আকীকা বিষয়ক প্রশ্ন ও উত্তর



উত্তর প্রদানে : ফতোয়া বিভাগ, মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা

প্রশ্নঃ

ক) আকীকা কী ও তার হুকুম কী? 

খ) আকীকা আদায়ের সময় নির্দিষ্ট আছে কি না এবং তা আদায়ের নিয়ম কী? 

গ) নিজের আকীকা নিজেই আদায় করতে পারবে নাকি তা পিতাকেই আদায় করতে হবে এবং এ আকীকার গোশত পিতামাতা ও আত্মীয়রা খেতে পারবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।


উত্তরঃ

সন্তান জন্মের পর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের লক্ষ্যে জন্মের সপ্তম দিনে পশু যবাই করাকে আকীকা বলে। আকীকা করা মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে এর প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সন্তানের আকীকা করার ইচ্ছা করে সে যেন তা পালন করে। ছেলের জন্য সমমানের দুটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭৯৬১

অন্য হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সন্তানের সাথে আকীকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (অর্থাৎ পশু যবাই কর) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৪৭২

সন্তান জন্মের সপ্তম দিন আকীকা করা উত্তম। জামে তিরমিযীর এক হাদীসে সপ্তম দিনে আকীকা করার কথা বলা হয়েছে। -হাদীস : ১৫২২

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দৌহিত্রদ্বয় হাসান ও হুসাইন রা.-এর আকীকা সপ্তম দিনে করেছেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮৩৪

তাই সম্ভব হলে সপ্তম দিনেই আকীকা করা উত্তম।

সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে চৌদ্দতম দিনে বা একুশতম দিনে করা ভালো। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন, আকীকা সপ্তম দিনে হওয়া উচিত। তা সম্ভব না হলে চৌদ্দতম দিনে। এবং তাও সম্ভব না হলে একুশতম দিনে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯

অবশ্য একুশ দিনের মধ্যে করা না হলে পরবর্তীতেও তা আদায় করা যাবে।

সন্তানের আকীকা করার দায়িত্ব তার পিতার। অবশ্য অন্য কেউ বা নিজেও নিজের আকীকা করা জায়েয আছে।

আকীকার গোশত সন্তানের পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন সকলেই খেতে পারবে। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আকীকার গোশত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং কিছু সদকা করবে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯

সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রাহ. বলেন, আমি আতা রাহ.-কে বলতে শুনেছি, ... আকীকার গোশত তার পরিবার খেতে পারবে এবং হাদিয়াও দিতে পারবে। ... আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তা কি সদকা করে দিতে হবে? তিনি বললেন, না,তুমি চাইলে খেতে পার এবং হাদিয়াও দিতে পার।... (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭৯৬৯)

-ফাতহুল বারী ৯/৫০৭; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৩/৩৭০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; আলমাওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ, কুয়েত ৩০/২৭৬; তুহফাতুল মাওদূদ বিআহকামিল মাওলূদ ৭৮

*****

প্রশ্নঃ

আকীকা করা মূলত কার দায়িত্ব? বাবার বর্তমানে দাদা, নানা বা অন্য কেউ যদি আকীকা করে তাহলে কি আকীকা আদায় হবে?

ছোটবেলায় কারো যদি আকীকা না হয়ে থাকে তাহলে বড় হয়ে সে কি নিজের আকীকা নিজে করতে পারবে?

উত্তর

সন্তানের আকীকার দায়িত্ব বাবার। বাবার সামর্থ্য না থাকলে যদি মা সামর্থ্যবান হন তবে মা সন্তানের আকীকা করবেন। অবশ্য বাবা-মা সামর্থ্যবান হোক বা না হোক উভয় অবস্থায় তাদের সম্মতিতে দাদা, নানা বা যে কেউ আকীকা করলে আকীকা সহীহ হয়ে যাবে।

আকীকা সপ্তম দিনে করা উত্তম, তা না পারলে চৌদ্দতম দিনে বা একুশতম দিনে করবে। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

وَلْيَكُنْ ذَاكَ يَوْمَ السَّابِعِ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ فَفِي أَرْبَعَةَ عَشَرَ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ فَفِي إِحْدَى وَعِشْرِينَ.

আর তা (আকীকা) যেন সপ্তম দিনে করা হয়, যদি সপ্তম দিনে করা না হয় তবে চৌদ্দতম দিনে এবং চৌদ্দতম দিনে করা না হলে একুশতম দিনে করবে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯

আর এ সময়ের ভেতর যদি আকীকা করা না হয় তাহলে পরেও করা যাবে।

কারো যদি ছোটবেলায় আকীকা করা না হয়ে থাকে এবং সে বড় হয়ে নিজের আকীকা নিজে করতে চায় তাহলে সেটারও সুযোগ আছে। বিখ্যাত তাবেয়ী মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন রাহ. বলেন, আমি যদি জানতাম যে, আমার আকীকা করা হয়নি তাহলে আমি নিজেই আমার আকীকা করতাম। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৪৭১)

-জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫২২;; ফয়যুল বারী ৪/৩৩৭; তুহফাতুল মুহতাজ ১২/২৯৩; ফাতাওয়া রহীমিয়া ১০/৬১-৬২

*****

প্রশ্নঃ

আমরা জানি, সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সপ্তম দিন চুল কাটা, আকীকা এবং নাম রাখতে হয়। আমার জানার বিষয় হল, এ তিনটির মধ্যে কোনটি আগে আর কোনটি পরে করতে হয়। এক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করার কোনো নিয়ম শরীয়তে আছে কি?

উত্তরঃ

এই তিনটি কাজের মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি নয়। আগে পরে যেভাবেই করা হোক তা আদায় হয়ে যায়। তবে সন্তানের মাথার চুল কাটার আগে আকীকা করা মুস্তাহাব। হযরত ইবনে জুরাইজ রাহ. বলেন, বাচ্চার মাথার চুল কাটার পূর্বে যবাই করবে। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৩০)

আর আকীকার আগে বা পরে এমনকি সপ্তম দিনের আগেও সন্তানের নাম রাখা যায়। তবে আকীকা করার আগেই নাম রেখে নেওয়া উত্তম।

তাবেয়ী কাতাদাহ রাহ. বলেন, প্রথমে বাচ্চার নাম রাখা হবে। অতপর সপ্তম দিন (পশু) যবাই করা হবে এবং এরপর মাথা মুন্ডানো হবে।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৩৩; কিতাবুল মাজমূ’ ৪/৪০৭, ৮/৪১৫; আলমুফাসসাল ফী আহকামিল আকীকাহ; তুহফাতুল মাওদূদ বিআহকামিল মাওলূদ ৮৬, ৯৯; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৩৯৭

*****

প্রশ্নঃ 

নবজাতক বাচ্চার চুল ৭ম দিন কাটা কী? ৭ম দিনের আগে বা পরে কাটা যাবে কি না? চুলের ওজন পরিমাণ রূপা-সোনা সদকা করার বিধান কী? আর এর মধ্যে কোনো হিকমত আছে কি? যদি এক বছর পরে আকীকা করা হয় তাহলে ঐ সময়ও কি চুল কেটে তার সমান রূপা-সোনা সদকা করতে হবে?

এই চুল কাটা এবং আকীকা উভয়টি একসাথে করতে হবে নাকি আগে পিছে করলেও হবে। অর্থাৎ ৭ম দিনে চুল কাটা হল আর ১ বছর পর আকীকা করা হল। দয়া করে বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তরঃ 

সন্তান জন্মের ৭ম দিনে অভিভাবকের দায়িত্ব হল, সন্তানের আকীকা করা, মাথার চুল মুণ্ডন করা এবং তার সুন্দর নাম রাখা।

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সন্তান আকীকার সাথে দায়বদ্ধ থাকে। তার পক্ষ থেকে সপ্তম দিনে পশু জবাই করবে, নাম রাখবে ও মাথা মুণ্ডন করে দিবে।-জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫২২

সপ্তম দিনে আকীকা করা, মাথা মুণ্ডন করা এবং নাম রাখা মুস্তাহাব। তবে এ তিনটির কোনোটি অপরটি সাথে শর্তযুক্ত নয়। তাই কারো আর্থিক সামর্থ্য না থাকার কারণে সে যদি ৭ম দিনে আকীকা করতে না পারে তাহলেও ঐ দিন সন্তানের মাথা মুণ্ডন করে দিবে এবং নামও রাখবে। আকীকা করতে বিলম্ব হলেও এসব কাজে বিলম্ব করবে না।

আর হাদীস শরীফে যেহেতু সপ্তম দিনে মাথা মুণ্ডন করতে বলা হয়েছে তাই সপ্তম দিনের আগে মুণ্ডন না করাই উচিত।

মাথা মুণ্ডন করার পর চুলের ওজন পরিমাণ রূপা বা স্বর্ণ সদকা করা মুস্তাহাব।

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান রা.-এর আকীকা দিয়ে ফাতেমা রা.-কে বললেন, তার মাথা মুণ্ডন করে দাও এবং চুলের ওজন পরিমাণ রূপা সদকা করে দাও। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫১৯

অপর এক হাদীসে রূপা বা স্বর্ণ সদকা করার কথাও এসেছে। -আলমুজামুল আওসাত, হাদীস ৫৫৮; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস ৬২০৪; ইলাউস সুনান ১৭/১১৯

রূপা বা স্বর্ণ সদকা করার হেকমত সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রথম কথা হল, উক্ত সদকার হেকমত সম্পর্কে হাদীস শরীফে যেহেতু কিছু বলা হয়নি তাই এর রহস্য বা হেকমত অনুসন্ধানের পিছনে না পড়াই ভালো। বান্দার কাজ হল, বিধি-বিধানের হেকমতের পিছনে না পড়ে শরীয়তের হুকুম পালন করে যাওয়া।

অবশ্য শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী রাহ.-এর একটি কারণ এই লিখেছেন যে, সন্তান যে চুলসহ ভূমিষ্ট হয়েছিল তা কেটে ফেলার মাধ্যমে সন্তান একটি অবস্থানে পদার্পণ করে। তাই এর শুকরিয়াস্বরূপ ঐ চুলের বিনিময়ে সদকা করার হুকুম দেওয়া হয়েছে (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা ২/১৪৫)। আর কোনো কারণবশত বাচ্চার চুল যদি সপ্তম দিনে কাটা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে সপ্তম দিনের চুলের ওযন অনুমানে রূপা বা স্বর্ণ সদকা করে দিবে।

*****

২৩২০. প্রশ্নঃ 

আমরা জানি, সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সপ্তম দিন চুল কাটা, আকীকা এবং নাম রাখতে হয়। আমার জানার বিষয় হল, এ তিনটির মধ্যে কোনটি আগে আর কোনটি পরে করতে হয়। এক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করার কোনো নিয়ম শরীয়তে আছে কি?

উত্তরঃ 

এই তিনটি কাজের মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি নয়। আগে পরে যেভাবেই করা হোক তা আদায় হয়ে যায়। তবে সন্তানের মাথার চুল কাটার আগে আকীকা করা মুস্তাহাব। হযরত ইবনে জুরাইজ রাহ. বলেন, বাচ্চার মাথার চুল কাটার পূর্বে যবাই করবে। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৩০)

আর আকীকার আগে বা পরে এমনকি সপ্তম দিনের আগেও সন্তানের নাম রাখা যায়। তবে আকীকা করার আগেই নাম রেখে নেওয়া উত্তম।

তাবেয়ী কাতাদাহ রাহ. বলেন, প্রথমে বাচ্চার নাম রাখা হবে। অতপর সপ্তম দিন (পশু) যবাই করা হবে এবং এরপর মাথা মুন্ডানো হবে।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৩৩; কিতাবুল মাজমূ’ ৪/৪০৭, ৮/৪১৫; আলমুফাসসাল ফী আহকামিল আকীকাহ; তুহফাতুল মাওদূদ বিআহকামিল মাওলূদ ৮৬, ৯৯; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৩৯৭

*****

প্রশ্নঃ 

আমার ছেলের বয়স ৫ বছর। এখন তার আকীকা করতে চাচ্ছি। আকীকার হুকুম কী? অর্থাৎ কী দিয়ে আকীকা করতে হবে এবং এর বণ্টন বিধি কী? আকীকার গোশত কে কে খেতে পারবে? বাবা-মাও কি সে গোশত খেতে পারবে? আর আকীকা কি কুরবানীর সাথে দেওয়া যাবে? যদি যায় তাহলে কীভাবে ?

দয়া করে বিস্তারিত জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তরঃ 

আকীকা করা মুস্তাহাব। পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ছাগল আর কন্যার জন্য একটি ছাগল।

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম ছেলের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫১৩

আর কুরবানীর পশুতে আকীকার নিয়তে শরিক হওয়াও জায়েয। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আকীকা ও কুরবানীর কোনো অংশ পশুর এক সপ্তমাংশের কম না হয়।

আকীকার গোশত সন্তানের মা-বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন এবং ধনী-গরীব সকলেই খেতে পারবে। আকীকার গোশতের বণ্টন ও ব্যবহার কুরবানীর মতোই। কিছু গোশত নিজেদের জন্য রাখা, কিছু আত্মীয়-স্বজনকে দেওয়া এবং কিছু গোশত গরীবদেরকে সদকা করা উত্তম। 

-আততালীকুল মুমাজজাদ ২৮৯, ২৯০; ইলাউস সুনান ১৭/১১৮; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৩৯৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৪; আলমুসতাদরাক লিল হাকিম, হাদীস : ৭৬৬৯

*****

প্রশ্নঃ 

আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ের জন্য একটি গরু দিয়ে আকীকা করতে চাচ্ছি। পরিবারে অনেকে সংশয় প্রকাশ করে বলছে, গরু দিয়ে আকীকা শুদ্ধ হবে কি না? আমার জানার বিষয় হল, গরু দিয়ে কি আকীকা করা জায়েয আছে? বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তরঃ 

হ্যাঁ। গরু, মহিষ ও উট দ্বারাও আকীকা করা জায়েয আছে। হযরত আনাস রা. উট দ্বারা সন্তানদের আকীকা করেছেন। -তবারানী, কাবীর, হাদীস ৬৮৫; মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/৯৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৪৭৫৫

বাকি থাকলো যে, প্রত্যেক সন্তানের জন্য একেকটি পশু দ্বারা আকীকা করা হবে, না কয়েকজনের জন্য একটি গরু-মহিষ দ্বারা আকীকা করলেও তা আদায় হয়ে যাবে এটি একটি ইজতেহাদী মাসআলা। কোন কোন আলেমের মতে কুরবানীর মত আকীকাও কয়েকজনের জন্য একটি গরু বা মহীষ দ্বারা করা যাবে।

উল্লেখ্য, গরু-মহিষ দ্বারা আকীকা করা জায়েয হলেও ছাগল দ্বারা আকীকা করা উত্তম। কেননা ছাগল দিয়ে আকীকা করার কথা হাদীস শরীফে বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে।

উম্মে কুরয ও আবু কুরয থেকে বর্ণিত আছে, তারা বলেন,

نَذَرَتِ امْرَأَةٌ مِنْ آلِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ إِنْ وَلَدَتِ امْرَأَةُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ نَحَرْنَا جَزُورًا، فَقَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: لَا بَلِ السُّنَّةُ أَفْضَلُ عَنِ الْغُلَامِ شَاتَانِ مُكَافِئَتَانِ، وَعَنِ الْجَارِيَةِ شَاةٌ.

আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর এর বংশের এক মহিলা এই বলেছিলেন যে, আবদুর রহমানের স্ত্রী সন্তান প্রসব করলে আমরা একটি উট যবাই করব। তখন আয়েশা রা. বললেন, না; বরং সুন্নাহর অনুসরণ উত্তম। ছেলের জন্য উপযুক্ত দুটি ছাগল আর মেয়ের জন্য একটি ছাগল। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯

হযরত উম্মে কুরয রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,

عَنِ الغُلَامِ شَاتَانِ، وَعَنِ الأُنْثَى وَاحِدَةٌ

পুত্রসন্তানের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর কন্যাসন্তানের পক্ষ থেকে একটি ছাগল যবাই করবে। (জামে তিরমিযী ১/১৮৩)

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৪৭২৫; ইলাউস সুনান ১৭/১১৭; ফাতহুল বারী ৯/৫০৭; আলমাজমূ শরহুল মুহাযযাব ৮/৪৩১

*****

প্রশ্নঃ 

আমার একটি ছেলেসন্তান হয়েছে। জন্মের কিছুদিন পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই আমি মান্নত করেছিলাম, ছেলে সুস্থ হলে একটি খাশি আকীকা করব। আল্লাহর মেহেরবানিতে ছেলে সুস্থ হয়ে গেছে। এখন আমার প্রশ্ন হল, ছেলের আকীকা করতেই হবে কি না? না করার কোনো সুযোগ আছে কি? আকীকা করতে হলে খাশিই করতে হবে কি না?

উত্তরঃ 

আকীকা করা মুস্তাহাব। প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ছেলে সুস্থ হলে আকীকা করব-এ কথা বলার দ্বারা আপনার জন্য আকীকা করা জরুরি হয়ে যায়নি। তবে মুস্তাহাব হুকুম পালনের অঙ্গীকার করার দ্বারা এর গুরুত্ব আরো বেড়েছে। তাই সামর্থ্য থাকলে আল্লাহ তাআলার সাথে কৃত এই ওয়াদা পূরণ করাই বাঞ্ছনীয়।

একবছর বয়সী যেকোনো ছাগল দ্বারা আকীকা করা যাবে।

ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল আকীকা করা উত্তম। বিশিষ্ট সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসাইন রা.-এর পক্ষ থেকে দুটি করে দুম্বা আকীকা করেছেন। (সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭)

প্রকাশ থাকে যে, প্রশ্নে আকীকার অঙ্গীকারকে আমি মান্নত করেছিলাম বলে ব্যক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে বলার দ্বারাও তা মান্নত হবে না। কারণ শরীয়তে যে সমস্ত ইবাদত ফরয বা ওয়াজিব যেমন, নামায-রোযা, সদকা, কুরবানী কেবল এ ধরনের ইবাদতের মান্নত করা সহীহ। এছাড়া অন্যান্য ইবাদতের মান্নত করলেও তা মান্নত হয় না।

-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৪৭২; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮৩৫; সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭; মুসতাদরাকে হাকেম ৫/৩৩৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪, ২২৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৩৬, ৩/৭৩৫; আলমুগনী ১৩/৩৯৩; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ইলাউস সুনান ১৭/১১৪

*****

প্রশ্নঃ 

আমি ২১ দিনের মধ্যেই আমার ছেলেসন্তানের আকীকা করতে মনস্থ করেছি। কিন্তু আমার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় কোনো অনুষ্ঠান করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে আকীকার নিয়তে আমি কোনো এতিমখানায় দুটি ছাগল দিতে চাই। আমার পিতামাতা ও শ্বশুর-শাশুড়িও এতে একমত হয়েছেন। তাই জানার বিষয় হল, এভাবে ছাগল দিলে কি আকীকা আদায় হবে? দয়া করে বিস্তারিত দলিল-প্রমাণের আলোকে জানাবেন।

উত্তরঃ 

আকীকার পশু কোনো প্রতিষ্ঠানে দিলে এবং আকীকার জন্য তা যবাই করা হলে আকীকা আদায় হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, আকীকার জন্য অনুষ্ঠান করা জরুরি নয়; বরং আকীকার উদ্দেশ্যে পশু যবাই করলেই তা আদায় হয়ে যায়। আর আকীকার গোশতের ব্যবহার ও বণ্টনের নিয়ম কুরবানীর গোশতের মতোই।

*****

প্রশ্নঃ 

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আমার মেয়ের স্বামী আমার নাতির আকীকা করেনি। অদূর ভবিষ্যতে আকীকা করার সম্ভাবনাও কম। নানা হিসেবে আমি নিজ টাকায় নাতির আকীকা করলে আকীকা হবে কি না এবং তা জায়েয কি না? আমি আমার বাড়িতে নাতির আকীকা করতে চাই, আমার বাড়িতে আকীকা করলে হবে কি না? গরু বা ছাগল কোন্ পশু দিয়ে আকীকা করা উত্তম? নাতি জন্মের পর পরই আমার মেয়ের শ্বাশুড়ি আকীকা করার গরু নানা বাড়ি থেকে দিতে হয় বলে আমার মেয়ের নিকট গরু দাবী করেছে। এ প্রসঙ্গে ফতোয়া কী? মেয়ের শ্বাশুড়ির দাবির প্রেক্ষিতে আমি আমার নাতির আকীকা করার জন্য গরু বা ছাগল দিলে তা কি যৌতুক হিসেবে গণ্য হবে? আমার মেয়ের স্বামী সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আকীকা করছে না। এতে শরীয়তের বিধান কী? আকীকার গোশত নাতির দাদার বাড়িতে না পাঠালে আকীকা কবুল হবে কি না? তাছাড়া আকীকার পশু জবাই করে গোশত কোনো আত্মীয়স্বজনকে না দিয়ে সব গোশত এতিমখানায় দিয়ে দিলে আকীকা হবে কি? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তরঃ 

আকীকা করা মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে আকীকা করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সন্তানের আকীকা করা পিতার দায়িত্ব; নানার দায়িত্ব নয়। কেননা সন্তানের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব যার উপর শরীয়ত তাকেই আকীকা করার নির্দেশ দিয়েছে। অবশ্য পিতার অনুমতিক্রমে নানা নাতির আকীকা করলে তা সহীহ হবে। কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দৌহিত্র হাসান-হুসাইনের আকীকা করেছিলেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮৩৪)

আর এক্ষেত্রে নানা চাইলে তার নিজ বাড়িতেও আকীকা করতে পারবেন।

ছেলের আকীকার জন্য দুটি ছাগল দেওয়া উত্তম। কেননা উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছেলের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৫১৩)

প্রকাশ থাকে যে, মেয়ের শ্বাশুড়ির ঐ কথা ঠিক নয়। শ্বাশুড়ির জন্য পুত্রবধুর কাছে আকীকার গরু দাবি করা জায়েয হয়নি। এটি যৌতুকের অন্তর্ভুক্ত।

আর আকীকার পুরো গোশত এতিমখানায় দিয়ে দিলেও তা আদায় হয়ে যাবে।

তবে উত্তম হলো তিন ভাগ করে একভাগ নিজেদের জন্য রাখা, একভাগ প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনকে দেওয়া এবং একভাগ ফকীর-মিসকীনকে দেওয়া। আর আত্মীয়দের অংশ থেকে সন্তানের দাদা ও অন্যান্য আত্মীয়দেরকেও দেওয়া উচিত।

-আলমওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ ৩০

*****

৩৪২৩ . প্রশ্নঃ 

আকীকার হাদীসের মধ্যে যে রাহীনাতুন শব্দ আছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য কি? যে আকীকা করবে না, সে কি শাফাআত থেকে মাহরূম হবে?

উত্তরঃ 

প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসটি হল-

عن سمرة بن جندب عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال : كل غلام رهينة بعقيقته تذبح عنه يوم سابعه ويحلق ويسمى.

অর্থ : প্রতিটি সন্তান আকীকার সাথে আবদ্ধ থাকে। সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে পশু যবাই করবে, তার মাথা মুণ্ডিয়ে দিবে এবং তার নাম রাখবে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৮৩১; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২০০৮৩

হাদীসে উল্লেখিত রাহীনাতুন শব্দের আভিধানিক অর্থ, আবদ্ধ, বন্ধকী বস্তু। (মাজমাউ বিহারিল আনওয়ার ২/৪০৭; লিসানুল আরব ৫/৩৪৮) হাদীস ভাষ্যকারগণ এক্ষেত্রে শব্দটির বিভিন্ন ব্যাখ্যা উল্লেখ করেছেন- ক) পিতামাতার জন্য নাবালেগ সন্তানের সুপারিশ আকীকার সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ সন্তান যদি নাবালেগ অবস্থায় মারা যায় এবং তার আকীকা করা না হয়ে থাকে তবে সে তার পিতামাতার জন্য সুপারিশ করবে না। প্রশ্নে শাফাআত থেকে মাহরূম হবে বলে যে কথা বলা হয়েছে এর অর্থ সন্তানের শাফাআত।

খ) সন্তানের নিরাপত্তা, শারীরিক সুস্থতা ও বৃদ্ধি আকীকার সাথে সম্পৃক্ত।

গ) সন্তান লাভ করা আল্লাহর পক্ষ থেকে নিআমত। এর প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন আকীকার সাথে আবদ্ধ। এছাড়াও রাহীনাতুনের আরো অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে।

 -মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/৭৭-৭৮; ফায়যুল কাদীর ৪/৪১৫; ফাতহুল বারী ৯/৫০৮; উমদাতুল কারী ২১/৮৮; আততালীকুল মুমাজজাদ ২/৬৫৭; বাযলুল মাজহূদ ১৩/৮২

*****

৩৩৪৬. প্রশ্নঃ 

আমি একবার মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ যদি আমাকে পুত্রসন্তান দান করেন তাহলে দুটি গরু দিয়ে তার আকীকা করব। আল্লাহ আমাকে পুত্রসন্তান দিয়েছেন। পরে আমি জানতে পেরেছি যে, ছেলেসন্তানের আকীকার জন্য দুটি ছাগলই যথেষ্ট। তাই জানার বিষয় হল, আমার জন্য দুটি গরু দিয়ে আকীকা করা কি জরুরি? নাকি দুটি ছাগল দিলেই মান্নত আদায় হয়ে যাবে?

উত্তরঃ 

আকীকা করার মান্নত করলে তা মান্নত হয় না। তাই গরু দ্বারা আকীকা করা অপরিহার্য হয়ে যায়নি। বরং ছাগল, দুম্বা ইত্যাদি পশু দ্বারাও আকীকা করা যাবে।

 -আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৫; ইমদাদুল আহকাম ৪/২০৬-৭

*****

৩০৫২. প্রশ্নঃ 

জনৈক ব্যক্তি তার ছেলে সন্তান হলে একটি গরু আকীকা করার মানত করেছে। এখন তার ছেলেসন্তান হয়েছে। তার জন্য উক্ত মানত পূর্ণ করা কি জরুরি? দয়া করে জানাবেন।

উত্তরঃ 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার জন্য গরু দ্বারা আকীকা করা জরুরি নয়। কেননা আকীকার মানত করলে তা মানত হয় না এবং তা পূরণ করা ওয়াজিব হয় না। আকীকা করা মুস্তাহাব। ছেলেসন্তানের জন্য দুটি ছাগল আর মেয়ের জন্য একটি ছাগল দ্বারা আকীকা করা উত্তম। অবশ্য কেউ যদি ছেলের জন্য একটি ছাগলও জবাই করে তবুও আকীকা আদায় হয়ে যাবে। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. ছেলেসন্তানের জন্য একটি ছাগল দ্বারা আকীকা করেছেন। (মুয়াত্তা, ইমাম মালেক, পৃষ্ঠা : ৪০৯)

আর যদি কেউ ছাগল ছাড়া অন্য কোনো পশু দ্বারা আকীকা করতে চায় তাও জায়েয আছে। হাসান রাহ. থেকে বর্ণিত আনাস রা. সন্তানের আকীকা উট দ্বারা করেছেন।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৪৭৫৫; ইলাউস সুনান ১৭/১০৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৯৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮১; ইমদাদুল আহকাম ৪/২০৭; সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৬৯৬; উমদাতুল কারী ২৩/২০৮

*****

৩০৮২. প্রশ্নঃ 

আমার আত্মীয়স্বজনের সংখ্যা অনেক বেশি। কিছুদিন পর আমার ছেলের আকীকা। আমি কি তিন বা ততোধিক ছাগল দ্বারা তার আকীকা করতে পারব? এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী? জানানোর অনুরোধ রইল।

উত্তরঃ 

হাদীস শরীফে ছেলে সন্তানের ক্ষেত্রে দুইটি ছাগল দ্বারা আকীকা করার কথা এসেছে। হযরত উম্মে কুরয রা. রাসূলুলাহ সালালাহু আলাইহি ওয়াসালামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বলেন, ছেলের জন্য দুটি ছাগল আর মেয়ের জন্য একটি ছাগল (দ্বারা আকীকা করবে)। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৫১৫; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৭১৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮৩৬; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৭৬৬৫)

উক্ত হাদীসের নির্দেশনা মোতাবেক ছেলের জন্য দুটি ছাগল দ্বারাই আকীকা করা নিয়ম। তাই আকীকার নিয়তে তিন বা ততোধিক ছাগল যবাই না করাই বাঞ্ছনীয়। উল্লেখ্য, আকীকার মুস্তাহাব আদায়ের জন্য দাওয়াতের আয়োজন জরুরি নয়।

-ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬২২

*****

২২০৮. প্রশ্নঃ 

শুনেছি যে, আকীকায় মাদা বকরি যবাই করতে হয়। কেউ যদি মাদা বকরির পরিবর্তে নর ছাগল যবাই করে তাহলে কি কোনো সমস্যা হবে?

উত্তরঃ 

মাদা বকরি বা নর ছাগল যে কোনোটি দ্বারা আকীকা করা যায়। মাদা বকরি দিয়েই আকীকা করতে হয়-এ কথা ভিত্তিহীন।

-জামে তিরমিযী ১/১৮২-১৮৩; সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭; মুয়াত্তা ইমাম মালেক ১৮৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২২

*****

প্রশ্নঃ 

আমার একটি ছেলে জন্মের সতের দিন পরে মারা গেছে। এখন আমি তার আকীকা করতে চাই। এতে শরীয়তের কোনো বাধা আছে কি না?

উত্তরঃ 

আকীকা মূলত জীবিত সন্তানের জন্য করা মুস্তাহাব। অবশ্য কোনো কোনো ফকীহ মৃত সন্তানের জন্য করার কথাও বলেছেন তাই আপনি চাইলে আপনার মৃত সন্তানের আকীকা করতে পারবেন। তবে সন্তান মারা যাওয়ার পর তার আকীকার বিষয়টি ততটা গুরুত্ব থাকে না।

-আলমাজমূ ৮/৪১২; আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ আলকুয়াইতিয়্যাহ ৩০/২৭৭; ফাতাওয়া রহীমিয়া ১০/৬২

*****

প্রশ্নঃ 

আমার একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করার দুই দিন পর ইন্তিকাল করেছে। তার আকীকা করিনি। কেউ কেউ আকীকা করার পরামর্শ দিচ্ছে। প্রশ্ন হল, এই সন্তানেরও কি আকীকা করা সুন্নত?

উত্তরঃ 

ঐ সন্তানের পক্ষ থেকে আকীকা করা লাগবে না। কারণ সন্তানের বয়স ৭ দিন পূর্ণ হলে আকীকার সময় হয়। এর আগে নয়। অবশ্য অভিভাবক চাইলে এমন সন্তানেরও আকীকা করতে পারেন।

জামে তিরমিযী ১/২৭৮; আলইসতিযকার ১৫/৩৭৫; ফাতহুল বারী ৯/৫০৯; তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/৯৭; ইরশাদুস সারী ১২/২২৫

*****

২০৪৪. প্রশ্নঃ 

কুরবানীর গরুতে আকীকার জন্য অংশ দেওয়া যাবে কি? আমরা স্বামী-স্ত্রীর পক্ষ থেকে কুরবানীর দুই অংশ, মৃত বাবা-মার দুই অংশ এবং মেয়ে ও ছেলের আকীকার তিন অংশ-এভাবে এক গরুতে কুরবানী ও আকীকা করতে চাই। এটা জায়েয হবে কি?

উত্তরঃ 

হ্যাঁ, কুরবানীর গরুর সাত ভাগে আকীকার অংশ দেওয়া জায়েয। এতে কুরবানী ও আকীকা দু’টোই আদায় হবে। আপনি প্রশ্নে যেভাবে বলেছেন সেভাবে কুরবানী ও আকীকা করতে পারবেন।

ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫০; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৮/২৪৪; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৩১-৩৩৩; শরহুল মুহাযযাব ৮/৪০৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬

*****

৩৬০৭. প্রশ্নঃ 

যদি কুরবানীর গরুর সাথে আকীকার নিয়ত করে তাহলে সে মাংস বণ্টনের নিয়ম কী? যদি কুরবানী আর আকীকার উভয় ভাগ এক সাথে মিলিয়ে পরে তা তিন ভাগ করে কুরবানীর গোশতের নিয়মে বণ্টন করি তাহলে হবে কি?

উত্তরঃ 

আকীকার গোশত বণ্টনের হুকুম কুরবানীর মতোই।

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আকীকা সংক্রান্ত একটি দীর্ঘ হাদীসে এসেছে, ... অতপর (আকীকার গোশত থেকে) নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং সদকা করবে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯

তাই কুরবানী ও আকীকা একই ব্যক্তির হলে গোশত পৃথক করার প্রয়োজন নেই; বরং চাইলে উভয় গোশত একত্রে মিলিয়ে তিনভাগে বণ্টন করতে পারবে।

 -ইলাউস সুনান ১৭/১১৮, ১৭/১২৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৭; আলমুগনী ইবনে কুদামা ১৩/৩৯৩

*****

৪৬৫৪. প্রশ্নঃ 

আকীকা করার সময় একটি মেয়ে শিশুর নাম রাখা হয়েছিল ‘শীলা আহমাদ’। নামটি আরবী-বাংলা মিশ্রিত। বাচ্চার অভিভাবক এখন এই ভুল বুঝতে পেরেছে। তারা সম্পূর্ণ আরবী নাম রাখতে চায়। আকীকা করার পর কি আবার নাম পরিবর্তন করা যাবে? আর পরিবর্তন করলেও যেহেতু ডাক নাম শীলা পরিচিত হয়ে গেছে সুতরাং এটি থাকলে কোনো অসুবিধা আছে কি?

উত্তরঃ 

আকীকার পরেও প্রয়োজনে নাম পরিবর্তন করা যায়। এতে আকীকার কোনো ক্ষতি হয় না। আর অসুন্দর বা ভুল নাম পরিবর্তন করে সুন্দর নাম রাখা সুন্নাহসম্মত কাজ। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন (পুরুষ ও নারী) সাহাবীর নাম পরিবর্তন করে সুন্দর নাম রেখে দিয়েছিলেন।

সহীহ বুখারীসহ অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে এ মর্মে একটি অধ্যায়ই রয়েছে-

باب تحويل الاسم إلى اسم هو أحسن منه

‘নাম পরিবর্তন করে সুন্দর নাম রেখে দেওয়া সংক্রান্ত অধ্যায়।’ এ অধ্যায়ের অধীনে মুহাদ্দিসীনে কেরাম ঐসকল হাদীস জমা করেছেন, যেগুলোতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক সাহাবায়ে কেরামের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

অতএব প্রশ্নোক্ত ঐ মেয়েটির বর্তমান নাম পরিবর্তন করে একটি সুন্দর নাম রাখা উত্তম হবে। এক্ষেত্রে সুন্দর ও অর্থপূর্ণ নাম নির্বাচনের জন্য কোনো আলেমের সহযোগিতা নিতে পারেন। এরপর সামনে থেকে ঐ সুন্দর নামেই তাকে ডাকবেন। পূর্বের নামে ডাকবেন না।

*****

একটি ভুল মাসআলা : নাম বদলালে কি আকীকা দোহরাতে হয়?

.

কারো ভুল নাম রাখা হলে তা পরিবর্তন করে সঠিক নাম রাখা জরুরি। কিন্তু নাম বদলালে নতুন করে আকীকাও করতে হয়-এই ধারণা ঠিক নয়। এক্ষেত্রে প্রথম আকীকাই যথেষ্ট। নতুন আকীকা জরুরি নয়, মুস্তাহাবও নয়।

*****

একটি অসতর্কতা : আকীকার দিন গুনতে ভুল করা

.

আকীকার ব্যাপারে হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

تُذْبَحُ عَنْهُ يَوْمَ السّابِعِ.

নবজাতকের পক্ষ থেকে সপ্তম দিনে জবেহ করা হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৮৩৭; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫২২; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩১৬৫)

শরীয়তের যেসমস্ত মাসআলা দিন-তারিখ, মাস-বছরের সাথে সম্পৃক্ত সেগুলো চাঁদের হিসাবে গণনা করতে হয়। সুতরাং এ সাত দিন গণনা করতে হবে চাঁদের হিসাবে। আর আমাদের জানা আছে যে, চাঁদের ক্ষেত্রে দিন/তারিখ শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকে। এখন কোনো সন্তান যদি শনিবার সূর্যাস্তের পর জন্ম নিল তার অর্থ সে রবিবারে জন্ম নিল। সেক্ষেত্রে তার সাত দিন গণনা শুরু হবে রবিবার থেকে, শনিবার থেকে নয়। সে হিসাবে সপ্তম দিন হবে পরের শনিবার। কিন্তু যদি সাধারণ ধারণার ভিত্তিতে শনিবারকে প্রথম দিন ধরে গণনা করা হয় তাহলে সপ্তম দিন হবে জুমাবার; যা ভুল।

হাঁ, যদি শনিবার সূর্যাস্তের আগে জন্ম নেয় তখন দিন গণনা শুরু হবে শনিবার থেকে। আল্লাহ আমাদের সব বিষয়ে সঠিক বিষয়টি জানার ও আমল করার তাওফীক দান করুন। সাথে সাথে হিজরী তারিখের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন।

*****

একটি ভুল ধারণা : মাদা বকরি দিয়ে কি আকীকা সহীহ হয় না?

.

কিছু কিছু মানুষ মনে করেন, আকীকা সহীহ হওয়ার জন্য নর ছাগল হওয়া শর্ত, মাদা বকরি দ্বারা আকীকা সহীহ হয় না। তাদের এ ধারণা ঠিক নয়। নর হোক মাদা হোক যে কোনোটি দ্বারাই আকীকা করা যায়।

*****

একটি ভুল মাসআলা : সন্তানের আকীকার গোস্ত কি মা-বাবা খেতে পারবে না?

.

আকীকার গোস্ত বণ্টন নিয়ে কোথাও কোথাও বিভ্রান্তি দেখা যায়। অনেকের ধারণা, সন্তানের আকীকার গোস্ত মা-বাবা খেতে পারবে না। বরং আশেপাশের ঘর-বাড়ি এবং গরীব-মিসকীনের মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে।

এ ধারণা ঠিক নয়। আকীকার গোস্ত সন্তানের মা-বাবা,পরিবার পরিজন,আত্নীয় স্বজন,প্রতিবেশী বা মিসকীন যে কেউ খেতে পারবে।

(দ্র.সুনানে বায়হাকী, খ.৯ পৃ. ৩০২;মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস ২৪৭৩৯,২৪৭৪৯; ইলাউস সুনান, খ.১৭ পৃ.১২৬; তুহফাতুল মাওদূদ পৃ. ৭৮)

*****

প্রশ্নঃ 

কুরবানীর সাথে আকীকার অংশ দিলে কী আকিকা আদায় হবে না?

উত্তরঃ 

কুরবানি ও আকীকা আলাদাভাবেই করা উচিৎ। তবে একত্রে করলে আদায় হবে না তা নয়। একত্রে করলেও কুরবানী-আকীকা দুটোই আদায় হবে। কারণ আকীকাও এক ধরনের কুরবানী। হাদীস শরীফে আকীকার উপরও ‘নুসুক’ শব্দের প্রয়োগ হয়েছে। আর এখানে ‘নুসুক’ অর্থ কুরবানী। হাদীসের আরবী পাঠ এই-

سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن العقيقة، فقال : لا أحب العقوق كأنه كره الاسم، قالوا يا رسول الله! نسألك عن أحدنا يولد له، فقال : من أحب منكم أن ينسك عن ولده فليفعل، على الغلام شاتان مكافأتان، وعلى الجارية شاة.

 (দ্র. আলমুসান্নাফ, আব্দুর রাযযাক : ৭৯৬১; আলমুসনাদ, আহমদ : ৬৭১৩, ৬৭২২; আসসুনান, আবু দাউদ (আকীকা অধ্যায়) ২৮৪২; আস-সুনান, নাসায়ী : ৭/১৬২, ১৬৩; আলমুসান্নাফ, ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২৪ হাদীস : ২৪৭২৭; আলমুসতাদরাক, হাকিম, ৫/৩৩৭, হাদীস : ৭৬৬৬)

سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن العقيقة، فقال : لا يحب الله العقوق، من ولد له منكم ولد فأحب أن ينسك عنه فليفعل.

 (দ্র. আলমুসান্নাফ, ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২১, হাদীস : ২৪৭২২; আলমুয়াত্তা, ইমাম মালিক, আকীকা অধ্যায়, হাদীস : ৬৫৮)

আকীকাও যখন এক প্রকারের কোরবানী তখন একটি গরু বা উট দ্বারা একাধিক ব্যক্তির (সাত জন পর্যন্ত)

আলাদা-আলাদা কুরবানী আদায় হওয়ার হাদীসগুলো থেকে কুরবানী-আকীকা একত্রে আদায়ের অবকাশও প্রমাণিত হয়। এটা শরীয়তের পক্ষ হতে প্রশস্ততা যে, গরু বা উটের ক্ষেত্রে একটি ‘জবাই’ সাত জনের সাতটি জবাইয়ের স্থালাভিষিক্ত গণ্য হয়। একারণে একটি উট বা গরু সাত জনের পক্ষে যথেষ্ট হয়।

সহীহ মুসলিমে সাহাবী জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘আমরা হজ্বের ইহরাম বেঁধে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বের হলাম। তিনি আমাদেরকে আদেশ করলেন যেন প্রত্যেক উট ও গরুতে সাতজন করে শরীক হয়ে কুরবানী করি।’-সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্ব, হাদীস : ১৩১৮/৩৫১

خرجنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم مهلين بالحج، فأمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم أن نشترك في الإبل والبقر، كل سبعة منا في بدنة.

অন্য বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘(একটি) গরু সাতজনের পক্ষ হতে এবং (একটি) উট সাতজনের পক্ষ হতে (কুরবানী করা যাবে)।’

البقرة عن سبعة والجزور عن سبعة.

-আস-সুনান, আবু দাউদ, হাদীস : ২৮০১, কিতাবুল আযাহী

সারকথা, ‘নুসুক’ বা কুরবানীর ক্ষেত্রে শরীয়তের প্রতিষ্ঠিত মূলনীতি এই যে, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার ক্ষেত্রে একটি ‘জবাই’ (إراقة الدم) দ্বারা একটি কুরবানী আদায় হলেও উট ও গরুর ক্ষেত্রে একটি ‘জবাই’ দ্বারা সাতটি কুরবানী আদায় হতে পারে। অর্থাৎ এখানে ‘জবাইয়ে শরীক হওয়া’ও (সর্বোচ্চ সাত জনের) কুরবানী আদায়ের পক্ষে যথেষ্ট। আকীকাও যেহেতু ‘নুসুক’ বা কুরবানী তাই এ মূলনীতিতে আকীকাও শামিল থাকবে।সুতরাং ‘একটি পশু জবাই’ করা দ্বারা যেমন তা আদায় হবে, তেমনি নির্ধারিত নিয়মে ‘জবাইয়ে শরীক হওয়ার’ (شركة في دم) দ্বারাও তা আদায় হবে।

সুতরাং এ প্রশ্নের অবকাশ নেই যে, ‘আকীকায় তো পশু জবাই করতে বলা হয়েছে। অতএব অন্তত একটি পশু জবাইয়ের দ্বারাই তা আদায় হতে পারে।’ কারণ শরীয়তের দৃষ্টিতে পশু জবাই (إراقة الدم)-এর দায়িত্ব যেমন একটি পশু জবাই করার দ্বারা আদায় হয় তেমনি নির্ধারিত পশুতে ‘শরীক হওয়ার’ দ্বারাও (شركة في دم) আদায় হয়। আকীকার ক্ষেত্রে এই মূলনীতি প্রযোজ্য নয় বলে দাবি করলে ব্যতিক্রমের বিধানসম্বলিত দলীল লাগবে। আমাদের জানামতে এমন কোনো দলীল নেই।

থাকল, দুই ধরনের কুরবানী এক পশু দ্বারা আদায় হওয়ার প্রশ্ন, তো এটি একটি ইজতিহাদী বিষয়। একারণে মুজতাহিদ ইমামগণের মাঝে এ বিষয়ে কিছু মতপার্থক্যও আছে। কিন্তু নস বা কুরআন-সুন্নাহর সুষ্পষ্ট কোনো বিধানে এ বিষয়ে নিষেধ আছে বলে আমাদের জানা নেই; বরং অনুমোদনের পক্ষে হাদীস-আছারের দলীল আছে। পক্ষে বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম ‘আতা ইবনে আবী রাবাহ রাহ. এর ফতোয়াটিই সম্ভবত বিজ্ঞজনের যথেষ্ট হবে। তিনি বলেছেন, ‘উট ও গরু সাতজনের পক্ষ হতে কুরবানী হতে পারে। আর এতে শরীক হতে পারে কুরবানীকারী, তামাত্তু হজ্বকারী এবং হজ্বের ইহরাম গ্রহণের পর হজ্ব আদায়ে অপারগ ব্যক্তি।

(দ্র. আসসুনান, সায়ীদ ইবনে মানসূর-আল কিরা লি-কাসিদি উম্মিল কুরা, পৃ. ৫৭৩)

দেখুন সালাফের যুগেই একটি পশু দ্বারা তিন ধরনের কুরবানী আদায় হওয়ার ফতোয়া কত স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে।

আশা করি, আপনার প্রশ্নের উত্তরের জন্য আপাতত এটুকু আলোচনাই যথেষ্ট হবে।


[ মাসিক আলকাউসারের বিভিন্ন সংখ্যা থেকে সংগৃহীত ]

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন