আনার, আজিজ, বেনজির আমেরিকার হাতে শিকার হয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাপারে ১/১১ -এর পুরনো কৌশল নিয়ে মাঠে নেমেছে আমেরিকা।
তখন ধাপে ধাপে যা ঘটেছিলঃ
১. বড়ো দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে একের পর এক সংঘর্ষ।
২. জাতিসংঘ মিশন থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দিয়ে বিডি আর্মিকে আমেরিকার কমান্ডিংয়ে নেওয়া।
৩. ভারত ও আমেরিকার সমর্থনে বিডি আর্মি কর্তৃক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণ।
৪. আমেরিকা ও ভারতের আজ্ঞাবহ পত্রিকা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারকে দিয়ে রাজনীতিবিদদের দূর্নীতির তথ্য প্রকাশ। অর্থাৎ মিডিয়া ট্রায়াল।
৫. রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জনসমর্থন তৈরি।
৬. দুই বড়ো দলের দুই নেত্রী সহ বিএনপির বেশি সংখ্যক এবং আওয়ামী লীগের কম সংখ্যক রাজনীতিবিদকে গ্রেফতার।
৭. হাসিনা-খালেদাকে মাইনসা করে তৃতীয় রাজনৈতিক দল তৈরির জন্য আমেরিকা-ভারতের বিশ্বস্ত ভৃত্য ড. ইউনুসকে সৃষ্টি করা।
৮. চীনকে ঠেকাতে আমেরিকা-ভারত ব্লকে থাকবে শর্তে আওয়ামী লীগকে ২০০৯ সালের নির্বাচনে জয় লাভ করানো।
তবে এবার একটা বড়ো পার্থক্য আছে। তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমেরিকান ব্লকে ছিল। এখন চীনের ব্লকে গিয়েছে।
এবার জাতিসংঘ মিশন থেকে সেনাবাহিনীকে বাদ দেওয়ার হুমকিতেও কাজ হয়নি। কারণ, বিকল্প উপায় হিসেবে এখন নতুন পরাশক্তি চীন আছে। পাশাপাশি জাতিসংঘ মিশনের বিকল্প হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে সেনা পাঠানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তাছাড়া পিলখানার খেসারত দিয়ে ১/১১ -এর প্রায়শ্চিত্ত করেছে বিডি আর্মি। সুতরাং এবার আমেরিকা শত চেষ্টা করেও বিডি আর্মিকে নিজের ব্লকে নিতে পারেনি। যার ফলাফল জেনারেল আজিজের ওপর স্যাংশন, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আল-জাজিরার অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন ডকুমেন্টারি এবং ডয়েচে ভেলের দুটো ডকুমেন্টারি প্রচার।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সহ বিডির বড়ো বড়ো অনেক গণমাধ্যমই আমেরিকা-ভারতের গোলাম। তখনও ছিল। এখনো আছে।
শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের চাটুকারীতা সত্ত্বেও এদের প্রশ্নের জবাব শেখ হাসিনা একটু ঝাঁঝ মাখা কন্ঠে দেয়। এটা সাধারণ মানুষের অনেকেই ধরতে পারে না। শেখ হাসিনা মিডিয়াকে কখনোই বিশ্বাস করে না। করবেও না। কারণ, ওপরের মহলের রাজনীতিবিদরা ভালো মতোই জানে এসব মিডিয়ার শিকড় কোথায় গেঁথে আছে।
আওয়ামী লীগ প্রথম প্রথম ক্ষমতা গ্রহণের পর মিডিয়া আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছে। এখনো করছে। তবে সেটা স্রেফ ইসলামপন্থীদের চেপে রাখার জন্য। অর্থাৎ ভারতের কাছে লীগ যেমন মন্দের ভালো। কৃতদাস মিডিয়াও তেমন প্রভুর প্রেসক্রিপশনে লীগের পক্ষে কাজ করে। এটা তারা করে নিজেদের স্বার্থের জন্য। কারণ, বিডিতে লীগ যদি দূর্বল হয়, তবে ইসলামপন্থীরা শক্তিশালী হবে। আর ইসলামপন্থীরা শক্তিশালী হলে দেশের শাহবাগী ও নন-শাহবাগী সেক্যুলার, দেশের হিন্দু এবং ভারতের জন্য তা বড়ো ধরণের ক্ষতির কারণ হবে।
মিডিয়া সুযোগ পেলে কিন্তু লীগকেও ছোবল দেয়, দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ নিজে কিছু গণমাধ্যম তৈরি করলেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ভিত্তি আমেরিকা-ভারতের হাতেই। সেই সুযোগকে আমেরিকা কাজে লাগাবে, লাগাচ্ছে। লীগের রাজনীতিবিদদের দূর্নীতির চিত্র একের পর এক ফাঁস করে দেবে। মিডিয়া ট্রায়াল হবে। আনার, আজিজ, বেনজির দিয়ে সবে শুরু। এই পন্থায় আমেরিকা বিডির জনগণের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ক্ষোভের যেই আগুন জ্বলছে সেটায় বিপুল পরিমাণে ফুয়েল ঢালবে।
ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম ১/১১ -এর সময় খবর প্রচার করে হাসিনাকে জেল খাটিয়েছিল। সে ভেবেছিল ইউনূস সরকার প্রধান হবে। কিন্তু লীগ ক্ষমতায় বসার পর মাহফুজ আনাম একটা টকশোতে প্রকাশ্যে ক্ষমা চায় হাসিনার কাছে। এটা অনেকটা নাকে খত দেওয়ার মতো।
হাসিনা জানে মাহফুজ-মতি গং বিষধর সাপ। ভয়ে চুপ করে আছে। সুযোগ পেলে ছোবল দেবে। হয়েছেও তাই। প্রথম আলো (প্রথম অন্ধকার) গত বছর "আমগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব" প্রসঙ্গে একটা বানোয়াট গল্পের খবর ছেপে লীগের কাছে মামলাও খেয়েছিল। সর্বশেষ বেনজির প্রসঙ্গে মাহফুজ আনামের একটা বক্তব্য দেখে আমি অবাক! শেয়ালের গলায় কুকুরের আওয়াজ। লীগের বিরুদ্ধে সেই ১/১১ এর ভয়েসে কথা বলছে মাহফুজ আনাম। তখন বুঝলাম প্রভু আমেরিকার গ্রিন সিগনাল পেয়েছে গণমাধ্যমগুলো। তাই বেশ সরব হয়েছে।
বাংলাদেশকে ঘিরে মার্কিন কৌশল ২য় পর্ব
বিডি প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার কোনায় কোনায় আমেরিকা-ভারতের এজেন্ট বসে আছে। এদেরকে আমেরিকা কাজে লাগানো শুরু করেছে। আমেরিকার গ্রিন সিগনাল এরাও পেয়েছে। তাই অনেকটা সাহস করে বেনজিরের সম্পদের পরিমাণ, পাসপোর্ট জালিয়াতি, ভূমি দখল ইত্যাদি তথ্য ফাঁস করে বেনজিরকে দুনিয়ার হিসেবের কাঠগড়ায় এই এজেন্টরা দাঁড় করিয়েছে। লীগের জন্য এটা বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতি। কারণ, বেনজির লীগের অনেক বিশ্বস্ত ও কার্যকরী একটা চাকর ছিল। তাই বেনজিরকে লীগ দেশের ভেতরে লুকিয়ে রেখেছে কিংবা টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে সাহায্য করেছে।
পরাশক্তিগুলোকে পরাশক্তি বলা হয় এজন্যই। এরা কোনো দেশে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চাইলে সেই দেশের সরকার প্রধানদের কিছুই করার থাকে না। এরকমটা হয় উক্ত দূর্বল দেশের কিছু মোহগ্রস্ত, উচ্চাভিলাষী, লোভী ও বিশ্বাসঘাতকদের জন্য। এদের শিক্ষা ও জ্ঞান আছে। তবে সেটা আমেরিকার টাকা ও খ্যাতির কাছে বিকিয়ে দেয়। এরা প্রভুর নির্দেশে নিজ জন্মভূমির ও নিজ জাতির বুকে ছুরি চালায় স্রেফ আধুনিক দেশে নিরাপদ, আরামদায়ক, বিলাসী জীবনযাপনের লোভে।
আওয়ামী লীগ খারাপ। এই আমেরিকান দালালগুলো আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করছে–তার মানে এই না যে, এই দালালরা সাধু; বরং এরা আরো বড়ো অসাধু।
আমার ধারণা বসুন্ধরা গ্রুপ আমেরিকা-ভারত ব্লকে ঢুকেছে। কারণ, লীগের নৌকা ডুবন্ত সেটা শিল্পপতিরা আগাম টের পাচ্ছে। এরা চোর-বাটপার, লুটেরা, জনগণের অর্থ আত্মসাৎকারী হলেও নির্ধারিত তাকদীরের পাশাপাশি দূরদৃষ্টি আছে বলেই এরা শিল্পপতি হতে পেরেছে।
আমার একটা সন্দেহ আছে। প্রথমেই বলে নিচ্ছি–এটা কোনো ক্যালকুলেশন না। কিংবা কোনো সিম্পটম দেখে অনুমানও না। অনেকটা অন্ধকার ঘরে ঢিল ছোঁড়ার মতো। তবে সন্দেহটা তৈরি হয়েছে একটা কৌতূহল থেকে।
১০ বছর আগের প্রাণ-আরএফএল আর এখনকার প্রাণ-আরএফএলের পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। পণ্যের বৈচিত্র্যতায় সব কোম্পানিকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এতো এতো বিচিত্র রকমের পণ্য তৈরি করছে! কী না বানাচ্ছে। আগে ছিল শুধু জুস, চানাচুর, চিপস, আচার। কিছু মুদি আইটেম ছিল। এগুলো স্কয়ারেরও আছে। এটা ব্যাপার না। কিন্তু পূর্ব কোনো উৎপাদন ছাড়াই একেবারে হঠাৎ শুরু হলো–
১. বিচিত্র রকমের আরএফএলের হাজার খানেক ধরণের প্লাস্টিক পণ্য (ইটালিয়ানো)। পণ্যগুলো স্ট্যান্ডার্ড। দৃষ্টিনন্দন।
২. পড়ালেখার শতখানেক স্টেশনারী সামগ্রী।
৩. গোটা বিশেক ইলেকট্রনিকস্ পণ্য (ক্লিক)।
৪. ফার্নিচার (রিগেল)।
৫. পোশাক ।
৬. শত শত ধরণের স্যানিটারি আইটেম (শাইন)।
৭. লিফট, পাম্প।
৮. ডেইরি প্রোডাক্ট।
৯. চকলেট আইটেম।
১০. ওয়েলবিয়িং ফার্মেসী।
১১. ফুটওয়্যার। (ওয়াকার)
১২. মটরবাইক (উইনার) ও বাইসাইকেল (দূরন্ত)।
১৩. হোম এপ্লায়েন্স (ভিশন)।
১৪. সফট ড্রিংকস্ ও মিনারেল ওয়াটার।
১৫. গোটা বিশেক পরিষ্কারক সামগ্রী।
১৬. ফ্রোজেন ফুড (ঝটপট)।
১৭. মিষ্টান্ন ও ব্যাকারী আইটেম (মিঠাই)।
১৮. ক্যাবল (বিজলি)।
১৯. পানির ট্যাঙ্ক (সেরা), টাইলস্, রঙ (রেইনবো)।
২০. ফুয়েল।
২১. পেস্ট্রি এন্ড ফাস্ট ফুড (টেস্টি ট্রিট)।
২২. নতুন নতুন মুদি আইটেমের কথা তো বলে শেষ করতে পারবো না। কোনো মুদি দোকান থেকে প্রাণের পণ্যগুলো সরিয়ে রাখলে দোকানটাই খালি হয়ে যাবে। আর এত এত শো-রুম! বিগত ৫ বছরে শহরের অলিতে-গলিতে প্রাণ-আরএফএলের শো-রুম তৈরি হয়েছে। কিছু আছে ডিলার। অধিকাংশই কোম্পানির নিজস্ব মালিকানায়।
আমার কৌতূহল হলো, একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উন্নতি করতেই পারে। তাই বলে এতো এতো ভিন্ন রকমের পণ্য তৈরির অভিজ্ঞতা হুট করে কিভাবে এলো? তাও আবার এতো অল্প সময়ের মধ্যে। কারণ, এসব পণ্যের সবগুলোই স্ট্যান্ডার্ড ডিজাইনের। গুণগত মান অন্যদের থেকে ভালো। খাবারের জিনিস হলে সেটার স্বাদ ভালো। দামও কম। নিত্যনতুন এমন এমন পণ্য তৈরি করে যাচ্ছে–অন্য কেউ পাল্লা দিয়ে উঠতে পারছে না। একটা কোম্পানির কত ধরণের অভিজ্ঞতা থাকতে পারে? অথচ প্রাণ-আরএফএল যেখানেই হাত দিচ্ছে সেখানেই বাজিমাত।
আমি সন্দেহ করি প্রাণ-আরএফএল গ্রুপে চীনের বিশাল বিনিয়োগ আছে। কারণ, প্লাস্টিক দ্রব্য দিয়ে বিশ্বের বাজার দখল করেছে একমাত্র চীন। আমার তো সন্দেহ হয় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপটা এখন চীনাদের দখলেই কিনা! ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো। লক্ষ্য– সকল পণ্য নিয়ে এককভাবে ব্যবসা করে বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করবে। বসুন্ধরা আমেরিকান ব্লকে ঢুকেছে এটা আমি অনেকটাই নিশ্চিত। তবে চীনা ব্লকের কোম্পানি প্রাণ-আরএফএলের ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ হিসেবেও বসুন্ধরা আমেরিকান ব্লকে ঢুকে থাকতে পারে। কারণ, এদের কাছে ব্যবসা আগে। টাকাও একটা নেশা।
লীগের সাথে ভারতের মন কষাকষি শুরু হওয়ার পরও আনভীরকে ভারতের রাষ্ট্রদূত ও ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লোকেদের সাথে মাখামাখি করতে দেখা গিয়েছে। সন্দেহটা আমার তখনই তৈরি হয়েছে।
এরপরই মুনিয়ার ঘটনা দিয়ে আনভীরকে একটু চাপে রাখতে চেয়েছিল বা ওয়ার্নিং দিয়ে রেখেছে লীগ। মুনিয়া-আনভীরের ফোনকল রাষ্ট্রীয় এজেন্সির লোকেরাই তো ফাঁস করেছে। বসুন্ধরার সাথে যদি লীগের সম্পর্কটা উষ্ণ থাকতো তাহলে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না।
শুধু আনভীরই না। লীগের বড়ো নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছোটো ছেলেকেও এরকম কর্মকাণ্ড করতে দেখা গিয়েছে। হাজি সেলিম ও মায়াকে লীগ বলির পাঠা বানাতে পারে ভবিষ্যতে।
এসব মিলিয়েই বেনজিরের দূর্নীতির চিত্র আনভীরের পত্রিকা ফাঁস করে দিয়েছে। প্রেসক্রিপশন দিয়েছে আমেরিকা। ওদিকে আবার এস আলমকেও সাইজ করেছে বসুন্ধরা। বসুন্ধরা যা করেছে তা স্রেফ পারস্পরিক দ্বন্দ্ব বলে কাটিয়ে দেওয়া যাবে না। কারণ, বেনজির বা এস আলম নামক দাবার গুটি একটা যাবে আরেকটা আসবে। এই গুটিগুলোর পতন হলে জনগণের কাছে ইমেজ ক্রাইসিস তৈরি হয় মূলত আওয়ামী লীগের। অর্থাৎ, চাকরের পতনে যতটা না চাকরের ক্ষতি, তার চেয়েও বেশি ক্ষতি হয় মালিকের।
এসব নিয়ে লীগ বেশ বেকায়দায় আছে। ওলিগার্কদের সাথে ঝামেলা লাগলে সরকারকে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। কারণ, ওলিগার্করা দেশের অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম।
বাংলাদেশকে ঘিরে মার্কিন কৌশল ৩য় পর্ব
আনারকে হত্যা করেছে বা গুম করেছে ভারত। কিন্তু কাজটা করিয়েছে বাংলাদেশের নাগরিক দিয়ে। এরপর আনারের অপকর্মগুলো আমেরিকা-ভারতের অনুগত গণমাধ্যম দিয়ে ফাঁস করে দিচ্ছে। ঘটনাটা এমনভাবে সাজিয়েছে যেন হট চকলেট কেকের মতো একটা ন্যাশানাল ইস্যু তৈরি হয়। এট এ টাইম তিনটা চাল একসাথে দিয়েছে। বেনজির, আজিজ, আনার।
এখানে ভারত আরো একটা বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশের এমপিদের। সামনে চীন সফরে শেখ হাসিনা যেন তিস্তা প্রকল্পের চুক্তি না করে। বলতে পারেন এমপিরা কি করবে এখানে? ক্ষমতা তো সব হাসিনার হাতে।
দেখুন সবার সাথে একই সময়ে পাঙ্গা নেওয়া যায় না। একটা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষমতাশালী ও ধনী লোকগুলোকেই বেছে বেছে নমিনেশন বা দলীয় পদ দেওয়া হয়। এসব লোকের নিজস্ব এলাকায় আধিপত্য আছে। লীগ সেসব স্থানীয় লোকজনের সাথে দ্বন্দ্বে জড়াবে না। লীগ কারা? বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজনই তো নানান রকমের সুযোগ-সুবিধা, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দূর্নীতির জন্য লীগে যোগ দেয়। আর এসব অবৈধ টাকা-পয়সার ভাগ লীগের সর্বোচ্চ মহল পর্যন্ত পেয়ে থাকে। এগুলো বিএনপিতেও হতো। সারা দুনিয়াতেই হয়। মাটি থেকে পানি টাকে কেবল শিকড়। অথচ এই পানি গাছের পাতা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এসব মানবরচিত বিধানের রাজনীতিতে এমনটাই হয়।
তাই এমপিগুলো হচ্ছে লীগের চালিকাশক্তি। এই এমপিগুলোর অধিকাংশই ম/গিবাজি স্ক্যান্ডালে ভারতের কাছে ধরা খেয়ে বসে আছে। ভারত এদেরকে একটু টাইট দিলে বাংলাদেশের সংসদের চিত্রটা পালটে যেতে সময় লাগবে না। পলটিবাজির হরেক রকমফের দেখতে পাবেন তখন।
সেনাবাহিনী না থাকলে অল্প সময়ের মধ্যেই একটা দেশ দখল হয়ে যাবে। সেনাবাহিনী নামক এস্টাবলিশড্ ইন্সটিটিউট যদি না থাকে তখন যুদ্ধের সময় সাধারণ নাগরিককে প্রশিক্ষণ দেবে কে? যুদ্ধের কৌশল শেখাবে কে?
একটু খেয়াল করে দেখুন, বর্তমান পরাশক্তিগুলো সারা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করে আছে নিজেদের সামরিক বাহিনী দিয়ে। যেই দেশের সামরিক বাহিনী যত শক্তিশালী ও আধুনিক, সেই দেশের প্রভাব সারা বিশ্বে তত বেশি। তুলনামূলক দূর্বল দেশগুলোর শক্তিশালী দেশগুলোকে তোয়াজ করে চলতে হয়।
আমি বলছি না বাংলাদেশের সেনাবাহিনী নির্দোষ। তারা পেশাগত কারণে কঠোর স্বভাবের হয়।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এজ আ ইনস্টিটিউট তাগুতি বাহিনী। কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে যে, ভারত ও আমেরিকার কথাটা মাথায় রাখলে লীগ কিংবা বিএনপির চেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইসলামপন্থীদের জন্য মন্দের ভালো। ভারত ও আমেরিকাও সেটা জানে এবং এজন্যই নিজ সেনাবাহিনীর সাথে বাঙালী মুসলমানের সম্পর্ক নষ্ট করার পায়তারা করছে আমেরিকা ও ভারত। এই কাজে সফল হলে ভারত ও আমেরিকার অর্ধেকটা পথ এগিয়ে যাবে। সামরিক বাহিনী একটা দেশের রক্ষাকবচ। এটা খুব স্পর্শকাতর একটা ইন্সটিটিউট। অনেকটা বাঁধের মতো। বাঁধ ভাঙলে বানের পানি বাড়ির উঠানে চলে আসবে।
আমার পরামর্শ হলো, ইসলামপন্থীরা যদি নিজেরা রেজিমের পাওয়ার টেকওভার করতে পারে তো ভালো। অন্যথায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যাওয়াটা হবে নিজের পায়ে কুড়াল মারার মতো। কারণ, ভারত তখন আরো চেপে বসবে। এই দেশে লীগ ভারতের বন্ধু। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী ভারতের শত্রু। এমনকি কুখ্যাত মানবতাবিরোধী দেশ আমেরিকার ব্লক থেকেও বিডি আর্মড ফোর্সেস বের হয়ে গেছে।
সামনে যা ঘটতে পারে:
বাংলাদেশে সিভিল ওয়ার দিয়ে সরকার পতন ঘটিয়ে আমেরিকার পাপেট (যেমন: ইউনূস) কাউকে বসানো হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ভারতের তেমন কোনো স্কোপ না থাকলেও সীমান্ত অঞ্চলগুলো ভারত দখল করে নেবে।
আবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরি করে হিন্দু রক্ষার নামে ভারত বিডি আক্রমণ করতে পারে। এটা ঘটবে–যদি সিভিল ওয়ারের পর আমেরিকা ওর পাপেট কাউকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসাতে ব্যর্থ হয়ে চীনপন্থী কোনো শক্তি এখানে ক্ষমতায় চলে আসে।
লিখেছেনঃ কারিম শাওন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন