স্লেভথিংক ┋ পর্বঃ ১-৩


 স্লেভথিংক╏পর্বঃ‌ ১

বেসিক্যালি ছোটবেলা থেকে নানু দাদু, আম্মা আব্বা, চাচা মামা, ফ্রেন্ডস,কলিগস, ইত্যাদি সবাই যা শিক্ষা দিয়েছে এর ৯০%+ হল স্লেভ থিংক, অর্থাৎ একজন কৃতদাস কিভাবে চিন্তা করবে সেটা নির্ধারণ করা। দেশের ছেলেমেয়েরা স্মার্ট হয়ে ওঠে স্কুল এবং কলেজ পার হয়ে ভার্সিটিতে পড়ার সময়ে বা তার কিছু পরে। প্রাইমারি বা সেকেন্ডারিতেই জিনিয়াসগুলাকে আইডেন্টিফাই করা যায়। আবার কিছু ব্যাক বেঞ্চার দুষ্টু পোলাপান থাকে যারা ক্যারিয়ারে শাইন করে। কেউ হয় স্ট্রিট স্মার্ট, আবার কেউ ইন্টেলেকচুয়াল। বাকিরা মিডিওক্রিটিতে আটকে থাকি। তো দেখা যায় যে ফ্যামিলির ব্যাকগ্রাউন্ড অনুযায়ী পরবর্তীতে কে কত বড়লোক হবে এটা জেনারেলি নির্ধারিত হয়ে যায় উইথ এ ফিউ এক্সেপশনস। কেউ কেউ বেশ মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি থেকে আসা সত্ত্বেও ফিনানশিয়াল ব্যারিয়ার ব্রেক করে অনেক টাকার মালিক হয়ে যায়।

বেশি টাকা ইনকাম করার কতকগুলা বেসিক ফর্মুলা আছে যেমন ডাক্তার বা লইয়ার হওয়া। চাউলের আড়ত কিম্বা ষ্টীল মিল। ভাতের হোটেল কিম্বা ফাস্ট ফুড। সেদিন আমার বউয়ের সাথে ডার্টি আলাপ করা ওর এক কলিগ বলছিল যে মাহিন তো রিটায়ার্ড, ও একটা ওষুধের দোকান দিলেই পারে। শুনে একেবারে ঝাঁট জ্বলে গেল। মুভি ফুভিতে দেখায় যে এভাবে বউ বা গার্লফ্রেন্ডের পিছে কেউ লেগে থাকলে তাকে গিয়ে নায়কটা ধোলাই দিয়ে আসে। আমি আবার এইসব পারিনা। আমার যত চোট এই সোশ্যাল মিডিয়াতেই।

তো স্লেভ থিংক হল এভাবে সবকিছুকে স্বাভাবিক ভেবে নিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের দিকে মনোযোগ দিয়ে পড়ে সংসারী হয়ে পড়া। সংসার করা হল স্লেভের কাজ। মানব জন্মের কারণ নাকি সংসার। স্লেভারি ছাড়া সংসার হয় কিভাবে? আমরা বিয়ে শাদী প্রেম ইত্যাদি করি জাস্ট দেখাদেখি। সবাই যা করে, আমরাও দেখাদেখি তাই করি। এটাই স্লেভ থিংক। ধরেন সব মুসলিম টুপি পাঞ্জাবী পাজামা পরে, আবার সব হিন্দু প্যান্ট শার্ট পরে, এরকম আর কি। সবাই একটা লাইন ঘাট ধরে ফেলি আমরা, তারপর অন্যদের নিয়ে হাহা হিহি, ছিছি, ইত্যাদি করতে থাকি। এটাই স্লেভ থিংক। এর কারণ হল যে আমরা জানিই না আমি কে, কেন এখানে এসেছি, কি আমার পারপাস। এগুলা কিছু যে জানেনা, সেই স্লেভ। এর চিন্তার কোন মাথামুণ্ডু নাই। এই ব্যক্তি সবার দেখাদেখি দৌড়াচ্ছে। সেই যে দুই ইঁদুরের গপ্প -- এক ইঁদুর জানপ্রাণ ছিঁড়ে দৌড়াচ্ছে দেখে আরেক ইঁদুর বলে কিরে কি হইছে? ওই ইঁদুর বলে আগে দৌড়া পরে শুনবি। তো দুই ইঁদুর প্রাণপনে ছুটছে। ছুটতে ছুটতে দ্বিতীয়টা বলে এবার বল ঘটনা কি। প্রথমটা তখন বলে, আর কইস না, হাতির মায়েরে কে জানি ধরছে আর দোষ পড়সে আমার উপরে!

তো স্লেভ থিংক ব্যাপারটা এরকম যে আপনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যা যা ভাবেন, এর প্রায় সবই স্লেভ থিংক। এটাতে মাইন্ড করার কিছু নাই কারণ ওই যে বললাম আমাদের অ্যান্সেস্টর নানা দাদা থেকে শুরু করে প্রতিবেশি পরিজন সবাইই সারাক্ষণ স্লেভ থিংকই করে চলে। এর বাইরে কেউ আসলে কিছু ভাবতে শেখেনি। কিন্তু তাইলে আমি কিভাবে এটা বুঝলাম যে সব কিছুই স্লেভ থিংক? মেয়েবি আমি একটা আস্ত পাগল? তা নয়। যুগে যুগে আমার মত কিছু মানুষ এসেছে যে কোন কারণে হোক এদের চোখ খোলা। এরা সবার ভণ্ডামি খুব স্পষ্ট দেখতে পায়। এটা গিফট কিম্বা কার্স যেটাই হোক না কেন।

তো আমাদের বেসিক ভুলটা যা হয় যে আমরা অন্যদেরকে আমাদের চেয়ে ইনফেরিওর মনে করি। যেমন নাস্তিকরা ধার্মিকদের এবং ধার্মিকরা নাস্তিকদের। হিন্দুরা মুসলমানদের এবং মুসলিমরা হিন্দুদের। বাঙালিরা ইন্ডিয়ানদের এবং ইন্ডিয়ানরা বাঙ্গালিদের। কম্যুনিস্টরা ক্যাপিটালিস্টদের এবং ভাইস ভার্সা। ছেলেরা মেয়েদের এবং তার উল্টাটা। এই নিজেকে সুপিরিয়র ভাবাটাই একটা স্লেভ থিংক। এর মধ্যে সবচেয়ে পাওয়ারফুল স্লেভ থিংক হল ফিনানশিয়াল স্লেভ থিংক। মানুষ গরীব হলে এটা পৃথিবীর সবচেয়ে অপমানজনক একটা ব্যাপার। এই অপমানের কারণেই মানুষ অপরাধ করে, আম্লিক করে, র-সিআইএ-মোসাদ, ক্রসফায়ার সিন্ডিকেট, ব্যাংক ডিফল্টার গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ভূমি দস্যু, পলিটিশিয়ান, কর্পোরেট শিটহেড, ইউএসএইড, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, বিল গেইটস, জর্জ সরোস, জো বাইডেন, বিম্পি, জামাত, এরশাদ, হেফাজতে ইসলাম, ইস্কন, ইত্যাদি ইত্যাদি। বিসিএস ক্যাডার আর মিলিটারি অফিসার, পুলিশের এসাই, RAB Chief। অর্থাৎ আপনি যে পথেই অগ্রসর হননা কেন, আপনি স্লেভ থিঙ্কের মধ্যে দিয়েই অগ্রসর হচ্ছেন।
এখন আপনি বলতে পারেন, তাইলে তো আর কিছুই নাই স্লেভ থিংক ছাড়া। তাইলে আমার স্লেভ থিংকই ভাল। আর তো কিছুই নাই। না। ইহা ঠিক নহে। স্লেভ থিঙ্কের বাইরে অনেক কিছুই আছে কিন্তু আপনার সেটা সম্পর্কে কোন ধারণা নাই। এই ধারণাটা তৈরি করে দেয়ার জন্যই এই লেখা। কারণ একটা ধারণা ঠিকমত বুঝতে পারলে সেটা অ্যাপ্লাই করে বিশ্বজয় করা সম্ভব। এবং ঠিক সেটাই আমরা করছি।

পৃথিবীর মানুষকে একটা জিনিষ বুঝানো সবচেয়ে কঠিন যে সে একটা স্লেভ। যে যত বেশি ইগোবান, সে তত বেশি রেজিস্ট করে। কিন্তু ঘুরে ফিরে সবাই স্লেভ থিঙ্কে থাকতে বাধ্য কারণ আমাদের এই রেয়াল্মটা ম্যাক্রো লেভেলে একটা স্লেভারি সিস্টেম। আমাদের সমাজের যতগুলা স্তর আছে প্রতিটাতে বিভিন্ন স্কিলের স্লেভ এমপ্লয় করা আছে যারা যার যার লেভেল অনুযায়ী স্লেভারি করে যাচ্ছে। কিছু লোক অ্যাকচুয়ালি বুঝতে পারে যে সে স্লেভ। কিন্তু মোস্ট কেসে এদের স্পিরিট এতটাই ভাঙ্গা থাকে যে এরা ধরেই নেয় যে এই স্লেভারি সিস্টেম ভেঙ্গে কেউ কোনদিন বের হতে পারবেনা। কাজেই ফাইট শুরু করার আগেই হার স্বীকার করে বসে থাকে।

অর্থাৎ মূলত, স্লেভ দুই শ্রেণীর, ১) যারা জানে তারা স্লেভ, আর ২) যারা জানেনা। যারা বেশ টাকা পয়সার মালিক বা কোন কারণে বিখ্যাত হয়ে গেছে, টিভি স্টার বা এই জাতীয় কিছু, তারা মনে করে তাদের জীবন ধন্য। তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে। কাজেই তারা শান্তিতে মরতে পারবে। কিন্তু আসলে তা নয়। এই খ্যাতি প্রতিপত্তি আসলে একটা ভুয়া জিনিষ। এটা অনেকেই হাড়ে হাড়ে বোঝে কিন্তু তারপরও গরীব হওয়ার চেয়ে কম অসম্মানজনক বিধায় কম্প্রোমাইজ করে বসে থাকে। বেসিক্যালি অ্যাভারেজ মধ্যবিত্ত তো বেসিক সার্ভাইভাল ইন্সটিংট থেকেই বের হতে পারেনা।

বিল পেমেন্ট, ব্যাংক ব্যালেন্স, কলেজ এজুকেশন, মরগেজ, গাড়ি, জমি কেনা, অ্যাপার্টমেন্ট কেনা, এই ইঁদুরের দৌড় একবার শুরু হলে আর শেষ হয়না। তবে হ্যাঁ, আমার চাচাদের দেখেছি আমেরিকা গিয়ে চাকরি করে আমার বাপের জমি বাড়ি ইত্যাদি কিনে কিনে বাড়ি ঘর করে টরে অনেক টাকার পেনশনসহ রিটায়ার করতে। আমেরিকায় বাড়ি আছে একাধিক, মরগেজ পেইড। এই স্লেভারি খুব সুখের স্লেভারি। কিন্তু উনাদের চিন্তা কখনও স্লেভ থিংক থেকে বের হয়নি। উনারা জাস্ট অত্যন্ত স্মার্টনেস আর অধ্যবসায়ের সাথে কাজ করে যার যার জীবনকে একটা আরামদায়ক স্টেটে নিয়ে এসে স্লেভ মাস্টারদের এক প্রকার ফাঁকি দিতে পেরেছেন। এবং আমাদের আত্মীয় বন্ধু সবাই এটাই অ্যাকমপ্লিশ করার জন্য ইঁদুর দৌড় পাড়তে থাকে। কেউ কেউ পেরে যায়, তবে মেজরিটি ওই দৌড়াতে দৌড়াতেই মরে।

এখন যেটা হয়েছে পৃথিবীতে যে একদল লোক স্লেভ থিঙ্কের বাইরে চিন্তা করার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে। এরা সবাই জানে যে আমরা একটা স্লেভারি সিস্টেমে বন্দী এবং কোন সুপারম্যান এসে আমাদের মুক্তি দিয়ে যাবেনা কোনদিন। এই স্লেভারি আমাদেরই বন্ধ করতে হবে ফাইট দিয়ে। এই ফাইটটা দেয়ার জন্য সবার আগে আমাদের কিছু তথ্য জানতে হবে যে কারা এই স্লেভ সিস্টেমের মালিক। তারা কোথায় থাকে, কি খায়।

স্লেভারি সিস্টেমটা এক ধরনের হাইয়ারআর্কিকাল মডেলে চলে সেটা আগেই বলেছি কিন্তু সেই পিরামিডের সব লেভেল সবার কাছে দৃশ্যমান নয়। প্রতিটা স্তর বুঝতে হলে প্রচুর ইগো কমাতে হয়, কারণ সারাজীবন স্লেভ থিংক ছাড়া আর কিছু না করা এবং করতে না দেখার দরুণ কেউ বুঝতেই পারেনা স্লেভ থিংক বলে কিছু আছে এবং সেটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

 

স্লেভথিংক╏পর্বঃ ২

আপনি ধর্মবিশ্বাসী, নাস্তিক, সেকুলার, বাম, মডারেট, কনসার্ভেটিভ, লিবারাল, নাইহিলিস্ট, এপিকিউরিয়ান, ডায়োনিসিয়ান, স্টইক, অ্যাগ্নস্টিক, হিডনিস্ট, ইত্যাদি যদি হয়ে থাকেন, তবে আপনি স্লেভ থিংক দ্বারা মাইন্ড কন্ট্রোলড। একমাত্র যাদেরকে আপনারা কনস্পিরেসি থিয়োরিস্ট বলে মনে করেন, শুধু তারাই  স্লেভ থিংকের বাইরে চিন্তা করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। তো দেখা যায় যে যারা সিস্টেমের ভিতরে খুব ডীপলি ইনভেস্টেড, এদেরই সবচেয়ে কষ্ট হয় স্লেভ থিংক থেকে বের হয়ে আসতে।
 কারণ এদেরকে যে মগজ ধোলাই দেয়া হয়েছে সেটাই সবচেয়ে গভীরতম, কারণ এরা দুর্দান্ত প্যাশনের সাথে মগজ ধোলাই গিলতে গিলতে এক প্রকারের ডগম্যাটিক ফ্যানাটিক হয়ে গেছে যেটা কেউ বুঝতে পারেনা কারণ এরা খুবই হাই ইন্টেলেক্টের হওয়ার কারণে এদের ল্যাংগুয়েজ অর্গান খুবই পাওয়ারফুল হয়, যেটা এরা নির্দয়ভাবে মানুষকে বুলি করার জন্য ব্যবহার করে।

এদের ভাষাগত ভোক্যাবুলারির ঝুড়ি খুবই বড় হওয়ার দরুণ কেউ এদের সাথে যুক্তি তর্ক করতে আসলে এরা যুক্তিতে হেরে যাওয়ার লক্ষণ দেখামাত্র এদের টিপিকাল লিঙ্গুইস্টিক বুলিইং শুরু করে দেয় এবং মানুষকে পালাতে বাধ্য করে। যতবারই আপনি এদের যুক্তিতে হারান না কেন, এরা সর্বক্ষণ একটা ভাব নিয়ে থাকে যে আপনি কিছুই জানেন না, কিছুই বোঝেন না, আপনার সত্যিকারের কোন জ্ঞান নাই, কাজেই আপনার সাথে কথা বলা ওদের জন্য রীতিমত অসম্মানজনক এবং সময় নষ্ট।
রেস্ট অ্যাশিওরড যে এর পুরাটাই এদের একটা ডিফেন্স মেকানিজম। জাস্ট এরা সিস্টেমের ভিতরে খুব ডীপলি ভেস্টেড (গভীরভাবে নিহিত) বিধায় এদের পক্ষে কখনও সত্য স্বীকার করা সম্ভব না কারণ এক, মোটা বেতনের চাকরিটা থাকবেনা, আর দুই প্রেস্টিজ (মর্যাদা/খ্যাতি) থাকবেনা কারণ এরা নিজেদেরকে আল্লার ঠিক নিচেই স্থাপিত হওয়ার একটা ভাব নিয়ে চলে বিধায় এদের পক্ষে কোন অজ্ঞতা বা ভুল স্বীকার করা অসম্ভব।

এই স্পেসিফিক স্লেভ থিঙ্কিং টাইপটা যথেষ্ট পরিমানে ইন্টেলিজেন্ট, অ্যাকমপ্লিশড, এডুকেটেড হয় বিধায় নিজেদেরকে এরা এক ধরনের আল্টিমেট অথরিটি হিসাবে প্রেজেন্ট করে রাখে। এদের হামবড়া হাবভাব দেখে অ্যাভারেজ পার্সনরা ইন্টিমিডেটেড হয়ে থাকে এবং এর থেকে একটা ফিডব্যাক লুপ তৈরি হয় যা এই টাইপের ব্যক্তিদের ইগোকে কনস্ট্যান্টলি ফিড করতে থাকে। এরা ছোটখাটো কিম্বা বড়সড় একটা গ্রুপের সুপিরিয়র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকতে পছন্দ করে তাই সাধারণত এরাই সিস্টেমের "গো টু গাই" হিসাবে পরিচিত থাকে, অর্থাৎ কেউ কোন ঝামেলায় পড়লে বা কোন বিষয় ঠিকমত বুঝতে না পারলে এদের শরণাপন্ন হয়।
এই পুরা এনার্জেটিক ডাইনামিকটা ফুলে ফেঁপে উঠতে উঠতে এদের ভিতরে এক ধরনের মেগালোম্যানিয়া তৈরি করে এবং এরা তখন সিস্টেমের গেইটকিপারে পরিণত হয়। একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন যে আপনি আমার এই ডেসক্রিপশনের সাথে খাপে খাপে মিলে যায় এরকম বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে চেনেন বা আপনি নিজেও এই টাইপ হতে পারেন। এই ব্যক্তিরা স্লেভ থিংকের পরাকাষ্ঠা হয় এবং এদের কারণেই বেশিরভাগ মানুষ স্লেভ থিংক থেকে বের হতে পারেনা। কারণ কেউ যদি সাহস করে এদের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করে তখন সাথে সাথে এরা ওই ব্যক্তিদেরকে কনস্পিরেসি থিয়োরিস্ট, পাগল, অশিক্ষিত, এইসব খেতাবে ভূষিত করে সমাজের বাইরে বের করে দেয়। এটাকে বলা হয় ক্যারেক্টার অ্যাসাসিনেশন (চরিত্র হনন)।

এই ভয়ে অল্প জ্ঞানওয়ালা বিনয়ী সাধারণ মানুষ এদের আধিপত্য মেনে নিয়ে তখন পাবলিকলি আর স্লেভ থিংকের বাইরে কিছু বলার সাহস পায়না। তখন "নাম বললে চাকরি থাকবেনা" টাইপের হাস্যরস দিয়ে সত্য এড়িয়ে চলাই হয়ে দাঁড়ায় আমাদের কালচার। এভাবে আস্তে আস্তে মিথ্যার কাছে সত্যের পরাজয় ঘটতে থাকে এবং জাতি ও মানবতা অন্ধকার থেকে আরও বেশি অন্ধকারে ডুবতে থাকে।

প্রগ্রেসিভ, সেকুলার, বা নাস্তিক স্লেভ থিঙ্কাররা আমাদের মৌলবাদী স্লেভ থিঙ্কারদের থেকে আরও বেশি ভয়ংকর হয় কারণ এরা কিছু পুঁথিগত তথাকথিত "বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের" নামে কিছু ম্যাসিভ মগজ ধোলাইয়ের স্বীকার হয় যেটাকে এরা মনে করে "একমাত্র প্রকৃত জ্ঞান"। অমোঘভাবে এই প্রগ্রেসিভ স্লেভরা সবাইকে বুঝিয়ে দেয় যে একমাত্র তাদের "বিজ্ঞান ধর্মই" "হালাল" এবং বাকি সবকিছু কনস্পিরেসি থিওরি। প্রগ্রেসিভ স্লেভ থিঙ্কার বা গেইটকিপাররা অল্পবিদ্যা নিয়ে খুব বাড়াবাড়ি আচরণ করতে থাকে কিন্তু ইন জেনারাল এদের আইকিউ বেশি হওয়ার কারণে এদের ডগম্যাটিজম এবং ফ্যানাটিসিজমকে এরা প্রচণ্ড নিখুঁতভাবে মাস্কিং করতে পারে যা খুব কম লোকই ধরতে পারে।
এই ক্লোকিং এবং বুলিয়িং, এই দুইয়ের সমন্বয়ে এরা খুব শক্তভাবে স্লেভারি সিস্টেমের দাসত্ব করতে থাকে এবং এই মিনিয়ন ছাড়া কিন্তু স্লেভারি সিস্টেমের মাস্টাররা, অর্থাৎ যারা এই স্লেভারি সিস্টেম বানিয়েছে তারা কিছুই করতে পারত না। এই জন্য বলা হয় যে ছাগল চরাতে একজন মেষপালক লাগে, কিন্তু মানুষ চরাতে কোন পালক লাগে না, মানুষ নিজেরাই একদল আরেকদলকে ভেড়ার মত চরায়। আর ঠিক এই কারণেই আমরা স্লেভারি সিস্টেমের কোন মাস্টার বা মেষপালককে দেখতে পাইনা। দেখি শুধু এই গেইটকিপারদের যাদেরকে আমরা সম্ভ্রম করে চলি।

স্লেভ থিংক ব্যাপারটা তারাই বুঝতে পারে যারা নিজের সাথে নিজে প্রচুর সময় দেয় অর্থাৎ যারা প্রচুর সময় একলা কাটায়। এর কারণ হল যে আপনি যখন সমাজে বিচরণ করছেন, তখন আপনার চারপাশে সবাই স্লেভ এবং স্লেভ থিংকের ভিত্তিতে কথা বলছে এবং কাজ করছে। কেউ কেউ ভিতরে ভিতরে স্লেভ থিঙ্কার না হলেও সমাজের ভয়ে সবাই স্লেভের মত আচরণ করে, কাজেই আপনার তো বাই ডিফল্ট সেটা জানার কোন কারণ নাই। কাজেই আপনিও সবার সাথে ফিট ইন করার জন্য সবার সাথে কমবেশি একমত হচ্ছেন, আপনিও অন্য সবার মতই স্লেভ থিংক করে স্লেভ হয়েই আছেন।

এইজন্য যারা নিজের চিন্তা নিজে করেনা, তারা কখনও স্লেভ থিংক থেকে বের হয়ে আসতে পারেনা। কারণ সিস্টেমটাকে ডিজাইন করা হয়েছে স্লেভদের জন্য। এখানে সবাই স্লেভ থিংক করতে বাধ্য। কেউ যদি স্লেভ থিংকের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করে তখন মেট্রিক্স মুভির মত সমাজের প্রতিটা ক্যারেক্টার তখন ওই নন-স্লেভ থিঙ্কারের শত্রু হয়ে দাঁড়ায়। এই সিচুয়েশন হ্যান্ডল করা সহজ নয় কারণ আপনার সারাক্ষণ স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতরাতে হবে। তবে গুড নিউজ হচ্ছে, কিছুদিন এই সাঁতার দেয়ার পরে আপনার ব্রেইন মার্সেলগুলা অনেক স্ট্রং হয়ে যায় এবং আপনি ধীরে ধীরে একজন স্লেভ থেকে একজন স্বাধীন ব্যক্তিতে ট্রান্সফর্ম ( রূপান্তরিত) হওয়া শুরু করবেন।

স্লেভ থিংকের বেস্ট উদাহরণ হল করোনাভাইরাস প্ল্যান্ডেমিক। আমি প্যান্ডেমিক না লিখে প্ল্যান্ডেমিক লিখেছি ইচ্ছা করেই কারণ এটা কোন সত্যিকার মহামারি নয়, এটা একটা সাজানো শো'অপ। যারা স্লেভ থিঙ্কার, তারা আমাদের সাথে টুথ অ্যান্ড নেইল যুদ্ধ করে বুঝাতে চায় যে এটা আসলেই একটা মহামারি এবং এটাকে সাজানো বা নকল মনে করা কনস্পিরেসি থিওরি ছাড়া কিছুই না কারণ ওদের কাছে নাকি সর্বপ্রকার প্রুফ এবং ডেটা আছে যে এটা আসলেই একটা মারাত্মক ভাইরাস।
মজার ব্যাপার হল যে ভাইরাস আসলে কি, এর কাজ কি, কিভাবে এটা তৈরি হয়, ইত্যাদি নিয়ে বিজ্ঞানের অনেক কন্ট্রোভার্সি বা সংশয় আছে। আপনি যদি ভাইরাস সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা যেসব তথ্য জানে সেগুলা ভালমত স্টাডি করেন দেখবেন যে ভাইরাস কখনও একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়ায় না।
কিন্তু আমাদের স্লেভ থিঙ্কাররা এটা মানতে নারাজ। কারণ আমাদের ডাক্তার আর অর্থোরিটিরা (বিশেষজ্ঞ'রা) যে অনেক মোটা অংকের ভর্তুকি পাচ্ছে কোভিডের মিথ্যাকে প্রচার করার জন্য। কিন্তু তারচেয়েও ভয়ংকর হল যে সো কল্ড অর্থোরিটি ফিগাররা এত বেশি ভেস্টেড হয় যে এরা নিজেরাই ধর্ম বিশ্বাসের মত বিজ্ঞান বিশ্বাসী হয়ে সবজান্তা হয়ে ওঠে। এবং যারা স্লেভ থিংকের বাইরে স্বাধীন চিন্তা এবং সঠিক প্রমানের ভিত্তিতে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বসে থাকে।
যে ব্যক্তি স্লেভ থিংক করে, সে স্বভাবতই জানে না যে সে একজন স্লেভ এবং তার চিন্তা সীমাবদ্ধ। এটা বাংলাদেশের ৯৯.৯৯% মানুষের ক্ষেত্রে এখনও প্রযোজ্য বলা যায়। কিন্তু সুখবর হচ্ছে যে এই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে পুরা পৃথিবীব্যাপী। ইন্টারনেটের কারণে মানুষের স্লেভ থিংক থেকে বের হয়ে আসা সহজ হয়েছে।
এখন সবকিছুই নিজে নিজে ভেরিফাই করে দেখা অনেক সহজ। কিন্তু ঝামেলা হল যে গুগল, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, বিগ টেক এবং বিগ মিডিয়া এরা সবাই স্লেভ থিংকের প্রোমোটার বিধায় আপনি এখন আর গুগল সার্চ ব্যবহার করে সুবিধা করতে পারবেন না। ইউটিউব হাজার হাজার ট্রুথার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে রিসেন্টলি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে কেউ কোন কোভিডকে এক্সপোজ করা পোস্ট দিলে সেটা সেন্সরড হয়ে যায়, কিন্তু তারপরও এত বেশি মানুষ এখন স্লেভ থিংক থেকে বের হয়ে গেছে সারা পৃথিবীতে যে ডীপ স্টেট কাবাল আর আমাদের সাথে পাল্লা দিয়ে পারছে না। কোন সত্যই এরা আর গোপন রাখতে পারছেনা।
কিন্তু এদের একমাত্র ভরসা হল স্লেভ থিঙ্কিং মেজরিটি যাদের কোন ক্লুই নাই যে আসলে পৃথিবীতে কি ঘটছে। এরা টেলিভিশনে যা দেখে বিশ্বাস করে। এরা করোনা ভাইরাসকে সত্যিকার মহামারী মনে করে। এরা মনে করে জো বাইডেন ইলেকশনে জিতে গেছে আর ট্রাম্প একজন বেয়াদপ পাগল। এই লোক কিভাবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছে এটাই ওদের ঘটে কুলায়না।

আসল সত্যি হল যে ট্রাম্পের কারণে স্লেভারি বিরোধীদের কাজ অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে এবং আরও হচ্ছে। আপনারা বুঝে নেন যে স্লেভ থিংকের বাইরে চিন্তা করতে পারা মানুষদেরই সাধারণত কনস্পিরেসি থিয়োরিস্ট বলা হয়।
এটা একটা সিস্টেমের ট্রিক্স যাতে কেউ নিজের চিন্তা নিজে করার চেষ্টা না করে। আপনাকে যদি কেউ কনস্পিরেসি থিয়োরিস্ট বলে, তাহলে গর্বিত হন, কারণ এটাই স্লেভ থিংক থেকে বের হয়ে আসার প্রথম ধাপ। ধীরে ধীরে আপনার জ্ঞান অর্জন চালিয়ে যান, কারণ আপনি সঠিক পথেই আছেন।

স্লেভথিংক╏পর্বঃ ৩

অসাধারণ এক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা সবাই কারণ বলা হয় যে হাজার বছরের দাসত্ব থেকে পৃথিবীর মানবতা বের হয়ে আসছে। আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে আছি এবং এই যুদ্ধ হল চেতনার যুদ্ধ। বাংলাদেশের মানুষ চেতনা শব্দটাকে এখন ব্যঙ্গ করে কথা বলে কারণ এটাকে আমাদের রাজনৈতিক যৌনকর্মীরা অপব্যবহার করতে করতে ঢিলা করে ফেলেছে। চেতনার মগজধোলাই এখন চামচাবাহিনী ছাড়া আর কেউ গেলেনা।
স্লেভথিংক থেকে বের হয়ে আসার এটা একটা লক্ষণ। এই দেশের মানুষ অসীম ধৈর্যের সাথে স্বৈরাচারী ধর্ষকদের সহ্য করে চলেছে কিন্তু তারপরও কেউ অন্য কোন রাজনৈতিক দলকে সাপোর্ট দেয়ার কথা ভাবছে না কারণ ডীপ ডাউন সবাই জানে এইসব গারবেজ রাজনৈতিক দলগুলা আসলে ভিতরে ভিতরে একই মাল। ইসলামী দলগুলা ফ্যানাটিকাল ডগম্যাটিক টোটালিটারিয়ান; বাম রাজনীতি তো ঘোষণা দিয়েই স্বৈরাচার। আর ইন্ডেপেন্ডেন্ট এমন কেউ নাই যার কোন কোমরের জোর আছে কোন পরিবর্তন আনার।
কাজেই আমাদের "কিচ্ছু করার নাই" মন্ত্র পড়তে পড়তে এদেরকে আমাদের মাথায় মুততে দেয়া ছাড়া আমাদের আর কিচ্ছু করার নাই। আর এটাই হল আল্টিমেট স্লেভথিংক। এটা থেকেই আপনাদের বের হয়ে আসতে হবে, কারণ অনেক কিছুই করার আছে যেগুলা আপনারা কেউ করছেন না বিধায় আমাদের মাথায় মুতা থামার কোন লক্ষণ নাই।

পৃথিবীর অনেকগুলা স্লেভথিংক মগজধোলাইয়ের মধ্যে একটা প্রধান হল নাসা। এই এজেন্সিটা মূলত একটা মিলিটারি আউটফিট যাদের কাজ হল পৃথিবীর মানুষকে চরম পর্যায়ের মগজধোলাইয়ের উপরে রাখা। আপনি যদি পৃথিবীর মানুষকে বুঝাতে পারেন যে পুরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কোন জনমানব, পোকামাকড়, কিচ্ছু নাই, শুধু আমরা একটা ছোট্ট নীল গ্রহে কেমনে কেমনে অ্যামিবা থেকে আল্লার ইচ্ছায় তৈরি হয়েছি, এরপরে এদেরকে কোন স্লেভথিঙ্কের মগজধোলাই দেয়া পানির মত সহজ।
কাজেই আমাদের মন খাঁচার একটা বিশাল গরাদ হল নাসা। কার্ল সেগান, স্টিভেন হকিং, নীল ডিগ্রাসি টাইসন, মিচিও কাকু, প্রমুখের কাজ হলো আসল সত্য বাদ দিয়ে কিছু ঝালমুড়ি টাইপের রম্যরচনার সাথে কিছু ডিজিটাল কার্টুনের সমন্বয় করে পাবলিককে বুঝানো যে পুরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে আমরা ছাড়া আর কোথাও কেউ নাই, আর যদি থাকেও তারা এত লক্ষ লক্ষ লাইটইয়ার পার হয়ে আমাদের মত গরীব, আনসিভিলাইজড প্ল্যানেটে (অসম্পূর্ণ গ্ৰহ) কেন আসবে? দিন-রাত হাই টেকনোলজি আর টেলিস্কোপ ব্যবহার করেও কোথাও কাউকে যেহেতু এতদিন খুঁজে পাওয়া যায়নি, কাজেই এরকম কারও অস্তিত্ব থাকার কোন কারণ নাই। যদি এরকম কেউ থাকত, তাহলে এতদিনে নিশ্চয়ই একবার হ্যালো জানাত।

নাসার সাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করে ন্যাট জিও কিম্বা হিস্টোরি চ্যানেলের "এনশেন্ট এলিয়েন" টিভি সিরিজ। এরা বিভিন্ন আর্কিওলজিকাল আর্কিটেকচার (প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য)  ইত্যাদি নিয়ে বিশ্লেষণ করে বের করে যে হ্যাঁ, যা মনে হয় হাজার হাজার বছর আগে কোন এলিয়েন সভ্যতা পৃথিবীতে এসেছিল যারা পিরামিড টিরামিড বানাতে পারত। কিন্তু এরা এখন আর নাই। এরা আর কোনদিন ফিরে আসবেনা সম্ভবত কারণ নাহলে এতদিনে নিশ্চয়ই একবার এসে হ্যালো বলত।
এই যে এলিয়েন বলে পৃথিবীতে অন্তত কিছু নাই এ ব্যাপারে আমাদের ধার্মিক, নাস্তিক, সেকুলার, মডারেট, বৈজ্ঞানিক, বাম, সবাই তো একমত, তাইনা? এটাই হল একটা বৃহত্তম স্লেভথিংক। পৃথিবীতে এলিয়েন শুধু যে আছে তাই না, এরা আমাদের স্লেভ বানিয়ে রেখেছে এবং আপনারা সবাই যে স্লেভথিঙ্কে আবদ্ধ হয়ে আছেন, তার পিছনে যেসব কারণ বিদ্যমান তার সবই এই এলিয়েনদের এজেন্ডা। অর্থাৎ এলিয়েন বলে কিছু নাই যে মনে করে বসে আছে, তারচেয়ে ক্লুলেস, অজ্ঞ, মগজধোলাইত স্লেভ থিঙ্কার আর কেউই না!

E=mc2 এটা তো আমরা সবাই জানি, তাইনা? কেউ কি প্রমান করে দেখাতে পারবেন? আমি নিজে এটা পারব না, এবং আমার ধারণা আমার পরিচিত খুব কম মানুষই এটা পারবে। কিন্তু তারপরেও আমরা বিশ্বাস করি যে এটা একটা কারেক্ট ফর্মুলা। এর কারণ কি? কারণ এটা আমাদের টেক্সট বই ইত্যাদিতে আছে। আমরা জানি যে আইনস্টাইন খুব বড় একজন বৈজ্ঞানিক। উনার কাজ নিশ্চয়ই কোন দামী জার্নালে পাবলিশড এবং পিয়ার রিভিউড হয়েছে।
এগুলা অনুমান করে নিয়ে আমরা বিনা প্রশ্নে সবাই মেনে নেই যে আইনস্টাইনের এই ফর্মুলাটা সঠিক। অর্থাৎ কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে যে এই ফর্মুলা যে আসলেই কারেক্ট এর প্রমান কি? তাহলে তার উত্তর হল আমাদের সিস্টেমের উপরে বিশ্বাস। এরচেয়ে বেশি গভীরে আমরা কেউ আসলে যাইনি। আমরা ধরে নিয়েছি কেউ না কেউ নিশ্চয়ই এটা ভেরিফাই করে দেখেছে। এই বিশ্বাসের ভিত্তিতেই আমরা বিজ্ঞান বিশ্বাস করি। এই কারণে বিজ্ঞানকে বলা হয় একটি ধর্ম। এটা বিশ্বাসের উপরে চলে।

কাউকে যখন আমি জিজ্ঞাসা করি যে করোনাভাইরাস যে আসলেই একটা প্যান্ডেমিক তার প্রমান কি? তখন সবাই আমাকে মিডিয়ার কথা বলে, ওয়ার্ল্ড হেলথ ফাউন্ডেশনের কথা বলে, ফাউচি কিম্বা গেইটসের কথা বলে। কেউ বা আমাকে একটা লিংক পাঠায় যে নর্থ কোরিয়ার কোন অবস্কিওর গ্রামে নাকি কভিডকে আইসোলেট করা হয়েছে! সারা পৃথিবীব্যাপী অনলাইনে এই প্যান্ডেমিক ট্র্যাকিং করা হচ্ছে এবং পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে হাজার হাজার রুগী ধরা পড়ছে প্রতিদিন। কিন্তু ওয়েইট এ মিনিট! পিসিআর টেস্টটা যে আবিষ্কার করেছে সে নিজেই বলে গেছে যে এই টেস্টের মাধ্যমে এভাবে কোন ভাইরাসকে আসলে সনাক্ত করা যায় না। তাহলে? সারা পৃথিবী তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে লকডাউন শাটডাউন কোয়ারেন্টাইন আরও কত রকম স্বৈরাচারী এবং অকার্যকর সব নিষেধাজ্ঞা? জ্বী, পুরাটাই মগজধোলাই। স্লেভথিঙ্কের কারণে পৃথিবীর মানুষ বুঝতে পারছে না যে করোনা প্যান্ডেমিক নকল সাজানো। ভাবা যায় ব্যাপারটা?

কিন্তু পৃথিবী এভাবেই চলে। বাংলাদেশের মানুষকে ভোট দিতে না দিয়ে স্বৈরাচারী গোবরমেম যখন চিরতরে আমাদের মাথায় উঠে বসল, সেটাও সম্ভব হয়েছে স্লেভ থিঙ্কেরই কারণে। পৃথিবীর মানুষকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে অর্গানিক সিস্টেমের কথা বুঝানো হয়েছে সেটাও আর অর্গানিক নাই। ইভিএমের মাধ্যমে প্রতিটা ভোটকে রিগ করা হয়।
কিন্তু আমাদের দেশে ওইভাবে ইভিএমের মাধ্যমে রিগিং করার জন্য রয়ের যে পরিমান স্কিলড এজেন্ট বাংলাদেশে ডিপ্লয় করতে হবে, সেটা খরচের দিক দিয়ে ফিজিবল না হওয়াতে ডীপ স্টেট আর অত চিন্তা ভাবনা না করে স্রেফ পুলিশ আর মিলিটারির মাধ্যমে ভোটটা হাইজ্যাক করে আমাদের মাথায় চড়ে গেছে। এই কাজটা ওদের জন্য পানির মত সহজ হয়েছে কারণ গত ৫০ বছরে ইন্ডিয়ান ডীপ স্টেট আমাদের পুরা সিস্টেমটাকে ফোঁপরা করে ওদের এজেন্ট এবং অ্যাসেটদেরকে বসিয়ে গেছে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আপনাদের মনে আছে এর আগেও ফখরুদ্দীন, মাইনুদ্দিনের মাধ্যমে আম্লিককে আমাদের মাথায় চড়িয়েছিল দুই না তিন সাইকেল আগেও।

এখানে স্লেভথিংকটা হচ্ছে যে জনগণ মনে করে গোবরমেম তাদের সেবায় নিয়োজিত। হাঃহাঃহাঃ! এর চেয়ে হাসির কথা আর কি হতে পারে? কিন্তু এই মগজ ধোলাইই আমাদের সবাইকে দেয়া হয় এবং আমরা সেটাই গিলি। আমার অনেক পণ্ডিত বন্ধু ফন্দু আছে যারা খুব বৈজ্ঞানিকভাবে জানে যে ডীপ স্টেট ফেট, এলিয়েন ফেলিয়েন বলে কিছু নাই। এগুলা সব কনস্পিরেসি থিওরি।

বোকা,সাদাসিধা লোকদের ধরা খাওয়ানোর জন্য ইউটিউব, ইন্টারনেটে পাগল ছাগল মানুষরা মিলে কিছু আজগুবি আইডিয়া বের করেছে। অনেকে বিশ্বাস করে যে পৃথিবী নাকি গোল নয়, ফ্ল্যাট! এই ধরনের পাগলামি টাইপের চিন্তা করা আসলে মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ। এরা হয় পাগল নয় পেট খারাপ।

আসল সত্য হল যে সবাইকে মগজধোলাই দেয়া যায়না। সবাই স্লেভথিংক করেনা। বাংলাদেশের কিছু চালাক ব্যক্তিদের কথা হচ্ছে এলিয়েনরা কেন শুধু ইংল্যান্ড আমেরিকাতেই ল্যান্ড করে?

কই বাংলাদেশে তো কোন এলিয়েন অ্যাবডাকশন হয়না? এদের কাছে আমার প্রশ্ন হল -- হলে কি তুমি জানতে পারবা? বাংলাদেশে যারা হোমোসেক্সুয়াল তারা সব কোথায়? কই, কোথাও তো এদের দেখিনা? এর উত্তর খুব সহজ। বাংলাদেশ একটা গভীর মগজধোলাইত দেশ! এই দেশের মানুষ স্লেভথিঙ্কের বাইরে কিছু ভাবতে পারেনা। হোমোসেক্সুয়ালরা এখানে যা করে, লুকায়ে করে। ক্লিয়ার?
আজকে স্লেভথিঙ্কের সাথে এলিয়েনের সম্পর্কতেই সীমাবদ্ধ রাখছি। সাম্প্রতিক ইজ্রায়েলের স্পেস নিরাপত্তা মন্ত্রী (প্রাক্তন) একটা বক্তব্য দিয়েছে যে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এলিয়েনদের "গ্যালাক্টিক ফেডারেশনের" সাথে পরিচিত।
এই বিষয়টা ট্রাম্প পাবলিকের কাছে প্রকাশ করতে চেয়েছিল, কিন্তু এলিয়েনরাই তাকে নিষেধ করেছে কারণ পৃথিবীর মানুষ এখনও খুব বেশি রকমের স্লেভথিঙ্কার। ইটিদের অস্তিত্ব এরা হ্যান্ডল করার মত পর্যায়ে আসেনি।

মজার ব্যাপার হচ্ছে যে আমাদের মগজধোলাই প্রাইমটাইম মিডিয়াগুলা সবাই এই খবর ছাপিয়েছে, এবং এতে আমাদের স্লেভথিঙ্কিং নর্মিদের অবস্থা হয়েছে হেডলাইট পড়ে হরিণের চোখ স্তম্ভিত হয়ে যাওয়ার মত! আমরা গত ১০/১২ বছর যাবত বলে আসছি গ্যালাক্টিক ফেডারেশনের কথা আর এরা সবাই আমাদেরকে কনস্পিরেসি থিওরিস্ট বলে হাসাহাসি করতে করতে এখন হঠাৎ এই খবর দেখে ঠিক হজম করতে পারছে না।

তো আজকে আমরা বুঝতে পারলাম যে করোনা ভাইরাস প্যান্ডেমিক নকল, এলিয়েনরা পৃথিবীতে শুধু যে আছে তাইই না, এরা আমাদের গোবরমেমএবং ডীপ স্টেটকে কন্ট্রোল করে, আর তিন হল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে এলিয়েনদের যোগাযোগ আছে।
এখন আপনারা যারা জন্মগতভাবে স্লেভ থিঙ্কার (আমরা প্রায় সবাইই তাই) তারা "পমান চাই, পমান ডাও" বলে পায়ের ঘাম মাথায় করে ফেলবেন এটা এক্সপেক্টেড। এই প্রমানটাও ওই E=mc2 এর মতই। অর্থাৎ স্লেভথিঙ্কের বাইরে চিন্তা করতে শিখবেন যখন তখন আমার এই কথাগুলা সত্যি না মিথ্যা সেটা ভেরিফাই করার উপায়ও আপনি নিজেই বাতলাতে পারবেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন