি হচ্ছে আক্বীদার বিষয়টা। পর্দা করেও যদি সেকুলার আক্বীদাধারী হয়, তাহলে আপনারা নিশ্চয়ই হাদিস জানেন যে আমলের মধ্যমে জান্নাতে যাওয়া যাবে না, আল্লাহর কারুণা লাগবে। মুসলিম ব্যতীত আল্লাহর করুণা পাওয়া কি সম্ভব? তাই আক্বীদা ফার্স্ট - আগে সেকুলার লিবারেলদের আক্বীদা থেকে ইসলামে অন্তর থেকে প্রবেশ করানো। তারপর আসলে কোন আমলের ব্যাপরে তাকে ব্যাখ্যা করে উপযোগিতা বুঝাতে হবে না। সে তখন "শুনলাম মানলাম" এর জন্য অলরেডি প্রস্তুত।
"শুনলাম মানলাম" এর ঈমান যাদের নাই, তাদের জন্য নুসুসের দ্বারা সরাসরি স্পষ্ট হালাল-হারাম মেনে নিতে কষ্ট হয়। অর্থাৎ ইস্যুটা আক্বীদার। যা বর্তমানের তথাকথিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে উৎপাদিত তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের নেই, না তাদের পরিবার জানে, কোথাও তারা এই শিক্ষাটা পায় নি। তাই তারা জানে না। এজন্য ভুলভাল বলে, ভাবে। এমনকি তাদের অনেকে ইসলামের প্রতি অনুরক্ত হবার পরও জ্ঞানের অভাবে ওই আগের ভুল চিন্তাগুলো থেকে পুরো বের হয়ে আসতে পারে না, বরং সেগুলোর ভিত্তিতেই চিন্তা করে। এমনও হয় যে, তার মনে হতে থাকে যে, ইসলাম এবং মুসলিমরা কেন তার চিন্তার আনুগামি না। কারণ সে তখনও তার সব ভুল চিন্তাগুলোকে চিহ্নিত করে সেগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে পারছে না। বরং তার চিন্তার প্রাসাদের বড় বড় কিছু পিলারই হচ্ছে সেই ভুল-ভাল দৃষ্টিভঙ্গি। যেটা ভাঙলে তার পুরো মনোজগৎটা ভেঙে পড়বে।
আর এখানেই শুরু হয় হার্ট এ্যান্ড ব্রেইনের খেলা। অনেকে চ্যালেঞ্জটা নেয়। অনেকে নেয় না। নিজেকে সঠিক ধরে, কখনো কখনো সঠিক দৃষ্টিভঙ্গিকেই শত্রু ভাবা শুরু করে।
তো যেটা বলছিলাম হালাল-হারাম মিশ্রিত থাকলে জেনারেল ফতওয়া, কাস্টমাইজ ফতওয়া, আজিমত-রুখসতের আমলের বিষয়গুল ফিক্বহের কিতাবের গুলোতে পাতার পর পাতা লেখা আছে। সেগুলো প্র্যাক্টিস করেই আলেমরা ফতওয়া দেন। তবুও মানুষ হিসেবে কিছু ত্রুটি থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
আক্বীদার বিষয়টার পরই আসে এই হালাল-হারামের বিষয়টা। প্রথমে তো আগে মেনে নিতে হবে। এটা হচ্ছে ঈমান-আক্বীদার বিষয়। এরপর আমলের বিষয়ে যে, যেটা হালাল সেটা কতবেশী করতে পারবো, তারপর যেটা হারাম সেটা কত বেশী এড়াতে পারবো।
ধরেন এখন রাস্তা-ঘাট, অফিস-স্কুল কলেজে ছেলে-মেয়ে সকলেই যায়। কিছু ছেলেরা বলে মেয়েরা পর্দা করে না কেন, তাদের কারণে আমাদের সমস্যা হয়, আবার এর প্রতিক্রিয়ায় কিছু মেয়েও দাবী করে যে, পর্দা তো আমাদের একলা না। আমরা ঘর থেকে বের হলে যদি আমাদের গুনাহ হয়, কেন তোমরা বের হলে তোমাদের গুনাহ হয় না? এটাতো হিপোক্রেসি।
এখানে ফ্যালাসিটা হলো, ঘর থেকে আমি বের হবো কেনো? মূল কারণ হল আমার জীবিকা নির্বাহের জন্য, মুয়ামালাতের জন্য, সামাজিক ব্যবস্থাপনার জন্য ইত্যাদি। এটা কার জন্য সরাসরি জরুরী করা হয়েছে? অবশ্যই পুরুষদের জন্য। এখানে একটা ফিক্বহী বিষয়ও বর্তমানে আক্বীদার জায়গায় পার্থক্যটা স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, পুরুষদের উপার্জন করতে হবে, এবং নেতৃত্ব পুরুষদের। এবং এর জন্য ঘরে বসে থাকা যায় না, তাকে বাহিরে ঘুরে ঘুরে পরিশ্রম করতে হবে, যমীনে ছড়িয়ে পড়তে হবে।
অর্থাৎ স্পেসটা আসলগতভাবে পুরুষদেরই। তাই যদি পুরুষরা প্রথমে দাবী করে আমাদের স্পেসে মেয়েরা এসে সমস্যা করতেসে এটা একটা লেজিট দাবী। কারণ স্পেসটা তাদের জন্যই ডিনোট করা, কুরআন অনুযায়ী, আহলুস সুন্নাতের অবস্থান অনুযায়ী। আপনি মানেন না, মানে আপনার আক্বীদা আসলে আহলুস সুন্নাতের আক্বীদার ভিত্তিতে না। আপনি যেভাবে আসলে বেড়ে উঠেছেন, ওগুলোই আপনার চিন্তার মাপ-কাঠি - সবক্ষেত্রেই কুরআন-হাদিস না - এটাই তিক্ত সত্য - কারণ আপনি তো এক্ষেত্রে কুরআন-হাদিসটাই মানছেন না, যদি বলেন যে, বাহিরের স্পেসট পুরুষদের জন্য দেয়া হয় নি, নেতৃত্ব তাদের জন্য দেয়া হয় নি।
যদি মেনে নেন, এবং এরপর বলেন যে, মেয়েরা বাহিরে গেলে, স্কুল-কলেজে কিংবা অফিসে গেলে যদি পর্দার সমস্যা হয়, তাহলে যেসব ছেলেরা যায়, তাদের কি হচ্ছে না পর্দার লঙ্ঘন? তাহলে শুধু মেয়ের বিরুদ্ধে বলা আর এদের ছেড়ে দেয়, এটা কি হিপোক্রেসি না?
উত্তর হচ্ছে না। কারণ হিপোক্রেসিটা আপনার কথা। ছেলেরা আগে থেকেই বাহিরে ছিল, মেয়েরা পরে ছেলেদের স্পেসে গেছে। এখন ফিতনা দমনের একটা উসূল হল ফিতনার আগে যে অবস্থা ছিল সেটায় ফিরে যাওয়া। যেমন আমরা প্রোগ্রামিং এর ক্ষেত্রে কোড চেইঞ্জ করার পর কাজ না করলে, আবার পিছনের ফিরে যাই যখন কাজ করতো।
অর্থাৎ মেয়েদের আবার ঘরে ফেরত যেতে বলাই হচ্ছে ফিতনা নিরসনের প্রথম স্টেপ, শেষ স্টেপ না। এরপরও আরো স্টেপ আছে অবশ্যই। পাপের ক্ষেত্রে যেটা বলা হয় ছেলে-মেয়ের উভয়ই যা তা করছে, কিন্তু ছেলের জন্য অজুহাত আছে যে, আমার তো বাহিরে থাকা লাগবে, পরিবারের জন্য হলেও প্রোভাইড করা লাগবে, তাই আমার মেয়েদের সাথে ইন্টার্যাকশন হলেও আমি হয়ত এজন্য ক্ষমার আশা করতে পারি। যদিও তাকে তওবা করতে থাকতে হবে।
কিন্তু একটা মেয়ে কি বলবে? তার তো এই দায়িত্ব ছিল না যে, যমীনে ছড়িয়ে পড়বে রিযিকের তালাশে, ছিল কি? এই টপিকে আহলুস সুন্নাহর সাথে একমত না হলে আসলে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। আপনারা আপনাদের পূর্বের সেকুলার জীবনের আইডিয়াতেই আছেন এক্ষেত্রে বলতে হয়।
হ্যাঁ সেইসব মেয়ে অজুহাত পাবে, যারা কিনা আসলেই প্রয়োজনের তাগিদে বাহিরে বের হয়ে কষ্ট করছে, অথবা কোন "কিফায়া" আদায় করছে। যেমন নিজস্ব জরুরত, ডাক্তার, নার্স, টিচার - এরক আরো অনেক বিষয় যেগুলো মেয়েরা ছাড়া হবে না - যেগুলো কিছু মেয়ে আদায় করলে সবার জন্য যথেষ্ঠ হয়ে যাবে। এটা ইবদাতের ফরজে কিফায়া না, কিন্তু অনুরূপ যে, দুনিয়ার ব্যবস্থাপনার কাজে এ্যাটলিস্ট যতজন দরকার ততজন, এটা বাই ডিফল্ট না, এটা কাস্টমাইজড আর কি। মসুলিমদের হুকুমত এইরকম কিফায়া কাজগুলোতে পর্যাপ্ত নারী রেডি রাখবে, ফিল্ডে রাখবে, রিসার্ভ রাখবে। তারা বিভিন্ন অজুহাত আল্লাহর কাছে বলতেই পারে, এবং আমরাও আশাও রাখি যে, আল্লাহ তা'আলা সেগুলো এক্সেপ্ট করবেন - অর্থাৎ সামাজিক, রাষ্ট্রিয় ব্যবস্থাপনার কিফায়া কাজ করতে গিয়ে পারিবারিক কাজে কষ্ট হওয়া, কমতি হওয়া।
অর্থাৎ বিষয়টা হল জরুরতের ভিত্তিতে কাজ। ছেলেদের ক্ষেত্রেও অনুরুপ যে, সে তো হারাম একটা পরিবেশে ঢুকছে, সে যতটুকু পারে হালাল খুঁজবে, হারাম এড়াবে। কিন্তু আমি তাকে বাহিরের মার্কেট ছেড়ে দিতে বলবো না, যতটুকু মেয়েকে বলবো। কিন্তু এখানে যদি আপনার মনে হয় নারী-পুরুষ ডিসক্রিমিনেশন করা হচ্ছে, তাহলে এটা আপনার আক্বীদার সমস্যা। হয়ত আপনি ইসলামকে জেনুইনলি ভালোবাসেন, সত্য মানেন - তারপরও এটা আপনার আক্বীদাগত সমস্যা। কারণ এখানে আপনি নারী-পুরুষ সমঅধিকারের দাবী করছেন টেকনিকাললী। সমঅধিকার না হলে সেটা বেইনসাফি এবং হিপোক্রেসি ভাবছেন। আমি নিজেই এরকম বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে কমিউনিটির মধ্যে দেখছি, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে। তার হিজাব এমনকি নিকাবও হয়ত করেন, কিন্তু সমাধিকারের সেকুলার কনসেপ্ট থেকে আসলে সেই অর্থে বের হতে পারেন নি।
তাদের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, তাদের দাবী যে ছেলেদের না বলে আমাদের বলা হচ্ছে কোনো? বাস্তবতা হলো উভয়কেই বলা হয়, বাট নারীদের ফিল্ডটা ছেড়ে দিতে বলা হয়, ছেলেদের না, কারণ ফিল্ডটা ছেলেদের জন্য। এটা হচ্ছে বেইস কেইস, বাই ডিফল্ট - তখন তারা এক্সেপশনাল কেইসগুলো নিয়ে আসেন যেমন ডাক্তারের বিষয়টা। যেমন "তোর বউরে দেখুম কেন ডাক্তারের কাছে নেস" - এই আর্গুমেন্টটা এবং এটার টোন প্রমাণ করে যে, এটা সফিস্টিকেটেড না এবং আবেগ তাড়িত প্রতিক্রিয়া। ইন্টালেকচুয়াল গ্রাউন্ড নাই। কারণ বেইস কেইসের বিপরীতে, একটা স্পেশাল কেইসকে দাড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে, অথচ এই স্পেশাল কেইসের জন্য কাস্টমাইজ সলিউশনও আহলুস সুন্নাহ প্রোভাইড করে। যেটা তারা হয় জানে না, বা স্বীকার করে চায় না। কিংবা ডগমাটিক প্রি-এ্যসাম্পশন যে, এগুলো তো এসব হুজুর, পুরুষতান্ত্রিক লোকদের নিজস্ব মনগড়া কাঠমোল্লাগিরী। বিষয়টা মোটেও তা না, কিফায়া কাজে জন্য যথেষ্ঠ মেয়েরা বাহিরে কাজ করতে পারবে, বাট সেটা স্পেশাল কেই, বেইস কেইস না। আহলুস সুন্নাহ যথেষ্ঠ ডাইনামিক, ইফ নট অনলি বেস্ট পসিবল ডাইমিক এবং অপটিমাইজ সলিউশন প্রোভাইড করে।
অথচ তাদের দাবীর না আছে কোন নুসুস ভিত্তিক ডকুমেন্টেড চেইন আর না আছে তদের ধারাবাহিক কোন যুক্তি। বরং তাদের হচ্ছে এক চিমটি ইসলাম, দুই চিমিটি সেক্যুলারিজম, একটু ক্রাই বেবী এ্যাটাম্পট, ভিকটিম কার্ড - যেগুলো দিয়ে কোন সফিস্টিকেটেড গ্রাউন্ড তৈরী হয় না, মাকড়শার জাল ছাড়া। খালি টাকা আর ক্ষমতার জোরে সেক্যুলাররা এখন তাদের এই ফেইলিং সিস্টেমটা চাপায় আমাদের দূর্দশাগুলো বাড়ায়া নিতে পারতেসে। কিন্তু তারা তো তাদের ক্ষেত্রে ওপেন যে, তারা সংসার চায় না, ওড়না চায় না হিজাব তো দূর কি বাত! বিয়ে বাদ দাও, লিভিং এ যায়ও, হেন তেন লদবদক কত কি। কিন্তু সাথে তো আমার ইমোশনাল সাপোর্টও লাগে, সংসারও লাগে। তখন তারা দুই নৌকায় পা দিয়ে দুই দুনিয়ার স্টার হবার ইউটোপিক চিন্তা লালন করতে থাকে। যখন মিলে না, তখন শুরু হয় আরে, যারা আমার সাথে দ্বিমত করছে - তারাই আসলে মনে হয় ভুল করছে। ভুল তো ভুলই অপরাধ করছে।
আপনি যদি আহলুস সুন্নাহর মানুষ হন, তাহলে আপনাকে আর অলরেডি সলভ ইস্যুকে আবার প্রশ্ন করার প্রয়োজন নেই। আপনি শুনবেন মানবেন। ছেলেরা নেতৃত্ব দিবে, যমীনের ছড়িয়ে পড়বে। মেয়েরা ঘরের ব্যবস্থাপনা করবে। বাহির থেকে আসা পুরুষদের বাহিরের স্ট্রেস যেন ঘরে এসে নাই হয়ে যায়, এমন ম্যাজিক তৈরী করবে। হ্যাঁ ছেলেরা যত এক্সপোসার পাবে, সেলিব্রেটি হবে মেয়েদের হয়ত ঘরের ভিতর থাকলে শো-অফের কোন সুযোগ থাকবে না। বাহবা পাবে না, কেউ তেল মারবে না - যেটার ক্রেইভিং কিন্তু তাদেরও প্রকটভাবে আছে। এই ক্রেইভিং এর গাছে পানি ঢেলে ঢেলেই কিন্তু ফেমিনিসম তৈরী হয়। আমারো একটা আইডেন্টিটি হবে, আমিও সমাজে রিকোগনাইসড হবে, লোকে বাহাবা দিবে, আমি পার্ট নিবো, ফ্ল্যেক্স করবো এই বিষয়গুলো মনে আসে। আমি এই আমি সেই হবো, এই ইন্ডিভিজুয়ালিসম তারা মিডিয়া, শিক্ষাব্যবস্থা, সমাজ, পরিবার থেকে ছোট থেকেই পাচ্ছে। তাকে আসলে পুরো বিষয়টাকে, এতদিন ধরে তৈরী করা স্বপ্নের মনোজগৎকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হচ্ছে। সাথে সাথে সার্ভাইবেলের জন্য এটাকে ফরজ হিসেবে নেয়ার পপুলার চিন্তাটা তো সমাজে প্যারালালই প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে যে, তোমরা না কামালে আসলে টিকতে পারবা না!
এমনকি বাস্তবে যারা এসব পারবে না কখনো, আসলে বেশীরভাগ মেয়েরাই কর্পোরেট ক্যারিয়ারে বেশী দূর যেতে পারে না, খুব প্রিভিলেজড না হলে, যেখানে বেশীর ভাগ ছেলেরাই পারে না। তাহলে তারা করে কি? তারাও মনে মনে কিন্তু "নিজেকে মুই কত হুনরে "এরকম স্বপ্ন সাজিয়ে মনে মনেই ডোপামিন রিলিজ করতে থাকে। কিন্তু যখন এই আইডিয়াকে চ্যালেঞ্জ করা হয়, আবার অনেকে সেটা সেলিব্রেটও করে, সেটা তাদের খুব ট্রিগার করে, কষ্ট দেয় - তারা মেনে নিতে পারে না - আবেগ প্রবণ হয়ে যায়। কারণ সে বাস্তবে পাচ্ছে না, তো মনে মনে ফিল নেয়াতে মানুষজনের কথায় প্রশ্নবোধক চিহ্ন চলে এসেছে - এগুলো কি মানা যায়? এজন্য তারা তখন প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে যায়। লা'নতও দিতে থাকে। এবং যারা তারা কমফোর্টজোন, এতদিনকার বানানো চিন্তার প্রাসাদের পিলার ধরে নাড়াচাড়া করছে, তাদের দোষ-ত্রুটি খুঁজতে ব্যস্ত হয়। এমনকি যদি তা না পায়, তারা মেইড আপ দোষ-ত্রুটি বলা শুরু করে। কখনো কখনো যেই দোষ তাদের আছে, সেটাই তারা উল্টো প্রতিপক্ষের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়। চোখকান একটু খোলা রাখলেই খেয়াল করবেন বিষয়টা।
কারণ হালাল-হারাম মেইন্টেইন করা কঠিন করছে তারা। তারা জেন্ডার রোলটা মেনেও আবার মানছে না। তাদের মনে মনে হলেও ফিলিং গুড ইসলাম বলতে হবে কেবল, তেল ছাড়া আর কিছু মারা যাবে না। অথচ একই অভিযোগ তারাই করছে যে, মানুষের জন্য নাকি কঠিন বানিয়ে দেয়া হচ্ছে। কোনটা কঠিন? বাহিরে বসের সব ফরমাইশ পালন করে এসে আবার ঘরের কাজ করা নাকি, যে কোন একটা কাজ করা? তখন তারাও বলবে যে যেকোন একটা কাজ করা। তো তার বলবে, তাহলে আমরা বাহিরেরটা করি, আর তাদের বিরোধীরা বলবে ঘরেরটা করো। ইনিশিয়ালি তারা বলেছিল আমরা ঘরে বাহিরে সবই একসাথে করতে পারবো। এরপর বলেছে, দুইটা একসাথে সম্ভব না, এত কিছু চাপায়া দেয়া তো জুলুম। একটা বেছে নিতে বলা হলে বাহির বেছে নিতে চাইবে, কারণ বাহিরেই তো তেল, এক্সপোসার, পার্ট - নিজেকে কিছু একটা ভাবার - প্রমাণ করার সুযোগ। এরপর ঝামেলা লাগার পর যখন আর্গুমেন্টে আবারো ঘর জিতবে, তারা আবার ইনিশিয়াল পজিশনে গিয়ে বলা শুরু করবে, আমরা ঘর-বাহির উভয়টাই পারি। কয়দিন পরে আবার শুরু হবে না, এতগুলো চাপানো জুলুম, ভাগ করে করে কাজ করতে হবে। লুপ চলতেই থাকবে।
কোন জেন্ডার রোল নেই। ঘরের কাজও পুরুষদের বাধ্যতামূলক শেয়ার করে করতে হবে। তাহলে তো সেকুলারিসমই হলো। ইসলামের ডিফরেন্ট সলিউশনটা তাহলে কোথায়। কিন্তু সেটা তারা মানবে না। ইসলামেরটাকে বলবো, নারীবিদ্বেষীদের বানানো। আর পুঁজিবাদী সেকুলারদের সিস্টেমটা সটা যতই এক্সপ্লয়েট করুক না কেন, সেটাকেই এনে ইমপ্লিমেন্ট করতে বলবে হুবুহু, অথবা একটু ইসলামিক কাস্টমাইসড করে। অর্থাৎ জেন্ডার রোল বাদ দিয়ে, পুরুষ থেকে নারী চেইন অব কমান্ড বাদ দিয়ে, শুধু ইউনিয়ন পদ্ধতি সেইম রোল পদ্ধতিতে সংসার চালাবে। যেটা আসলে লিভিং রিলেশনশীপেরই অনুরূপ। যেখানে কেউ কারো অধিনস্ত নয়। বিষয়টা অনেক ইসালমিক লিভিং রিলেশন তৈরীর পদ্ধতির মত। কিন্তু দিন শেষে তাদেরও একটা পার্ফেক্ট ফ্যামিলির ক্রেইভিং থাকে। তারা যে আসলেই দুইটা চায়। আর মনোজগতে চলতে থাকে ব্যাটল অফ হার্ট এ্যান্ড মাইন্ড - মন আর মাথার যুদ্ধ।
লিখেছেনঃ Bearded Bengali

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন