মেটাভার্স স্বপ্নীল ভুবনে মিথ্যার ধোঁয়াশা

 

বর্তমান প্রযুক্তির ধোঁকাগুলোই মানুষ ধরতে পারছে না, সেখানে মেটাভার্সের মতো বড় প্রকল্পের ধোঁকা মানুষ বুঝতে পারবে- সে এক অলৌকিক কল্পনা বৈঠক নয়। এখন তো মানুষ সাধারণ ফেসবুক, গেইম ও মুভির নেশায়ই ডুবন্তপ্রায়। তাহলে মেটাভার্সের যুগে মানুষের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা কি কখনো কল্পনা করতে পারেন? বস্তুত সে সময়টা দুনিয়াবিশ্বাসী লোকদের স্বর্ণযুগ হলেও আখেরাতে বিশ্বাসী মুমিনদের জন্য হবে অগ্নিযুগ। বর্তমানের থ্রি'জি ও ফোর'জি যুগের ইন্টারনেটেই যেখানেই আমাদের যুবসমাজ মৃতপ্রায়, সেখানে ফাইভ'জি ও সিক্স'জির যুগে আমাদের অবস্থা কেমন হবে, ভাবা যায়? শুধু আমরা কেন, শিশু বা বৃদ্ধরাও কি নিরাপদ থাকবে? না, বস্তুত সেসময় ফিতনার আগুন প্রায় প্রতিটি মানুষকে গ্রাস করে নেবে, কেবল তারা ব্যতীত যাদেরকে আল্লাহ বিশেষভাবে রহম করবেন। সে সময়ে ইমান-আমলের ওপর খুব কম মানুষই অবিচল থাকতে পারবে। আল্লাহ আমাদের সহজ করে দিন।


দাজ্জাল আসার আগেই যদি হয় মানুষের এ অবস্থা, দাজ্জাল আসলে কী অবস্থা হবে! মিথ্যা মিডিয়া ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ধোঁকায় দাজ্জালকে চিনবেই বা ক’জনে? মানুষ তো তাকে পুরো পৃথিবীর ত্রাণকর্তা ও রবই ভেবে বসবে!( والله أعلم )

ভবিষ্যতের প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, তাতে বাহ্যিকভাবে আমাদের জীবনযাত্রার মান বাড়লেও কমছে মানবতা, নৈতিকতা, দ্বীনদারিতা ও ইমান-আমলের মান। দাজ্জাল কবে আসবে, সেটা তো নিশ্চিত বলা যাবে না। তবে সে আসার আগেই যা শুরু হতে যাচ্ছে, তাতে দাজ্জালের আগেই অসংখ্য মানুষ ইমানহারা হতে শুরু করবে। (والله أعلم )

ইমানের নূর হারিয়ে সারাদিন সে পড়ে থাকবে জীবন্ত মুভি, ফিজিক্যাল প•র্ন ও বাস্তবভিত্তিক গেমস নিয়ে। এ প্রজন্মের যুবক–যুবতীরা ছোটকালে মক্তবের নূরানি সংস্পর্শে কিছুটা হলেও তো ঈমানি চেতনা রাখে, কিন্তু দ্বীন-ইসলামের সাথে সম্পর্কহীন আগামী প্রজন্ম সে চেতনাটা কোথায় পাবে? কে তাদের দেখাবে পথের দিশা? কে দূর করবে তাদের এই অপূর্ণতা,তারা কি চেষ্টা করবে?( والله أعلم )


হয়তো শীঘ্রই সে যুগ আসছে/ইতিমধ্যে চলে এসেছে.

 যখন জমিনের পিঠের চেয়ে পেটই হবে উত্তম আবাসস্থল, যখন লোকালয় থেকে পাহাড়ের নির্জন গুহাই হবে অধিক নিরাপদ। তখন মুমিনদের দুনিয়া হবে সংকীর্ণ, আর ফাঁসিক ও কাফিরদের দুনিয়া হবে প্রশস্ত। বর্তমান সময়েও অনেক জায়গায় এটা প্রযোজ্য, কিন্তু ভবিষ্যতে এটা হবে ব্যাপক ও বিস্তৃত। সে সময় আসার আগেই তাই একজন মুমিন প্রস্তুতি গ্রহণ করে। হয় সে গ্রহণ করে নির্জন পথ, হারিয়ে যায় লোকালয় হতে দূর বহুদূর, নয়তো সে গ্রহণ করে বজ্রকঠিন শপথ, আর চলে যায় আল্লাহর রাস্তায় তাঁর ক্ষমা ও জান্নাতের আশায়। সময় আসার আগেই তাই ভেবে রাখা উচিত, কোন পথে মুক্তি, কোন পথে ফিতনা থেকে অব্যহতি, আর কোন পথে মহান রবের সন্তুষ্টি। চিন্তাভাবনা না করে সময়ের প্রবাহের গা ভাসিয়ে চলতে থাকলে কখন যে কে কোন ফাঁদে আটকা পড়বে, কেউ বলতে পারে না। বেলা থাকতেই চাই ইলম ও আমল, দুআ ও ইসতিগফার, সচেতনতা ও সতর্কতা।


মৃত মেয়েকে মেটাভার্সের মাধ্যমে বাস্তবে রূপ দেওয়া এ যেন দাজ্জালের মৃত মানুষ কে জীবিত করার ভয়ংকর সেই দাজ্জালী ফিতনা,যা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দোহাই দিয়ে মুমিনের রবের প্রতি বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত!

বর্তমানে মুসলমানের ঈমান আকীদার যে করুণ অবস্থা,না জানি কখন সব দলে দলে ঈমান হারা হয়ে জীবন কাটাতে থাকে আর এভাবেই মৃত্যুর পেয়ালায় চুমুক দেয়!


আস্তাগফিরুল্লাহ,আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ!

আল্লাহুম্মাগফিরলী!


দাজ্জালের কপালে লিখা কাফের মুমিন ছাড়া কেউ পড়তে পাবে না। তাই আমি মুসলিম এটা ভেবে আত্মতৃপ্তিতে না ভুগে আমার ঈমান ঠিক আছে কিনা,আমি মুমিন কিনা এটা আগে পরিক্ষা করা দরকার।(আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা হেফাজত করুন আমাদের)

 দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার দোয়া।


اللهم اني اعوذ بك من عذاب القبر و من عذاب النار ومن فتنه المحيا والممات ومن فتنه المسيح الدجال.


উচ্চারণ : আল্লহুম্মা ইন্নি আ'উজুবিকা মিন আ'জাবিল ক্ব'বরি ওয়া মিন 'জাবিন্নারি ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহ ইয়া ওয়াল মামাতি ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ্দাজ্জাল।


" হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে কবরের শাস্তি, জাহান্নামের শাস্তি, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।

সূত্র : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) উল্লিখিত দোয়া পাঠ করতেন।

(সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৩৭৭)


আমার তো মনে হয়,আমাদের অগোচরে দাজ্জালের ফিতনা শুরু হয়ে গেছে যা আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারছিনা।আমাদের এখন থেকেই ঈমান রক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে।সেজন্য আমাদের প্রত্যেকের উচিত ইসলামকে ভালো ভাবে জানা।আল্লাহর কাছে একে অপরের জন্য দোয়া করা যেন আমরা প্রত্যেকেই ঈমানের উপর অটল থেকে মৃত্যু বরণ করতে পারি। 


প্রতি জুম্মাবার সূরা কাহাফ তিলাওয়াত,বেশি বেশি ইস্তেগফার,দুরুদ আর দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার দুআ পড়া ছাড়া ঈমান টিকিয়ে রাখার উপায় নেই!


হাদিসে আছেঃ “এমন এক সময় আসবে যখন মুসলমানদের জন্য ইমান ধরে রাখা,জ্বলন্ত কয়লা হাতের মধ্যে রাখার ন্যায় কঠিন হবে।”


আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা নিজ কুদরতে হেফাজত করুন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন