তিরমিযীর কলহ বিপর্যয় অধ্যায়ের একটি সহীহ হাদীস থেকে জানতে পারি, ইয়াজুজ মাজুজ যখন মারা যাবে তখন তাদের লাশে আমাদের ভুখন্ডগুলো ভরে যাবে।এমনকি এক বিঘত পরিমান জায়গাও খালি থাকবে না, এতই বিশাল হবে তাদের সংখ্যাধিক্য।
এক গবেষণায় এসেছে, বর্তমানে পৃথিবীতে যে সাড়ে আটশত কোটি মানুষ আছে তাদের যদি আটকাতে যাই তবে শুধুমাত্র আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া শহরেই তাদেরকে রাখা সম্ভব। অথচ এই আটশত কোটি লোকের বসবাসের জন্য দশ কোটি বর্গকিলোমিটারের সাত সাতটা মহাদেশ লাগে।
তাহলে শুধু চিন্তা করুন, এই যে বিশাল সংখ্যক ইয়াজুজ মাজুজ আমাদের সমগ্র যমীন ছেয়ে ফেলবে, তাদের বসবাসের জন্য এরকম কয় লক্ষ মহাদেশ প্রয়োজন হতে পারে?
ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর এক বর্ণনায় তিঁনি বলেছেন,যদি যমীনকে ছয়ভাগে ভাগ করা হয়,তবে ৫ ভাগই ইয়াজুজ মাজুজের দখলে।
তাহলে আমাকে বলুন, এই যে গোল পৃথিবীর ম্যাপ, সেখানে এত এত স্যাটেলাইট, তারা আজ পর্যন্ত কেন কোনও ইয়াজুজ মাজুজ বসতি খুজে পেল না?
.
এর কারণ হচ্ছে, সমতল যমীনে আর অসংখ্য এমন যায়গা রয়েছে যেগুলো আমাদের থেকে গোপন রাখা হয়েছে। সাত মহাদেশের বাইরে আরও অসংখ্য মহাদেশ আছে, ভুখন্ড আছে যা আমাদেরকে জানতে দেয়া হচ্ছে না। যেমন এন্টার্কটিকা । যা ৫৩টি কাফির রাষ্ট্র মিলে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ঘেরাও করে রেখেছে, আস্ত এত বড় এক মহাদেশে কোনো মানুষের পা ফেলতে দেয়া হচ্ছেনা, বাহিরে যতই লাফালাফি করুক, ভেতরে সব কাফির ঐক্যবদ্ধ, এন্টার্কটিকার পর যে আরো অনেক জনপদ ও স্থান রয়েছে তা পূর্বের অনেক গবেষকের বক্তব্য হতে প্রমাণ পাওয়া যায়, সেসব সহ এন্টার্কটিকা আমাদের থেকে গোপন রাখার কারণ কি বলুন? কেননা কাফিররা আমাদের সত্য জানতে দিতে চায় না। এনিয়ে বিস্তারিত ঘাটাঘাটি করুক, গুগলে না, DuckDuckGo/start Page search engine দিয়ে।
.
সত্যি হচ্ছে এটাই যে ইসলামের শিক্ষামতে যমীন সমতল, আসমান যমীন একদম স্থির, সূর্য চন্দ্র এরা যমীনের অনুপাতে অনেক ছোট এবং স্পেস, গ্রহ উপগ্রহ এসবের কোনও অস্তিত্ব নেই। বিজ্ঞান যে শিক্ষাগুলো মানুষকে দিচ্ছে ইসলাম মানুষকে এর বিপরীত শিক্ষা দেয়।
প্রশ্ন হতে পারে,কুরআন ও বিজ্ঞানের এত পার্থক্য হয় কী করে?
আসলে এর মূল কারণ হচ্ছে আজকে বিজ্ঞান বলতে আমরা যা বুঝি তা মূলত নিষিদ্ধ যাদু বিদ্যা। এর শুরু হয়েছিল বাবেল শহরে হারুত মারুত ফেরেশতাদ্বয়ের কাছ থেকে যাদুবিদ্যা শেখার মাধ্যমে। সেখান থেকে ইহুদি, তাদের থেকে গ্রিক, আর্য এদের কাছে ছড়িয়ে পড়ে এ বিদ্যাটি।এ বিদ্যার উপর ভিত্তি করেই একসময় গড়ে উঠেছিল এক উন্নত যাদুকেন্দ্রিক সভ্যতা, যার আল্লাহ্ তা'আলার ইচ্ছায় একসময় ধ্বংস হয়ে যায়।মিশরের পিরামিড আজও সেই যাদুকেন্দ্রিক সভ্যতার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।
যাইহোক,এ বিদ্যা ধ্বংস হয়ে গেলেও এর শিক্ষা গ্রিক আর্য ইহুদিদের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়েছিল, যা ২০০ হিজরীর কাছাকাছি সময় হতে মুসলিম বিশ্বে প্রবেশ করে।গ্রিক দর্শন মুসলমানদের মধ্যে প্রবেশের পর থেকেই এ বিদ্যা মুসলিমদের চিন্তা চেতনার মধ্যে নানারুপ ফিতনার জন্ম দিতে থাকে।উৎকৃষ্ট উদাহরণ মুতাযিলা ফিরকা।সেসময় অনেক আলেমগণ এর বিরোধিতা করলেও মুসলিম বিশ্ব থেকে এর মূলোৎপাটন করা কারও পক্ষেই সম্ভব হয় নি।তারপর ইউরোপীয় রেনেসার যুগে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, অতঃপর গ্যালিলিও, কোপার্নিকাস, পরবর্তীকালে নিউওটন, আইনস্টাইন, বোর, জ্যাক পার্সনের মত শয়তানের পুজারী বা যাদুকরদের হাত ধরে ধরে এই সুপ্ত যাদুবিদ্যার পুনর্জাগরণ ঘটে, যেটা আজকের যুগে বিজ্ঞাণ নামে পরিচিতি পেয়েছে। এ বিজ্ঞাণের পুনর্জাগরণ ঘটানোর কারণ মাত্র একটাই, যমীনকে দজ্জালের আগমনের মঞ্চ হিসেবে প্রস্তুত করা। বিভিন্ন যাদুকেন্দ্রিক কুফরী আক্বীদাহ যেমন:গোল পৃথিবী,অনন্ত মহাকাশ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া। এগুলো ছড়িয়ে দেবার জন্য টিভি, সংবাদমাধ্যমগুলোকে কাজে লাগানো হয়, কার্টুন সিনেমার মাধ্যমে তা মানুষের অন্তরে গেথে দেয়া হয়।আর চূড়ান্ত রুপ দিতে স্পেস এজেন্সি তৈরী করে চন্দ্রাভিজান, মঙ্গল্গ্রহে যাত্রা, মহাকাশ জয় এসব নাটকগুলো করা হয়।
বিজ্ঞাণ যে যাদুবিদ্যা, সেটা বোঝার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র এর বর্তমান ভূমিকার দিকে তাকালেই চলবে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে নতুন জীব সৃষ্টি, আল্ট্রসনোগ্রাফির মাধ্যমে পেটে থাকা বাচ্চার স্বরুপ নির্ণয়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের মাধ্যমে নিষ্প্রাণ রোবটকে প্রাণ দেয়া,হার্প প্রযুক্তির মাধ্যমে আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ,কৃত্রিম অঙ্গ তৈরী,পুরুষকে আপারেশন করে নারীতে পরিণত করা, নারীকে পুরুষে পরিণত করা-- এ মারাত্নক কুফরী কাজগুলো কি যাদুবিদ্যা ছাড়া আর কিছু?
এগুলো কি নিজেকে আল্লাহ্ তা'আলার সমকক্ষ দাবি করার শামিল নয়?
এ কাজগুলো কি কুফরী নয়?
এতক্ষণ যে কথাগুলো বললাম সেগুলো শুধুমাত্র মনে চিন্তার খোরাক দেয়ার জন্য।প্রত্যেকটা বিষয়কেই আল-কুরআন ও সহিহ হাদীসের সাহায্যে ব্যাখা করা হয়েছে। যদি আমি এর সাথে দূর্বল হাদীসগুলো ও সাহাবাদের স্পষ্ট বর্ণনাগুলোকেও আনতাম, সাথে প্রমাণপঞ্জি, তবে লেখাটা অনেক বড় হয়ে যেত, তাই সেটা করি নি।কারণ সত্য প্রমাণের জন্য আমি যতটা প্রমাণ পেশ করেছি, তা যথেষ্ট ইনশাআল্লাহ্।
লিখেছেনঃ Aksir Ahmed
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন