অত্যাচারের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে,সবগুলো এক পর্বে কভার করা সম্ভব না। একাধিক পর্ব লিখবো তাহলে ধারণা পেতে পারবেন কতবড় জালিম থেকে আল্লাহ সিরিয়াবাসীকে মুক্তি দিয়েছেন।
এবং লেখাটা পড়ার সময় কয়েদীর জায়গায় নিজেকে চিন্তা করে লেখাটা পড়বেন।
[১] ছবির ১নং এর অত্যাচারের পদ্ধতির নাম ❝অঙ্গহানি❞।
একজন নিরাপত্তা কর্মচারী বন্দিপ্রাপ্ত কয়েদীকে কিভাবে শাস্তি দিচ্ছে তা দেখানো হচ্ছে।
কর্মচারীর কাছে থাকতো স্বাভাবিকভাবে খেঁজুর গাছ কাটা হয় যেসব কাঁচি দিয়ে সেইসব কাঁচি, সেটা দিয়ে সে কয়েদীর কান কেটে দিতো। আবার একই ধরনের কাঁচি দিয়ে অথবা কখনো ছুরি দিয়ে আঙুল,যৌনাঙ্গ ও কেটে ফেলতো। সেই সাথে পেট অথবা হাতের চামড়া কেটে ফেলতো। এবং এভাবে কয়েদীর শরীরের অঙ্গহানি ঘটানো হতো।
[২] ছবির ২নং এ অত্যাচারের পদ্ধতির নাম ❝স্ট্যাপলিং❞।
দেখতে ছোট এবং চিকন সুই,পিন অথবা ছোট পেরেক কয়েদীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঢুকিয়ে দেওয়া হতো।যেমন:চোখ,নাক,ঠোঁট,পিঠ,হাত,পায়ের নিম্নাংশ।
শুধুমাত্র রিডিং না পড়ে একটু চিন্তা করে দেখেন, চোখে সুই,নাকে সুই,ঠোঁটে সুই,হাতে সুই ঢুকানোর যন্ত্রণা কেমন হতে পারে!
[৩] ছবির ৩নং দেখানো অত্যাচারের পদ্ধতির নাম ❝Magic Carpet❞
ধরেন,একটা লম্বা কাঠের বোর্ড,সেখানের মাঝখান বরাবর দুইদিকেই ফোল্ড করা যায় এরকম করে বোর্ডটা বানানো হলো। সাথে হাত দুইদিকে বাঁধার জন্য এক্সট্রা কাঠ।
কয়েদীকে এই কাঠের সাথে ফিক্সড করে দেওয়া হতো। এবং বোর্ডের দুই প্রান্তকে কাছাকাছি আনা হতো অথবা পিছন থেকে নোয়ানো হতো,এতে কয়েদীর শরীরের চাপ পড়ার কারণে মেরুদন্ডে অসম্ভব যন্ত্রণা হতো। এবং শরীরের সকল অংশে সমানুপাতিকভাবে পিটানোর জন্য ও এই বোর্ড ব্যবহার করা হতো।
[৪] ছবির ৪নং এ জার্মান চেয়ার দিয়ে অত্যাচার করানোর পদ্ধতি দেখানো হয়েছে।
![]() |
এটাই সেই জার্মান চেয়ার |
জার্মান চেয়ারটি ধাতব চেয়ারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হতো যার অংশগুলো মুভ করার উপযোগী। কয়েদীকে হাতগুলো চেয়ারের উপরের অংশ খুব টাইট করে বাঁধা হতো এবং হাতলের সঙ্গে ফিক্সড করে দেওয়া হতো। এরপর অত্যাচার করার সময় নিরাপত্তা কর্মচারীরা এসে পিছন থেকে চেয়ারকে বাঁকিয়ে দিতো। এতো মেরুদন্ড এবং ঘাড়ে প্রচন্ড টান পড়তো এবং মাত্রাতিরিক্ত যন্ত্রণা হতো। এভাবে ক্রমাগত এই পদ্ধতি চর্চার কারণে কয়েদীর মেরুদন্ড মারাত্নক ক্ষতি হতো এবং অনেকেই প্যারালাইসিস এর সম্মুখীন হতো।
[৫] ছবির ৫নং এ দেখানো অত্যাচারের পদ্ধতির নাম ❝The Dulab Method❞
কয়েদীর শরীরকে একটি ছোট গাড়ির চাকার ভেতরে এমনভাবে ভাঁজ করে ঢোকানো হতো যাতে সে নড়াচড়া করতে না পারে এবং তার হাত পায়ের সঙ্গে স্পর্শ করে। এবং হাত ও পা একসঙ্গে শক্ত করে বাধা হতো,এতে শরীরেও একটা চাপ সৃষ্টি হতো।
এরপর কয়েদীর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করা হতো এবং জোরে জোরে লাথি মারা হতো। বন্দিকে ঘন্টার পর ঘন্টা চাকার ভেতরে রাখা হতো, এতে বন্দী ব্যক্তি তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করতো এবং শরীরের সকল শক্তি হারিয়ে ফেলতো এবং ক্ষেত্রবিশেষে নড়াচড়া করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুতর অসুবিধা হতো।
[৬] এখনো মাত্র অল্প কয়েকটা লোমহর্ষক অত্যাচারের পদ্ধতি বর্ণনা করলাম। আরো অনেকগুলো পদ্ধতি বর্ণনা করা বাকি, আগামী পর্বে আসতেছে।
সিয়াদনায়া/সাইদনায়া সম্পর্কে সাবেক গার্ড আবু মুহাম্মাদ বলেছিলো, ❝সিয়াদনায়া জীবনের শেষ,মানবতার শেষ।❞
লিখেছেনঃ ইবতিহাজ তাহসিন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন